ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাদের মধ্যে অন্যতম নাম হল নেতাজি সুভাষচন্দ্ৰ বসু। তিনি ভারতবর্ষকে স্বাধীন করার চেষ্টায় নিজের জীবন উৎসর্গ করে দেন। তাঁর চেষ্টায় বিভিন্ন দেশ নেতাজির পক্ষে হয়ে ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতকে স্বাধীনতা অর্জনে সমর্থন করেছিল। ইংরেজ সরকারের শাসন তথা শোষণ থেকে ভারতকে রক্ষা করার জন্য স্বাধীনতা অর্জনই ছিল তাঁর জীবনের ব্রত। সুভাষচন্দ্র বসু থেকে নেতাজি হয়ে ওঠা তথা আপামর দেশবাসীর কাছে এক অমূল্য দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠার নেপথ্যে রয়েছে তাঁর জীবনের এক বিস্ময়কর গল্প।
নেতাজি সুভাষচন্দ্ৰ বসু জন্ম ও পরিবার পরিচয়, Birth and family identity
সুভাষচন্দ্র বসুর জন্য হয়েছিল ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জানুয়ারি। তিনি ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্গত বাংলা প্রদেশের উড়িষ্যা বিভাগের (অধুনা, ভারতের ওড়িশা রাজ্য) কটক নিবাসী এক বিখ্যাত কায়স্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। নেতাজির পিতার নাম জানকীনাথ বসু, পেশায় ছিলেন আইনজীবী এবং তাঁর মাতা প্রভাবতী বসু (দত্ত)।
সুভাষ বসুর মা ছিলেন উত্তর কলকাতার হাটখোলা দত্ত বাড়ির কন্যা এবং পিতা জানকীনাথ বসু দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার বিখ্যাত “মাহীনগরের বসু পরিবার” এর সন্তান ছিলেন। সুভাষ নিজের পিতা-মাতার চৌদ্দ সন্তানের মধ্যে ছিলেন ষষ্ঠ পুত্র।
![নেতাজি সুভাষচন্দ্ৰ বসু জন্ম ও পরিবার পরিচয়](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/07/%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%BF-%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%B0-%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%AE-%E0%A6%93-%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9A%E0%A6%AF%E0%A6%BC-1.png)
সুভাষ চন্দ্র বসুর বাড়িতে, তাঁর মা হিন্দু দেবী দুর্গা ও কালীর উপাসনা করতেন, এছাড়াও মহাভারত ও রামায়ণ মহাকাব্য পাঠ করতেন এবং বাংলা ভক্তিগীতি গাইতেন। বাড়িতে নিজের মায়ের থেকে সুভাষ এক স্নেহশীল স্বভাব লাভ করেন, সেই স্বভাবের ফলস্বরূপ তিনি দুর্দশাগ্রস্ত লোকদের সর্বদা সাহায্য করার চেষ্টা করতেন। তাছাড়াও তিনি রোজ বিকেলে প্রতিবেশী ছেলেদের সঙ্গে খেলাধুলা করা ও উদ্যানচর্চা পছন্দ করতেন।
সুভাষ চন্দ্র বসুর শিক্ষাজীবন, Subhash Chandra Bose education
নেতাজি সুভাষ ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় খুবই মনোযাগী ছিলেন। ১৯০২ সালে সুভাষ চন্দ্র বসু তাঁর পাঁচ বড় ভাইয়ের সাথে কটকের প্রোটেস্ট্যান্ট ইউরোপীয় স্কুলে (অধুনা, স্টুয়ার্ট স্কুল) ভর্তি হন। বিদ্যালয়টিতে ষষ্ঠ শ্রেণি অবধি পঠন-পাঠন করেন তিনি। উক্ত বিদ্যালয়ে শিক্ষাদানের মাধ্যম ছিল ইংরেজি, তাছাড়া সকল বিষয়ই ব্রিটিশ ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত ছিল; সেখানে কোনও ভারতীয় ভাষা শেখানোর ব্যবস্থা ছিল না।
তাই পিতা জানকীনাথের পছন্দ ছিল এই স্কুল, কারণ তিনি চেয়েছিলেন যেন তাঁর ছেলেরা নির্দ্বিধায় ত্রুটিহীন ইংরেজি বলতে পারে। পিতার মতে ভারতে ব্রিটিশদের মাঝে থাকার জন্য বাংলা এবং ইংরেজি উভয় ভাষাই গুরুত্বপূর্ণ।
![সুভাষ চন্দ্র বসুর শিক্ষাজীবন](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/07/%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B7-%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%B0-%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%80%E0%A6%AC%E0%A6%A8-1.png)
এদিকে বাড়িতে কেবলমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলা হত, আর বিদ্যালয়টি বাড়ির বিপরীত বৈশিষ্ট্যের, সেই সুবাদে দুই ভাষাই তাঁর শেখা হবে। বারো বছর বয়সে তিনি ওড়িশা রাজ্যের কটকের র্যাভেনশা কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। এরপর তিনি উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ ও স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দের ভক্ত, Subhash Chandra Bose; a follower of Vivekananda
স্কুলে পড়ার সময়কাল থেকেই ছোট্ট সুভাষ স্বামী বিবেকানন্দের লেখা বইগুলো পড়তে আগ্রহী হন। তিনি বিবেকানন্দের আদর্শেই চলতে শুরু করেন যা তাঁকে স্বাধীনতা সংগ্রামী হতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। স্বামীজির বই পড়েই তিনি নিজের জীবনের আসল উদ্দেশ্য খুঁজে পান।
![নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দের ভক্ত](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/07/%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%BF-%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A7%8B%E0%A6%B8-%E0%A6%9B%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%80-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AD%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4-1.png)
ব্রিটিশ সরকারের অধীনে চাকরি, Employment under British Govt
বঙ্গসন্তান নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর নিজের দেশের প্রতি এতটাই প্রেম ছিল যে তিনি দেশের স্বার্থে সরকারি চাকরি ছাড়তেও দ্বিধা বোধ করেন নি। কঠোর পরিশ্রম ও মন দিয়ে পড়াশুনা করে ১৯২০ সালে ইংল্যান্ডে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসেন তিনি। পরীক্ষায় চতুর্থ স্থান পেয়ে পাশ করেন সুভাষ, তারপর চাকরি শুরু করেন ব্রিটিশ সরকারের অধীনে। কিন্তু তিনি যখন বুঝতে পারেন যে তাঁর দেশের জন্য তাঁকে অনেক কাজ করতে হবে, তখন তিনি ব্রিটিশ সরকারের অধীনে করা তাঁর চাকরি থেকে ইস্তফা দেন।
![ব্রিটিশ সরকারের অধীনে চাকরি](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/07/%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A7%8B%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%B6-%E0%A6%B8%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%85%E0%A6%A7%E0%A7%80%E0%A6%A8%E0%A7%87-%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A6%BF-1.png)
নেতাজির রাজনৈতিক শিক্ষাগুরু, Netaji’s political guru
তরুণ বয়সেই সুভাষ চন্দ্র রাজনীতির দিকে আকৃষ্ট হন। তাঁর রাজনৈতিক শিক্ষাগুরু ছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ। দেশবন্ধু হাত ধরেই সুভাষ প্রথমবার প্রকাশ্য জনসভায় বক্তব্য রেখেছিলেন।
অন্যদিকে দেশবন্ধুর স্ত্রী বাসন্তী দেবীও তরুণ সুভাষকে খুব স্নেহ করতেন, সুভাষও তাঁকে ‘মা’ বলেই ডাকতেন। রাজনীতিতে প্রবেশ করার কিছুদিনের মধ্যেই সুভাষ চন্দ্র বসু নিজের কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেস কমিটির প্রচার সচিবের পদ পান।
![নেতাজির রাজনৈতিক শিক্ষাগুরু](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/07/%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%88%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%95-%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%81-1-1.png)
একসময় ইংল্যান্ডের যুবরাজ ভারতে আসতে চাইলেন, কিন্তু নেতাজি যুবরাজের ভারত ভ্রমণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন, এর জন্য তাঁকে জেলও খাটতে হয়। তাঁর কারামুক্তি হওয়ার পরই তিনি বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটির সম্পাদক হন। এর কিছু সময় পর, চিত্তরঞ্জন দাশ মেয়র থাকাকালীন সময়ে সুভাষচন্দ্র বসু কে কলকাতা পুরসভার চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার পদে নিযুক্ত করা হয়।
নায়ক হিসেবে নেতাজির কর্ম, Netaji’s work as a hero
স্বভাবের দিক থেকে দেখতে গেলে নেতাজি ছিলেন একজন চরমপন্থীর নায়ক। তাই তাঁর চরমপন্থী চিন্তাধারার সাথে জাতীয় কংগ্রেসের নরমপন্থী সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ হয়। এমনকী একসময় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন নিয়ে নরমপন্থীরা বিক্ষুব্ধ হওয়ার ফলে সুভাষ অসন্তুষ্ট হয়ে পড়েন এবং কংগ্রেস ত্যাগ করেন।
এরপর নেতাজির হাত ধরে ১৯৩৯ সালের ৩রা মে সৃষ্টি হয় “ফরওয়ার্ড ব্লক’ এর। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য নতুন দলের হয়ে তিনি দেশবাসীকে নতুনভাবে অনুপ্রাণিত করার চেষ্টায় লেগে পড়েন। ফরওয়ার্ড ব্লক গঠন করার পরেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঘন্টা বেজে ওঠে। সেই বিশ্বযুদ্ধকে সামনে রেখে তিনি ভারত স্বাধীনতার পূর্ণরূপ গঠনের চেষ্টা চালাতে শুরু করেন।
এই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তিনি ভারতবর্ষকে স্বাধীন করার উদ্দেশ্যে তথা ব্রিটিশ সরকারকে ভারত থেকে বিতাড়িত করার জন্য কাজ শুরু করেন। এই উদ্দেশ্য নিয়ে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু রাশিয়া যান এবং দেশকে স্বাধীন করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মিত্রতা তৈরি করেন।
![নায়ক হিসেবে নেতাজির কর্ম](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/07/%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%95-%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A7%87-%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE-1.png)
১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে ১৭ই জানুয়ারি ভারত স্বাধীনতা অর্জনের পরিকল্পনা হিসেবে ব্রিটিশদের শত্রু দেশগুলির সঙ্গে মিত্রতা স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়ে শিশির বসুর সহযোগিতায় দেশ ত্যাগ করেন। সর্বোপরি তাঁর প্রচেষ্টাতেই ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভের দিকে অনেকটা অগ্রসর হয়।
আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন, formation of Azad Hind Fauj
রাসবিহারী বসুর তৎপরতায় ১৯৪২ সালে আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এই সেনাবাহিনী গঠিত হয়। ভারতবর্ষে স্বাধীনতা আন্দোলনে এই সেনাবাহিনী বিশেষ দায়িত্ব পালন করে। তবে পরবর্তী সময়ে এই বাহিনীকে বিভিন্ন সমস্যায় আবদ্ধ হতে হয়। ১৯৪২ সালে রাসবিহারী বসু আজাদ হিন্দ ফৌজ এর দায়িত্বভার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর হাতে তুলে দেন। সুভাষচন্দ্র বসু একে পুনরায় সাজিয়ে গুছিয়ে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে কাজে লাগান।
১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ ফৌজের ‘দিল্লি চলো’ অভিযান শুরু হয়। এই অভিযানে নেতাজির বিখ্যাত উক্তিটি ব্যবহৃত হয়, সেটি হল “তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব।”
![আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/07/%E0%A6%86%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A6-%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6-%E0%A6%AB%E0%A7%8C%E0%A6%9C-%E0%A6%97%E0%A6%A0%E0%A6%A8-1.png)
নেতাজির বৈবাহিক জীবন, married life of Netaji Subhas Chandra Bose
১৯৩৭ সালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু তাঁর সেক্রেটারি এমিলির সঙ্গে বিয়ে হয়, তিনি ছিলেন একজন অস্ট্রেলিয়ান যুবতী। ১৯৪২ সালের ২৯ নভেম্বর তাঁদের এক কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে, যার নাম রাখা হয় অনিতা বসু। বর্তমানে সুভাষকন্যা জার্মানিতে থাকেন।
![নেতাজির বৈবাহিক জীবন](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/07/%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A7%88%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%95-%E0%A6%9C%E0%A7%80%E0%A6%AC%E0%A6%A8-1.png)
মৃত্যু নাকি অন্তর্ধান, Death or disappearance!!
নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য আজও সবার অজানা। এ নিয়ে বিভেদের কোনো শেষ নেই। ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট তাইপেইতে এক বিমান দুর্ঘটনার পর থেকেই নেতাজির কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। এরপর থেকেই নেতাজির মৃত্যু এবং নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা নিয়ে একাধিক রহস্য ঘনীভূত হতে থাকে।
কেউ একে তাঁর অন্তর্ধান হিসেবে ধরে নেয় আবার কারো মতে বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে রটে যায়। তাঁর নিখোঁজ হওয়ার নেপথ্যে থাকা সত্য উদঘাটন করার জন্য একাধিক তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল শাহনওয়াজ কমিশন, খোসলা কমিশন এবং মুখার্জি কমিশন।
![নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য আজও সবার অজানা](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/07/%E0%A6%AE%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A7%81-%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BF-%E0%A6%85%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A6%A8-1.png)
শাহনওয়াজ এবং খোসলা কমিশন তদন্তের পর দাবি করে নেতাজি মারা গিয়েছিলেন বলে। অন্যদিকে, মুখার্জি কমিশনের দাবি ছিল যে নেতাজি দুর্ঘটনার পরও জীবিত ছিলেন। অন্যদিকে নেতাজির মৃত্যু নিয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও বিভাজন রয়েছে। এক কথায় আজও নেতাজির মৃত্যু কিংবা অন্তর্ধান নিয়ে নানান বিতর্ক রয়েছে। মৃত্যু, অন্তর্ধান নাকি অন্য কিছু? কেউই তা উৎঘাটন করতে পারেন নি।
সুভাষ চন্দ্র বসু কি সমাজতন্ত্রী ছিলেন?
সুভাষ চন্দ্র বসু, যিনি নেতাজি নামেও পরিচিত, তাঁর রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রথম দিকে শ্রেণীবিহীন সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় সমাজতন্ত্রের সাথে ভারতের সম্পূর্ণ স্বাধীনতার সমর্থনে ছিল, যেখানে কংগ্রেস কমিটির অধিকাংশই ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাসের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে এটি চেয়েছিলেন।
গান্ধীজী ও নেতাজির মতামতের পার্থক্য কি?
পার্থক্য: অহিংসা বনাম জঙ্গি দৃষ্টিভঙ্গি : গান্ধী অহিংসা এবং সত্যাগ্রহে দৃঢ় বিশ্বাসী ছিলেন, যদিও বোসের জন্য গান্ধীর অহিংসার কৌশল ভারতের স্বাধীনতা সুরক্ষিত করার জন্য অপর্যাপ্ত হবে। বোসের জন্য, শুধুমাত্র সহিংস প্রতিরোধই ভারত থেকে বিদেশী সাম্রাজ্যবাদী শাসনকে উৎখাত করতে পারে।
![গান্ধীজী ও নেতাজির মতামতের পার্থক্য কি?](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/07/%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A7%80%E0%A6%9C%E0%A7%80-%E0%A6%93-%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%A4%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%95%E0%A6%BF-1.png)
২৩ জানুয়ারি কি দিবস?
নেতাজি জয়ন্তী বা নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু জয়ন্তী , যা পরাক্রম দিবস বা পরক্রম দিবস নামেও পরিচিত
![২৩ জানুয়ারি কি দিবস?](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/07/%E0%A7%A8%E0%A7%A9-%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%81%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF-%E0%A6%95%E0%A6%BF-%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%B8-1.png)
উপসংহার, Conclusion
যাদের প্রচেষ্টায় আমরা আজ স্বাধীনভাবে ভারতবর্ষে বসবাস করতে পারছি সেইসকল মহান স্বতন্ত্র মনীষীদের মধ্যে নেতাজি ছিলেন অন্যতম। তিনি শুধু অতীতে কিংবা বর্তমানে নয়, বরং ভবিষ্যতের যুব সমাজকেও প্রেরণা জোগান।
![মহান স্বতন্ত্র মনীষীদের মধ্যে নেতাজি ছিলেন অন্যতম।](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2023/10/ne9.jpg)
তাই দেশবাসী আজও তাঁর মৃত্যুকে মেনে নিতে পারে না।
Frequently Asked Questions
ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাদের মধ্যে অন্যতম নাম হল নেতাজি সুভাষচন্দ্ৰ বসু।
১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জানুয়ারি।
রাসবিহারী বসু।
১৯৩৯ সালের ৩রা মে।