বিংশ শতাব্দীর একজন অসাধারণ ভারতীয় বাঙালি ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার এবং শিশুসাহিত্যিক ছিলেন আশাপূর্ণা দেবী। তাঁর রচিত প্রথম প্রতিশ্রুতি- সুবর্ণলতা -বকুলকথা উপন্যাসত্রয়ী বিশ শতকের বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ রচনাগুলির মধ্যে অন্যতম বলে বিবেচিত হয়। তাঁর রচনার ঝুলি বহু উপন্যাস, ছোটগল্প ও গ্রন্থাবলীতে ভরা, তাই তিনি সম্মানিত হয়েছিলেন বহু সামরিক তথা বেসামরিক পুরস্কারেও। আজ এই অসাধারণ সাহিত্য রচয়িতার জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরবো এই জীবনীর মাধ্যমে।
আশাপূর্ণা দেবীর জন্ম, Ashapurna Devi’s birth
১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দের ৮ জানুয়ারি আশাপূর্ণা দেবীর জন্ম হয় অর্থাৎ বাংলা ১৩১৫ সালের ২৪ পৌষ শুক্রবার সকালে। তিনি উত্তর কলকাতায় মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন।
![আশাপূর্ণা দেবীর জন্ম](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%86%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3%E0%A6%BE-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%AE-1.png)
আশাপূর্ণা দেবীর আসল নাম কি?
আশাপূর্ণা দেবীর জন্মের নাম ছিল আশা পূর্ণা দেবী (গুপ্তা)।
আশাপূর্ণা দেবীর পিতার নাম কি ? Ashapurna Devi’s father’s name
আশাপূর্ণা দেবীর পিতার নাম হরেন্দ্র নাথ গুপ্ত, যিনি পেশায় ছিলেন একজন আর্টিস্ট ; তিনি সেযুগের জনপ্রিয় বাংলা পত্রিকাগুলিতে ছবি আঁকতেন। মূলত সাহিত্যপাঠই ছিল তাঁর জীবনের একমাত্র ‘পরমার্থ’। তিনি কট্টর ব্রিটিশ-বিদ্বেষী স্বদেশী ছিলেন।
![আশাপূর্ণা দেবীর জন্মের নাম ছিল আশা পূর্ণা দেবী](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%86%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3%E0%A6%BE-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A6%BE-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AE.png)
আশাপূর্ণা দেবীর মাতার নাম কি?
আশাপূর্ণা দেবীর মায়ের নাম হল সরলাসুন্দরী দেবী । রাজভক্তি ও রক্ষণশীলতার বিপরীতে অবস্থান করতেন লেখিকার মা । রাজনৈতিক আদর্শে কট্টর ব্রিটিশ-বিদ্বেষী স্বদেশী ছিলেন তিনি।
আশাপূর্ণা দেবীর আদিনিবাস, Ancestral home of ashapurna Devi
গুপ্ত-পরিবারের অর্থাৎ আশাপূর্ণা দেবীর পিতার আদিনিবাস ছিল হুগলি জেলার বেগমপুরে। তবে আশাপূর্ণা দেবীর জীবনের সাথে উক্ত অঞ্চলটির কোনও প্রত্যক্ষ যোগ ছিল না। এর কারণ তাঁর ছোটোবেলা কেটেছে উত্তর কলকাতাতেই। তিনি ঠাকুরমা নিস্তারিনী দেবীর সাথে পাঁচ পুত্রের একান্নবর্তী সংসারে লালিত পালিত।
![আশাপূর্ণা দেবীর আদিনিবাস](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%86%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3%E0%A6%BE-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%86%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8-1.png)
পরবর্তী সময়ে হরেন্দ্রনাথ যখন তৎকালীন আপার সার্কুলার রোডের (বর্তমান আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় রোড) নিজস্ব বাসভবন তৈরি করেন তখন আশাপূর্ণার বয়স মাত্র সাড়ে পাঁচ বছর। কিন্তু ঠাকুমার সাথে বাল্যকালের বছরগুলো লেখিকার মনে গভীর ছাপ রেখে যায়। তাই হয়তো পরবর্তীকালে সাহিত্যেও তিনি নানা ভাবে ‘দেহে ও মনে অসম্ভব শক্তিমতী’ নিজের ঠাকুরমার ছবি এঁকেছিলেন।
আশাপূর্ণা দেবীর শৈশবকাল ও আশাপূর্ণা দেবীর শিক্ষাজীবন, Ashapurna Devi’s childhood and education
![আশাপূর্ণা দেবীর শৈশবকাল](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%86%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3%E0%A6%BE-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%B6%E0%A7%88%E0%A6%B6%E0%A6%AC%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B2-1.png)
ঠাকুরমার কঠোর অনুশাসনে প্রথাগত শিক্ষার সৌভাগ্য আশাপূর্ণা দেবীর হয়নি। পরবর্তী সময়ে নিজের শৈশবের এক স্মৃতিচারণায় এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, “…ইস্কুলে পড়লেই যে মেয়েরা… বাচাল হয়ে উঠবে, এ তথ্য আর কেউ না জানুক আমাদের ঠাকুমা ভালোভাবেই জানতেন, এবং তাঁর মাতৃভক্ত পুত্রদের পক্ষে ওই জানার বিরুদ্ধে কিছু করার শক্তি ছিল না।” কিন্তু এই বলে এমনটা নয় যে তিনি পড়াশুনা জানতেন না। শৈশবের এই প্রতিকূল পরিবেশেও মাত্র আড়াই বছরের মধ্যে লেখিকা নিজের দাদাদের পড়া শুনে শুনে পড়তে শিখে গিয়েছিলেন। পাশাপাশি আয়ত্ত করেছিলেন বর্ণপরিচয়ও।
তবে মা সরলাসুন্দরী একনিষ্ঠ সাহিত্য-পাঠিকা ছিলেন এবং সেই সাহিত্যপ্রীতি তিনি নিজের কন্যাদের মধ্যে সঞ্চারিত করার চেষ্টায় কখনো ত্রুটি রাখেননি। তৎকালীন সময়ে প্রকাশিত সাধনা, প্রবাসী, ভারতবর্ষ, সবুজপত্র, বঙ্গদর্শন, বসুমতী, সাহিত্য, বালক, শিশুসাথী, সন্দেশ প্রভৃতি ১৬-১৭টি পত্রিকা এবং দৈনিক পত্রিকা হিতবাদী আসতো বাড়িতে, সেই সবগুলো নিজেও পড়তেন এবং কন্যাকেও পড়তে বলতেন।
![আশাপূর্ণা দেবীর শিক্ষাজীবন](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%86%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3%E0%A6%BE-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%80%E0%A6%AC%E0%A6%A8-1.png)
অন্যদিকে সরলাসুন্দরী স্বনামধন্য বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ, জ্ঞানপ্রকাশ লাইব্রেরি ও চৈতন্য লাইব্রেরির সদস্য ছিলেন, ফলে বাড়িতে সেই সময়কার প্রায় সকল প্রসিদ্ধ গ্রন্থের সমৃদ্ধ ভাণ্ডারও ছিল। এমন পরিবেশে পড়াশুনা হবে না কি করে! মাত্র ছয় বছর বয়স থেকেই আশাপূর্ণা দেবী পাঠ্য ও অপাঠ্য নির্বিশেষে পুরোদমে পড়াশোনা শুরু করে দেন। পরবর্তী সময়ে বাল্যকাল সম্পর্কে তিনি বলেন, “হিসেব মতো আমার ছেলেবেলাটা কেটেছে, সংসার ঊর্ধ্বের একটি স্বর্গীয় জগতে। বই পড়াই ছিল দৈনিক জীবনের আসল কাজ।”
আশাপূর্ণা দেবী কেন বিখ্যাত? Why is ashapurna Devi famous?
আশাপূর্ণা দেবী সাহিত্যিক হিসেবে দেড় হাজার ছোটোগল্প ও আড়াইশো-র বেশি উপন্যাসের রচয়িতা। এছাড়াও তিনি ভূষিত হয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডক্টরেট ডিগ্রিতে। সুখ্যাত লেখিকা আশাপূর্ণা দেবী সম্মানিত হয়েছিলেন জ্ঞানপীঠ পুরস্কার সহ দেশের একাধিক সাহিত্য পুরস্কার, অসামরিক নাগরিক সম্মানে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ সম্মান রবীন্দ্র পুরস্কারও প্রদান করেছিল।
![আশাপূর্ণা দেবী কেন বিখ্যাত?](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%86%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3%E0%A6%BE-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A7%80-%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%96%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A4-1.png)
আশাপূর্ণা দেবীর সাহিত্যচর্চার সূত্রপাত, Beginning of literary practice
আশাপূর্ণা দেবীর সমগ্র সাহিত্যসৃষ্টিকে প্রধানত তিনটি পর্বে ভাগ করা যায়— ১ শিশু- কিশোর সাহিত্য, ২) ছোটোগল্প ও ৩) উপন্যাস। তাঁর সাহিত্যচর্চার সূত্রপাত ঘটে ১৯২২ সাল থেকে। তখন তাঁর বয়স মাত্র সাড়ে তেরো কিংবা চোদ্দো বছর। তিনি ‘শিশুসাথী ‘ পত্রিকায় গোপনে ”বাইরের ডাক” নামে তাঁর লেখা একটি কবিতা পাঠান , সেই কবিতা প্রকাশিত হবার পর লেখিকার প্রতিভার বিচ্ছুরণ হয়। তাঁর লেখা প্রথম গল্পের নাম ‘পাশাপাশি’।
উক্ত গল্পটি ছোটোদের জন্য লেখা হয়েছিল এবং এটিও শিশুসাথী পত্রিকায় ছাপা হয়। ক্রমে তিনি লেখার কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। ১৯২২ থেকে ১৯৩৬ সাল অবধি বড়োদের জন্য লেখা স্থগিত রাখেন আশাপূর্ণা দেবী। গুরুজনদের মনোভাব নিয়ে লেখিকার মনে প্রবল দ্বিধা ছিল। কিন্তু শেষে সকল দ্বিধা দ্বন্দ্ব সরিয়ে তিনি ‘পত্নী ও প্রেয়সী’ গল্পটি লিখলেন।
এটিই ছিল বড়োদের জন্য লেখা তাঁর প্রথম গল্প। তারপর ১৯৩৮ সালে ছোটোদের জন্য প্রকাশিত হয় তাঁর লেখা গল্প সংকলন। তারপর ১৯৪০ সালে বড়োদের জন্য ছোটোগল্পের সংকলন প্রকাশিত হয়, যার নাম ছিল ‘জল আর আগুন’।
![আশাপূর্ণা দেবীর সাহিত্যচর্চার সূত্রপাত](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%86%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3%E0%A6%BE-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A7%80-%E0%A6%93-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%9A%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%9A%E0%A6%BE-1.png)
আশাপূর্ণা দেবীর প্রথম উপন্যাসের নাম কি? What is the first novel of Ashapurna Devi?
আশাপূর্ণা দেবীর লেখা প্রথম উপন্যাস হল ‘প্রেমও প্রয়োজন, যা তিনি মূলত বড়োদের জন্য লিখেছিলেন। উক্ত উপন্যাসের প্রকাশকাল ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দ। আশাপূর্ণা দেবীর অন্যান্য কিছু উপন্যাস হল- ‘মিত্তির বাড়ি’, ‘অগ্নিপরীক্ষা’, ‘কল্যাণ’, ‘অতিক্রান্ত’, ‘উন্মোচন’, ‘নেপথ্য নায়িকা’, ‘যোগবিয়োগ’, ‘নবজন্ম’, ‘উত্তরলিপি’, ‘সমুদ্রসাথী’, ‘জীবনস্বাদ’, লঘু ত্রিবাদী ইত্যাদি।
![আশাপূর্ণা দেবীর প্রথম উপন্যাসের নাম](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%86%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3%E0%A6%BE-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%96%E0%A6%BE-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A5%E0%A6%AE-%E0%A6%89%E0%A6%AA%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B8-%E0%A6%B9%E0%A6%B2-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%AE%E0%A6%93-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%8B%E0%A6%9C%E0%A6%A8-1.png)
সুবর্ণলতা কাহিনী কি?
সুবর্ণলতা গোঁড়া ব্যক্তি এবং মানসিকতার মধ্যে তার স্বাধীনতা, পরিচয় এবং সম্মান খুঁজে পেতে একজন মহিলার একাকী যাত্রার গল্প বলে। এটি লেখকের নারী অধিকারের ট্রিলজির একটি অংশ।
![সুবর্ণলতা](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3%E0%A6%B2%E0%A6%A4%E0%A6%BE-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%80-%E0%A6%95%E0%A6%BF-1.png)
আশাপূর্ণা দেবী কত সালে জ্ঞানপীঠ পুরস্কার পেয়েছিলেন? In which year did Ashapurna Devi get the Jnanpeeth award?
আশাপূর্ণা দেবী ১৯৭৬ সালে, ভারত সরকার কর্তৃক জ্ঞানপীঠ পুরস্কার এবং পদ্মশ্রী পুরস্কার লাভ করেন। বাঙালি ঔপন্যাসিক আশাপূর্ণা দেবী ছিলেন উক্ত পুরষ্কার জয়ী প্রথম মহিলা। তাঁর লেখা উপন্যাস ‘প্রথম প্রতিশ্রুতি’ এর জন্য তিনি পুরস্কারটি লাভ করেছিলেন। উক্ত উপন্যাসটি ছিল নারীবাদী উপন্যাস, যা ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত হয়।
![আশাপূর্ণা দেবী কত সালে জ্ঞানপীঠ পুরস্কার পেয়েছিলেন](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%86%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3%E0%A6%BE-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A7%80-%E0%A7%A7%E0%A7%AF%E0%A7%AD%E0%A7%AC-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%A4-%E0%A6%B8%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%83%E0%A6%95-%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%AA%E0%A7%80%E0%A6%A0-%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%8F%E0%A6%AC%E0%A6%82-%E0%A6%AA%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%80-%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AD-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A5%A4.png)
আশাপূর্ণা দেবীর বৈবাহিক জীবন, Married life of Ashapurna Devi
আশাপূর্ণা দেবী ১৯২৪ সালে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হন। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর ৮ মাস। কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা কালিদাস গুপ্তের সাথে তাঁর বিবাহ সম্পন্ন হয়। এই দম্পতি সাংসারিক জীবনে তিন সন্তানের জন্ম দেন। তাদের একমাত্র কন্যার নাম পুষ্পরেনু এবং দুই পুত্রের নাম প্রশান্ত ও সুশান্ত। বিয়ের দুই বছর পর থেকেই আশাপূর্ণা দেবী লেখালেখির সাথে নিজেকে নতুন উদ্যমে জড়িয়ে ফেলেন। সেই থেকেই শুরু হয় তাঁর রচনাবলীর ধারা।
![আশাপূর্ণা দেবীর বৈবাহিক জীবন](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%86%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3%E0%A6%BE-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A7%80-%E0%A7%A7%E0%A7%AF%E0%A7%A8%E0%A7%AA-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A7%88%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%95-%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%86%E0%A6%AC%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7-%E0%A6%B9%E0%A6%A8%E0%A5%A4-1.png)
আশাপূর্ণা দেবী রচিত গ্রন্থাবলি, Books written by Ashapurna Devi
- প্রথম প্রতিশ্রুতি
- সুবর্ণলতা
- বকুলকথা
- নিলয়-নিবাস
- দিব্যহাসিনীর দিনলিপি
- সিঁড়ি ভাঙা অঙ্ক
- চিত্রকল্প
- দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তরে
- লীলা চিরন্তন
- চাবি বন্ধ সিন্দুক
- আর এক আশাপূর্ণা
- এই তো সেদিন
- অলয় আদিত্যের ইচ্ছাপত্র রহস্য
- গজ উকিলের হত্যা রহস্য
- ভূতুরে কুকুর
- রাজকুমারের পোশাকে
- মনের মুখ
- মধ্যে সমুদ্র
- যাচাই
- ভুল ট্রেনে উঠে
- নিমিত্তমাত্র
- কখনো কাছে কখনো দূরে
- নষ্টকোষ্ঠী
- মজারু মামা
- ষড়যন্ত্রের নায়ক
- চশমা পাল্টে যায়
- বিশ্বাস-অবিশ্বাস
- কাঁটাপুকুর লেনের কমলা
- নেপথ্য নায়িকা
- জনম্ জনম্কে সাথী
- বালুচরী
- শৃঙ্খলিতা
- সানগ্লাস
- শুক্তিসাগর
- সুখের চাবি
- সুয়োরানীর সাধ
- সুরভি স্বপ্ন
- যার বদলে যা
- বালির নিচে ঢেউ
- বলয়গ্রাস
- যোগবিয়োগ
- নির্জন পৃথিবী
- ছাড়পত্র
- প্রথম লগ্ন
- সমুদ্র নীল আকাশ নীল
- উত্তরলিপি
- তিনছন্দ
- মুখররাত্রি
- আলোর স্বাক্ষর
- জীবন স্বাদ
- আর এক ঝড়
- নদী দিক হারা
- একটি সন্ধ্যা একটি সকাল
- উত্তরণ
- জহুরী
- মায়াজাল
- প্রেম ও প্রয়োজন
- নবজন্ম
- শশীবাবুর সংসার
- উন্মোচন
- বহিরঙ্গ
- বেগবতী
- আবহ সঙ্গীত
![আশাপূর্ণা দেবী রচিত গ্রন্থাবলি](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%86%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3%E0%A6%BE-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A7%80-%E0%A6%B0%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A6%A4-%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%B2%E0%A6%BF-1.png)
এছাড়াও লেখিকার রচিত উল্লেখযোগ্য কিছু ছোটগল্প হল : পাতাচাঁপা, সর্ষে ও ভূত, ডেইলি প্যাসেজ্ঞার, কামধেনু, শুনে পুন্যবান, অভিনেত্রী, ক্যাকটাস্ প্রভৃতি।
লেখিকার রচিত কয়েকটি বিখ্যাত গল্প হল- ‘উদ্বাস্তু, ‘পাকাঘর’, ‘বিস্ফোরণ’, ‘কারও পৌষ মাস’, ‘পদাতিক’, ‘স্নেহ, ‘অঙ্গার’, ‘আদর্শবাদ’, ‘মহুয়া’, ‘মাদল’, ‘ইস্পাতের পাত’, ‘ঘুষ’, ‘স্মৃতির অতলে’, ‘ক্যাকটাস’, ‘অজানিত’, ‘অপরাধ’, ‘অবিনশ্বর’, ‘সমাধান’, ‘স্বপ্নভঙ্গ’, ‘হাতিয়ার’, ‘বৈরাগ্যের রং, ইজ্জত’ ইত্যাদি।
আশাপূর্ণা দেবীর রচনার ঝুলিতে উপন্যাসের সংখ্যা প্রায় দুশোর কাছাকাছি। এ ছাড়াও তিনি ছোটোদের জন্য ৪৭টি বই লিখেছেন, এছাড়াও অন্যান্য সংকলনগ্রন্থ ২৫টি এবং অনুবাদের সংখ্যা ৬৩টি। তাছাড়া তাঁর বেশ কিছু রচনার ওপর ভিত্তি করে প্রায় ২৪ টি চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে।
![উল্লেখযোগ্য কিছু ছোটগল্প](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%86%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3%E0%A6%BE-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A7%80-%E0%A6%B0%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A6%A4-%E0%A6%9B%E0%A7%8B%E0%A6%9F%E0%A7%8B%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%AC%E0%A6%87-1.png)
আশাপূর্ণা দেবীর মৃত্যু, Death of ashapurna Devi
আশাপূর্ণা দেবী ইহলোকের মায়া ত্যাগ করেন ১৯৯৫ সালের ১৩ই জুলাই।
![আশাপূর্ণা দেবীর মৃত্যু](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%86%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3%E0%A6%BE-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A7%81-1.png)
আশাপূর্ণা দেবীর পুরস্কার ও সম্মাননা প্রাপ্তি, awards and recognition
আশাপূর্ণা দেবী নিজের অসামান্য সাহিত্যকীর্তির জন্য বহু পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল :
- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের লীলা পুরস্কার (১৯৫৪)
- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুবনমোহিনী দাসী স্বর্ণপদক (১৯৬৬)
- বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের হরনাথ ঘোষ পদক (১৯৮৮)
- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগত্তারিণী স্বর্ণপদক (১৯৬৩)
- ভারত সরকারের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী (১৯৭৬)
- জব্বলপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডি.লিট (১৯৮৩)
- রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডি.লিট (১৯৮৭)
- বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডি.লিট (১৯৮৮)
- যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডি.লিট (১৯৯০)
- বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশিকোত্তম (১৯৮৯)
![আশাপূর্ণা দেবী নিজের অসামান্য সাহিত্যকীর্তির জন্য বহু পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%86%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3%E0%A6%BE-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A7%80-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%85%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%95%E0%A7%80%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A7%81-%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%93-%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC-%E0%A6%AD%E0%A7%82%E0%A6%B7%E0%A6%BF%E0%A6%A4-%E0%A6%B9%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%E0%A6%9B%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A5%A4-1.png)
পরিশেষে, To conclude
আশাপূর্ণা দেবী ছিলেন একজন বিশিষ্ট ঔপন্যাসিক এবং বাংলা ভাষার কবি। বিশেষত সাধারণ মেয়েদের জীবনযাপন ও মনস্তত্ত্বের চিত্রই ছিল তার রচনার মূল উপজীব্য। বাংলা ছাড়া দ্বিতীয় কোনও ভাষায় জ্ঞান তাঁর ছিল না, কারণ তিনি বঞ্চিত হয়েছিলেন প্রথাগত শিক্ষালাভে। কিন্তু এই প্রতিকূলতা তাঁর কলমকে থামিয়ে রাখতে পারেনি, গভীর অন্তর্দৃষ্টি ও পর্যবেক্ষণশক্তি তাঁকে দান করে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখিকার আসন। নিজের লেখার মাধ্যমে আজও তিনি আমাদের মনে বিরাজমান।
Frequently Asked Questions
১৯০৯ খ্রি : ৮ ই জানুয়ারি ।
হরেন্দ্রনাথ গুপ্ত ও সরলা সুন্দরী দেবী ।
বইয়ের ডাক ।
১৯২২ সালে।
ছোট ঠাকুরদার কাশীযাত্রা ।
প্রেম ও প্রয়োজন
1976 সালে।
উপন্যাস প্রথম প্রতিশ্রুতি (দ্য ফার্স্ট প্রমিজ) এর জন্য। প্রথম প্রতিশ্রুতি উপন্যাসটি ছিল নারীবাদী উপন্যাস, যা ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত হয়।