মেরিলিন মনরোর জীবনী, Biography of Marilyn Monroe in Bengali 

মেরিলিন মনরোর জীবনী

মেরিলিন মনরো ছিলেন একজন মার্কিন অভিনেত্রী, মডেল তথা গায়ক। তিনি “স্বর্ণকেশী বোম্বশেল” চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বিখ্যাত। তিনি ১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকে বাণিজ্যিকভাবে সফল উল্লেখযোগ্য সংখ্যক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি একজন জনপ্রিয় সংস্কৃতি আইকন হিসাবে পরিচিত।

প্রাথমিক জীবন, Early life

মেরিলিন মনরোর আসল নাম ছিল নর্মা জিন মর্টেনসন; তিনি ১৯২৬ সালের ১ জুন জন্মগ্রহণ করেন। মানসিক ভারসাম্যহীন মায়ের গর্ভে পিতৃপরিচয়হীন অবস্থায় জন্ম নেন তিনি। ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসের এক হাসপাতালে জন্ম হয় তাঁর। মা গ্লাডিস পার্ল বেকারের তৃতীয় সন্তান মনরো। মনরোর জন্ম হওয়ার পর থেকে গ্লাডিসের মানসিক অবস্থা ক্রমে অবনতির দিকে চলে যায়।

তিনি বেশ কয়েকবার মেয়েকে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলারও চেষ্টা করেন। এসব কারণে তাকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং ছোট্ট মনরোকে এতিমখানায় রেখে আসা হয়। দারিদ্রতা ও অভিভাবকহীনতার কারণে তাঁর আশ্রয় জুটে এতিমখানায়। পরবর্তী সময়ে নিজের জীবনে নানা উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে নিজেকে নতুনভাবে বিশ্বের সম্মুখে তুলে ধরেন মেরিলিন। ছেলেবেলার অসহয়ত্বই হয়তো সাফল্যের পথে তাঁর মনোবল হয়ে দাঁড়ায়। 

মেরিলিন মনরোর আসল নাম ছিল নর্মা জিন মর্টেনসন

ব্যক্তিগত জীবন, Personal life  

মেরিলিন মনরোর শৈশব জীবন অনেক কষ্টে কেটেছিল। কঠোর অনুশাসনের কারণে অনাথ আশ্রমে তাঁর জীবন যেন আরো দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। তাঁর বয়স ১২ বছর তখন তিনি এক পালক পিতা-মাতার গৃহে আশ্রয় পান, সেই সুবাদে মেরিলিন চাইল্ড হোমের অনুশাসন থেকে মুক্তি পান। নতুন বাড়িতে পূর্ণ স্বাধীনতায় জীবনযাপন শুরু করেন তিনি।

কিন্তু একসময় তাঁর এই পালক পরিবারেও অভাব দেখা দেয়, যার ফলে মনরোর দেখাশোনা করা তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। পালক মাতা পিতা তাঁকে পুনরায় আশ্রমে পাঠানোর মনঃস্থির করেন। কিন্তু পুনরায় আশ্রমে যাওয়ার ভয়ে মনরো প্রতিবেশী জেমস ডগোথি সাথে পালিয়ে বিয়ে করে নেন। জেমস তখন এয়ার ক্রাফট প্লান্টে কর্মরত ছিলেন। 

মেরিলিন মনরোর শৈশব জীবন অনেক কষ্টে কেটেছিল

কর্মজীবনের প্রথমার্ধ, First half of career

বিয়ের পর স্বামী জেমসের সহায়তায় মেরিলিন মনরো এরোপ্লেন পার্টস কোম্পানীতে একজন শ্রমিক হিসেবে কাজ পান। এর কিছুদিনের মধ্যে রূপের লাবণ্য ও শরীরের মোহনীয় অভিব্যক্তির জন্য সেখানকার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসেন তিনি। পরবর্তীতে এক কোম্পানীর শো-গার্ল হিসেবে মডেলিংয় করার সুযোগ পান মেরিলিন।

মডেলিংয়ের কাজের মাধ্যমেই ডেভিড কনোভার সাথে তাঁর পরিচয় হয়। মডেলিংয়ের সূত্রে মেরিলিন ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলেন ডেভিডের সঙ্গে। এরপর তিনি বেশ কিছু পত্রিকায় ছবি ছাপানর প্রস্তাব পান এবং তাঁর সৌন্দর্যের আলোড়নে বড় মাপের কিছু এজেন্সি থেকে মেরিলিনের কাছে মডেলিংয়ের প্রস্তাব আসতে শুরু হয়। কিন্তু গ্ল্যামার জগতে এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা হয়ে ওঠেন স্বামী জেমস। সংসারিক পরিস্থিতি এমন হয়ে যায় যে, “সংসার করতে হলে মডেলিং ছাড়তে হবে”। নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা ভেবে মেরিলিন তখন জেমসের সাথে সংসার জীবনের ইতি টানেন। 

কর্মজীবনে সফলতা, Success in career 

মেরিলিন মনরোর ভাগ্যের সুপ্রসন্নতায় মডেল হিসেবে শুরু ক্যারিয়ার। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি নিজেকে মার্কিন অভিনেত্রী, মডেল এবং গায়িকা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। চরম দুর্ভাগ্য নিয়ে জন্ম হলেও বিধাতা তাঁকে দু’হাত ভরে সৌন্দর্য দিয়েছিলেন। ১৯৪৬ সালে অভিনয় জগতে প্রথমবারের জন্য পা রাখেন মেরিলিন মনরো। সেই থেকেই নর্মা জীন বেকার নাম পরিবর্তন করে নিজের নতুন নাম রাখেন মেরিলিন মনরো। বদলে নিয়েছিলেন নিজের বাহ্যিক রূপও।

বাদামী চুলের রঙ রূপান্তরিত হল সোনালী আভায়, পরে এই স্বর্ণালী কেশই দর্শকদের কাছে অন্যদের তুলনায় দৃষ্টিনন্দন করে তোলে তাঁকে। টুয়েন্টিথ সেঞ্চুরি ফক্স স্টুডিও ১৯৫০ সালে ‘অল অ্যাবাউট ইভ’ চলচিত্রের জন্য অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ করেছিল। উক্ত সিনেমায় নিজের লাস্যময়ী অভিনয়ের মাধ্যমে রাতারাতিই তিনি তারকা হিসেবে পরিণত হন।

মেরিলিন মনরোর ভাগ্যের সুপ্রসন্নতায় মডেল হিসেবে শুরু ক্যারিয়ার

এরপরের দুই বছরে তিনি বেশ কিছু সাড়া জাগানো চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান, সেগুলি হল : রাইট ক্রস (১৯৫১), হোম টাউন স্টোরি (১৯৫১), ক্ল্যাশ বাই নাইট (১৯৫২), উই আর নট ম্যারিড (১৯৫২), নায়াগ্রা (১৯৫৩), জেন্টলমেন প্রেফার ব্লন্ডিস (১৯৫৩), হাউ টু মেরি এ মিলিয়নেয়ার (১৯৫৩) প্রভৃতি। বড় পর্দায় খোলামেলা পোশাকের কারণে সমালোচনার ঝড় তুলেছিলেন এই লাস্যময়ী অভিনেত্রী, অন্যদিকে লাখো তরুণের হৃদয়ের রানী হয়ে ওঠেন তিনি।

‘জেন্টলমেন প্রেফার ব্লন্ডিস‘ সিনেমার অভিনয়ের জন্য বিপুলভাবে আলোচিত হন মেরিলিন মনরো। উক্ত চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে সর্বস্তরের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেছিলেন তিনি। এরপর ‘হাউ টু মেরি এ মিলিয়নেয়ার’ নামক সিনেমাটিও বক্স অফিসে ভালো সাড়া ফেলেচিল। সে বছরেই খ্যাতির শীর্ষে অবস্থান করেন মনরো।

দ্বিতীয় বিবাহ, Second marriage  

মেরিলিন মনরো ১৯৫৪ সালের ১৪ জানুয়ারি দীর্ঘদিনের বন্ধু ডি মিয়াগোর সাথে দ্বিতীয়বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর কোরিয়া চলে যান তিনি এবং সেখানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে, যা তাঁকে জনপ্রিয় করে তোলে গায়িকা হিসেবেও।

মেরিলিন মনরো ১৯৫৪ সালের ১৪ জানুয়ারি দীর্ঘদিনের বন্ধু ডি মিয়াগোর সাথে দ্বিতীয়বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন

বাতাসে ওড়া স্কার্টের একটি দৃশ্য রেকর্ড, Marilyn Monroe’s viral clip 

 ১৯৫৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মেরিলিন মনরো ‘ফটোপ্লে অ্যাওয়ার্ড’ এর পক্ষ থেকে সেরা অভিনেত্রীর পুরষ্কার লাভ করেন। এর কিছু সময় পরেই ম্যানহাটনের একটি সাবওয়েতে ‘দ্য সেভেন ইয়ার ইচ‘ সিনেমার জন্য তাঁর বিখ্যাত বাতাসে ওড়া স্কার্টের দৃশ্য রেকর্ড করা হয়। প্রায় দুই শতাধিক দর্শক মনরোর সেই দৃশ্য বেশ উপভোগ করছিল শুটিংয়ের জায়গায়। উক্ত ছবি পরবর্তীতে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। তবে এই দৃশ্যের কারণে মেরিলিনের অভিনয় করা নিয়ে বিরক্ত হন স্বামী জো ডিমাগিও। এর থেকে শুরু হয় সংসারে অশান্তি, শেষমেষ ৯ মাসের মধ্যেই তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়।

বাতাসে ওড়া স্কার্টের একটি দৃশ্য রেকর্ড

তৃতীয়বারের বৈবাহিক সম্পর্ক, Third marriage

দ্বিতীয় বার ডিভোর্স হওয়ার পর বেশ কিছুদিন নিজেকে অভিনয় জগত থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন মেরিলিন মনরো। অভিনয়ের পরিবর্তে বিভিন্ন কর্মশালায় নিজেকে ব্যস্ত রাখেন তিনি। সেই একাকীত্বের সময়ে তাঁর জীবনে আসেন চিত্রনাট্যকার আর্থার মিলার। অল্প সময়ের মধ্যেই বেশ ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে তাদের মধ্যে। ১৯৫৬ সালের ২৯ জুন আর্থার মিলার ও মেরিলিন মনরো বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর নতুন রূপে পর্দায় দেখা দেন মেরিলিন। কিন্তু ১৯৬১ সালে কিছু ব্যক্তিগত মতামতের অমিল হওয়ার ফলে ডিভোর্স হয়ে যায় মিলার ও মনরোর। 

 ১৯৫৬ সালের ২৯ জুন আর্থার মিলার ও মেরিলিন মনরো বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন

অভিনয় জীবনের পতনের শুরু, The beginning of the decline of acting career

তৃতীয় বিয়ের পর ‘বাস স্টপ’, ‘দ্য প্রিন্স এন্ড দ্য শোগার্ল’ সিনেমার মাধ্যমে ফের জনপ্রিয়তা ফিরে পান তিনি। এছাড়া ‘দ্য প্রিন্স এন্ড দ্য শোগার্ল’ সিনেমাটি বাফটা অ্যাওয়ার্ডের জন্যও মনোনয়ন পায়। সে বছরে মেরিলিন ইতালি ও ফ্রান্সে দুটি পুরষ্কার অর্জন করেন। তবে অভিনয় জীবনের এই মধ্যগগনে নানা হতাশার ফলস্বরূপ অধিক ঔষধ সেবন ও মদ্যপান শুরু করেন মেরিলিন। ফলে কাজের ক্ষেত্রেও বেশ অনিয়ম ঘটতে শুরু করে, তাছাড়া ক্রমশ অমনযোগী হয়ে ওঠেন মনরো।

এর ফলে অপ্রিয় হতে শুরু করেন পরিচালকদের কাছেও। জীবনের বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের মানুষের সাহচর্যে বেষ্টিত ছিলেন মেরিলিন, তবে শেষ জীবনে তাঁর পাশে কেউই ছিলো না। লস অ্যাঞ্জেলসে নিজের বাড়িতে একাই থাকতেন তিনি।

গায়িকা হিসেবে সম্মাননা ও চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য পুরস্কার প্রাপ্তি, Awards and recognition

১৯৫৯ সালে ‘সাম লাইক ইট হট’Opens in a new tab. সিনেমার মাধ্যমে মেরিলিন মনরোর জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য এসেছিল। উক্ত সিনেমায় তিনি গায়িকার ভূমিকায় নজরকাড়া অভিনয় করেন। অসাধারণ অভিনয়ের জন্য তিনি ‘গোল্ডেন গ্লোব‘ পুরস্কার লাভ করেন। দ্য মিসফিট (১৯৬১) ছিল মেরিলিন মনরোর অভিনীত শেষ চলচিত্র। পরবর্তী সময়ে, ১৯৬২ সালের দিকে স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি প্রেসিডেন্ট জন এফ. কেনেডির ঘনিষ্ট লোক হিসেবে কাজ করেছিলেন।

উক্ত বছর কেনেডির জন্মদিনের পার্টিতে মেরিলিনের গাওয়া ‘হ্যাপি বার্থডে মি. প্রেসিডেন্ট‘ গানটি আজও যেন মানুষের কানে ভাসে। এছাড়াও তিনি ‘মাই হার্ট বিলংস টু ড্যাডি’, ‘আই ওয়াননা বি লাভড বাই ইউ’ এবং ‘ডায়মন্ডস আর এ গার্লস বেস্ট ফ্রেন্ডস’ গানগুলোও গেয়ে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন। এই গানগুলো তাঁকে সফল গায়িকার খেতাব লাভ করিয়েছিল। তাছাড়াও ১৯৯৯ সালে মেরিলিন মনরোকে আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট থেকে তাকে ‘গ্রেটেস্ট ফিমেল স্টার অফ অল টাইম’ খেতাব দেওয়া হয়েছিল।

গায়িকা হিসেবে সম্মাননা ও চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য পুরস্কার প্রাপ্তি

অভিনেত্রীর জীবনাবসান, Death of the renowned actress 

প্রেসিডেন্ট কেনেডির জন্মদিনের পার্টির কয়েকমাস মাস পর ১৯৬২ সালের ৫ আগস্ট লস অ্যাঞ্জেলসে নিজ বাসভবনেই মেরিলিন মনরোর নগ্ন নিথর দেহ পাওয়া যায়। চিকিৎসকের রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ হিসেবে অধিক ড্রাগ সেবনকে দায়ী করা হয়। পরবর্তী সময়ে জানা যায় যে, মনরো মৃত্যুর পূর্বে শেষ ফোন প্রেসিডেন্ট জন এফ. কেনেডিকেই করেছিলেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যু রহস্য আজও অধরা রয়ে গেছে।

উপসংহার, Conclusion 

ছোটবেলার চরম দুর্ভাগ্য কাটিয়ে আসলেও একসময় ভালবাসা, নাম, যশ, খ্যাতি সবকিছুই অর্জন করেছিলেন মেরিলিন মনরো। কিন্তু শেষজীবনে বারবার নিঃসঙ্গই হয়ে পড়েছিলেন তিনি। মাত্র ৩৬ বছর বয়সে তাঁর জীবন প্রদীপ নিভে যায়। কিন্তু তাঁর হাসির মোহাবিষ্ট ভক্ত আজও মেরিলিনের সৌন্দর্যের রহস্য খুঁজে বেড়ায়। নিজের মোহনীয় হাসি এবং ঝলমলে চুলের আভার জাদুতে মেরিলিন মনরো রূপোলী জগতের মধ্য দিয়ে দর্শকদের হৃদয়ে যে জায়গা তৈরি করে গেছেন, তা আজও অমলিন হয়ে আছে।

Frequently Asked Questions :

মেরিলিন মনরো কে ছিলেন?

মেরিলিন মনরো ছিলেন একজন মার্কিন অভিনেত্রী, মডেল তথা গায়ক।

মেরিলিন মনরো কবে জন্ম গ্রহণ করেন?

১৯২৬ সালের ১ জুন।

মেরিলিনের বাতাসে ওড়া স্কার্টের দৃশ্য কোন ছবির জন্য রেকর্ড করা হয়?

দ্য সেভেন ইয়ার ইচ‘।

মেরিলিন মনরোর মৃত্যু কবে হয়?

১৯৬২ সালের ৫ আগস্ট।

Oindrila Banerjee

Oindrila Banerjee, a master's graduate in Modern History from Calcutta University, embodies a diverse range of passions. Her heart resonates with the rhythm of creative expression, finding solace in crafting poetic verses and singing melodies. Beyond her academic pursuits, Oindrila has contributed to the educational realm, serving as a teachers' coordinator in a kindergarten English medium school. Her commitment to nurturing young minds reflects her belief in the transformative power of education. Oindrila's guiding principle in life, encapsulated in the motto, "There are two ways of spreading light: to be the candle or the mirror that reflects it,"

Recent Posts