নিরাপদ ও পর্যাপ্ত ঘুম শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে আধুনিক জীবনের চাপ এবং অনিয়মিত অভ্যাসের কারণে অনেকেই রাতে ভালোভাবে ঘুমোতে পারেন না। এই সমস্যাকে ইনসমনিয়া বা অনিদ্রা বলা হয়। একাধিক কারণে ঘুম কমে যেতে পারে, তবে বিশেষ কিছু ভিটামিনের অভাবও ঘুমের সমস্যার জন্য দায়ী হতে পারে।

- ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি : ঘুম কমে যাওয়ার সবচেয়ে বড় কারণগুলির মধ্যে অন্যতম হলো ভিটামিন ডি-এর অভাব। এই ভিটামিনটি শুধু হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখে না, বরং ঘুমের সমস্যার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি খেলে সুনিদ্রা হতে সাহায্য করে এবং স্লিপ অ্যাপনিয়া (ঘুমের মধ্যে শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা) দূর করতে সাহায্য করে। সূর্যালোকের মাধ্যমে এই ভিটামিন পাওয়ার পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছ, ডিমের কুসুম, ডেয়ারি খাবার ও ফলের রসে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
- ভিটামিন ই : ভিটামিন ই একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা কোষের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। এই ভিটামিনের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস ঘুমের সমস্যা কমাতে কার্যকরী হতে পারে। ভিটামিন ই-এর ভালো উৎস হিসেবে আমন্ড, চিনেবাদাম, হেজেলনাট, পালংশাক, ব্রকোলি ও টম্যাটো উল্লেখযোগ্য।
- ভিটামিন সি : ভিটামিন সি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা কার্ডিওভাসক্যুলার সুস্থতা, কোলাজেনের যোগান এবং হাড় ও দাঁতের সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি ঘুমের সমস্যা কমাতেও সাহায্য করে এবং স্লিপ অ্যাপনিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখে। পালংশাক, ফুলকপি, স্প্রাউট, সাইট্রাস ফল ভিটামিন সি-এর ভালো উৎস।
- ভিটামিন বি-৬ : ভিটামিন বি-৬ একাধিক শারীরিক সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এবং এর মধ্যে একটি হলো ইনসমনিয়া। এই ভিটামিনটি ঘুমের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে এবং রাতে ভালো ঘুম আসতে সাহায্য করে। কলা, গাজর, পালংশাক, আলু, ডিম, চিজ, মাছ, গোটা দানাশস্যে ভিটামিন বি-৬ পাওয়া যায়।
- ভিটামিন বি-১২ : ভিটামিন বি-১২ মস্তিষ্কের সুস্থতা বজায় রাখে এবং ইনসমনিয়া দূর করতে সাহায্য করে। এটি রাতে ভালোভাবে ঘুমোতে সাহায্য করে এবং এই ভিটামিনটি প্রধানত প্রাণিজ প্রোটিন ও ডেয়ারি খাবারে পাওয়া যায়।

এটি স্পষ্ট যে, ঘুমের সমস্যা যদি দীর্ঘমেয়াদী হয়ে যায়, তবে তা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এজন্য, অনিদ্রা সমস্যায় আক্রান্ত হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার পাশাপাশি ভিটামিনের ঘাটতি নিয়েও খেয়াল রাখতে হবে। নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে ঘুমের সমস্যা দূর করা সম্ভব।