গরমে অস্থির হয়ে ওঠা এখন প্রায় সবারই সমস্যা! ফ্যানের বাতাসে কোনো আরাম মেলে না, আবার এসির বিলেও মাপা যাচ্ছে না। কুলারের দামও অনেক বেশি! তবে, এই গরমে আপনার জন্য একটি চমকপ্রদ সমাধান নিয়ে এসেছি, যা শুধু আপনার গরম কমাবে না, বিদ্যুৎ বিলও খুব কম রাখবে। আর সেই সমাধানটি হল—মাটির কুলার (Mud Pot Air Cooler)!
কেন এই কুলারের জনপ্রিয়তা বাড়ছে?

গরমের দাপটে বিদ্যুৎ বিলের চিন্তা আমাদের প্রায়ই মাথায় ঘোরে। আর সেজন্যই এখন মানুষ সহজ, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব কিছু খুঁজে বের করছে। পুরনো দিনের মাটির পাত্রের ঠান্ডা রাখার গুণকে আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই মাটির কুলার। আর এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে!
বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু, চেন্নাই, ব্যাঙ্গালুরুতে এই কুলারের ব্যবহার বেশ পুরনো। তবে এখন দিল্লি, হায়দ্রাবাদ, কলকাতা এবং অন্যান্য শহরেও এর চাহিদা বেড়েছে। এর প্রধান কারণ, এতে নেই কোনও বিষাক্ত গ্যাস এবং বিদ্যুতের বিলও কম! শুধু একটি ছোট ফ্যান থাকলেই চলবে!
মাটির কুলার কীভাবে কাজ করে?
এই কুলারটি একটি ছিদ্রযুক্ত কাদামাটির পাত্র দিয়ে তৈরি, যার মধ্যে রাখা হয় জল। মাটির ছিদ্রপথে জল ধীরে ধীরে বাষ্পীভূত হয়ে আশেপাশের গরম বাতাস শোষণ করে ঠান্ডা করে। এর ফলে, যে বাতাস বাইরে বেরিয়ে আসে, তা হয় বরফের মতো ঠান্ডা।
পাত্রের উপরে একটি ছোট বৈদ্যুতিক ফ্যান থাকে, যা গরম বাতাসকে ভেতরে টেনে ঠান্ডা বাতাস বাইরে বের করে। চাইলে, পাত্রের গায়ে একটি ভেজা কাপড় লাগিয়ে দিলে ঠান্ডা আরও বেশি কনকনে হবে। বিশেষ করে ছোট রুমের জন্য এটি সিলিং ফ্যানের থেকেও বেশি কার্যকর!
খরচ কত পড়বে?
এখন প্রশ্ন আসবে, এর দাম কত? জানিয়ে রাখি, এই মাটির কুলারের দাম খুবই সস্তা। শুরু হয় মাত্র ২,৬০০ টাকায়, যা একক ফ্যান মডেল। ডবল ফ্যান মডেলটি কিনলে লাগবে ৩,৯০০ টাকা এবং বড় মডেলটির দাম ৬,০০০ টাকার মধ্যে। এতে বিদ্যুৎ খরচ হবে খুবই কম এবং ঘর থাকবে ঠান্ডা!
কিছু সীমাবদ্ধতা :
যতটা কার্যকর, ততটাই কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এই কুলার শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য বেশি কার্যকর। বাংলার অনেক জায়গায় আদ্রতা বেশি থাকে, তাই এখানে এটি সেভাবে কাজ নাও করতে পারে। তবে, যদি কুলারটি জানালার পাশে বা খোলা জায়গায় রাখা হয়, তবে এর কার্যকারিতা অনেক বেড়ে যায়। এসির মতো ঘর ঠান্ডা না হলেও, ভ্যাঁপসা গরমে দারুণ আরাম পাবেন।
কোথায় পাওয়া যাবে এই কুলার?

এই বিশেষ কুলার দক্ষিণ ভারতে সহজেই পাওয়া গেলেও, বাংলায় এখনো তেমন জনপ্রিয় হয়নি। তবে, আপনি সহজেই অনলাইনে এই কুলারটি কিনতে পারেন। Amazon, Flipkart কিংবা অন্যান্য ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে সার্চ করে এটি পেতে পারেন। এছাড়াও, কিছু ইউটিউব ভিডিও দেখে নিজেরাও বানিয়ে ফেলতে পারেন এই কুলার।
গরমের মওসুমে এসির জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করার আগেই, মাটির কুলারটি আপনার জন্য হতে পারে এক চমকপ্রদ বিকল্প। কম খরচে পরিবেশবান্ধব এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী—এটা সত্যিই এক অলৌকিক উপায়! তো, আর অপেক্ষা কেন? আপনি কী চেষ্টা করবেন না এই মাটির কুলার দিয়ে গরম থেকে মুক্তি পাওয়ার সহজ পথ?