ফ্রিজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ। খাবার সতেজ রাখা থেকে শুরু করে পানীয় ঠান্ডা করা—এই যন্ত্র ছাড়া যেন আধুনিক জীবনের কল্পনাই অসম্ভব। কিন্তু জানেন কি, এই নির্ভরযোগ্য যন্ত্রটি যদি সঠিকভাবে ব্যবহার না করা হয়, তবে সেটিই হয়ে উঠতে পারে মারাত্মক বিপদের কারণ?
সম্প্রতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা গেছে, রেফ্রিজারেটর বিস্ফোরণের ঘটনা। বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠেছে বাড়ি! ফ্রিজের কম্প্রেসর ফেটে গিয়ে ঘটছে এই দুর্ঘটনা।
চলুন জেনে নিই, ফ্রিজ বিস্ফোরণের পেছনে কী কী কারণ থাকতে পারে, এবং কীভাবে এড়ানো যায় এমন বিপদ—
১. অতিরিক্ত বোঝাই

অনেকেই ফ্রিজে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাবার ও জিনিসপত্র ভরে রাখেন। এতে কুলিং সিস্টেমে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এই চাপের ফলে কম্প্রেসার ওভারলোড হয়ে যায় এবং এক পর্যায়ে ফেটে যেতে পারে।
২. গরম খাবার রাখা
ফ্রিজে সরাসরি গরম খাবার বা বাসন রাখলে ফ্রিজের তাপমাত্রা হঠাৎ বেড়ে যায়। এতে কম্প্রেসারকে বেশি কাজ করতে হয়, ফলে তা দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। নিয়মিত এমনটা হলে বিস্ফোরণের আশঙ্কা থাকে।
৩. গ্যাস লিক হওয়া
রেফ্রিজারেটরে ঠান্ডা রাখার জন্য ব্যবহৃত হয় রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস। যদি এই গ্যাস লিক হয় এবং সময়মতো ঠিক করা না হয়, তাহলে এটি বড় বিপদের কারণ হতে পারে। গ্যাসের সংস্পর্শে স্পার্ক বা আগুন লাগলে ফ্রিজ বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।
৪. খোলা পাত্রে জল রাখা
ফ্রিজে খোলা পাত্রে জল বা তরল রাখলে ভিতরে আর্দ্রতা বেড়ে যায়। এর ফলে বরফ জমে কুলিং প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে, কম্প্রেসারকে অতিরিক্ত চাপ নিতে হয়, যা ক্ষতির দিকে নিয়ে যায়।
৫. পুরনো ও ত্রুটিপূর্ণ রেফ্রিজারেটর
অনেক সময় বহু বছর ধরে পুরনো ফ্রিজ ব্যবহার করা হয় বা মাঝে মাঝে সমস্যা হলেও তাতে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। পুরনো ও ত্রুটিপূর্ণ ফ্রিজে বিস্ফোরণের আশঙ্কা বেশি।

কী করবেন নিরাপদ থাকার জন্য?
- রেফ্রিজারেটর সময়মতো সার্ভিস করান।
- প্রয়োজনের চেয়ে বেশি জিনিস দিয়ে ফ্রিজ ভর্তি করবেন না।
- গরম খাবার ঠান্ডা না করে ফ্রিজে রাখবেন না।
- গ্যাস লিক হলে সঙ্গে সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ার ডেকে ঠিক করান।
- ফ্রিজের ভিতরের যন্ত্রাংশ ঠিক আছে কিনা, মাঝে মাঝে পরীক্ষা করান।
খুব পুরনো ফ্রিজ থাকলে তা বদলে নতুন মডেল কিনুন।
রেফ্রিজারেটর একটি দরকারি যন্ত্র হলেও, অবহেলা করলে এটি বিপদ ডেকে আনতে পারে। সামান্য সতর্কতা আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করতে পারে। সঠিক ব্যবহার ও নিয়মিত যত্নেই লুকিয়ে রয়েছে নিরাপত্তা।
আপনার ফ্রিজ কি বহু বছরের পুরনো? তাহলে গরম পড়ার আগেই একবার পরীক্ষা করিয়ে নিন!