শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জীবনী বাংলা, Biography of Shakti Chattopadhyay in Bengali 

শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জীবনী বাংলা

” মানুষ বড় একলা, তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও,
এসে দাঁড়াও, ভেসে দাঁড়াও এবং ভালোবেসে দাঁড়াও। “

এই বিখ্যাত পংক্তি স্বনামধন্য লেখক শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের লেখা। তিনি ছিলেন একজন অসাধারণ কবি, ঔপন্যাসিক, লেখক তথা অনুবাদক। ষাটের দশকের সময়কালে যে চারজন কবিকে হাংরি আন্দোলনের জনক বলে ধরা হয় তাদের মধ্যে শক্তি চট্টোপাধ্যায় ছিলেন অন্যতম। নিজের সাহিত্য রচনার মধ্য দিয়ে তিনি বাংলার সাহিত্য জগতে অশেষ অবদান রেখে গেছেন। আজও পাঠকরা তাঁর লেখা পড়ে আনন্দ উপভোগ করেন। আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা এই সুলেখকের জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরবো। 

শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ও শৈশবকাল, Birth and Childhood

শক্তি চট্টোপাধ্যায়-এর জন্ম হয়েছিল ১৯৩৩ সালের ২৫ নভেম্বর। তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার জয়নগরে এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। লেখকের বয়স যখন চার বছর তখন তাঁর বাবা পরলোক গমন করেন। তাই তাঁর শৈশব পিতৃহীন কেটেছিল। তিনি বহড়ুতে নিজের মাতামহের কাছে এবং বাগবাজারে তাঁর মাতুলালয়ে বড় হয়েছেন।

শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম

শক্তি চট্টোপাধ্যায়-এর শিক্ষাগত যোগ্যতা : Educational qualification of Shakti Chattopadhyay 

শক্তি চট্টোপাধ্যায় প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন বহড়ু হাইস্কুল থেকে, এরপর ১৯৪৮ সালে তিনি কলকাতার বাগবাজারে চলে আসেন এবং মহারাজা কাশিমবাজার পলিটেকনিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হন, স্কুলের পড়াশুনা উক্ত স্কুলেই সম্পন্ন করেছিলেন তিনি। তিনি বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার সময় এক শিক্ষক দ্বারা মার্কসবাদের সাথে পরিচিতি লাভ করেন।

শক্তি চট্টোপাধ্যায়-এর শিক্ষাগত যোগ্যতা

১৯৪৯ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘প্রগতি লাইব্রেরি’ এর পাশাপাশি “প্রগতি” নামে এক হাতে-লেখা পত্রিকা প্রকাশ করতে শুরু করেছিলেন, যা খুব শীঘ্রই মুদ্রিত রূপ নেয় এবং পুনরায় নাম বদল করে “বহ্নিশিখা” নামে প্রকাশিত হতে শুরু করে।

১৯৫১ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি সিটি কলেজে ভর্তি হন। তখন তিনি নিজের মামার কাছে থাকতেন, তাঁর মামা পেশায় একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। এই মামা শক্তিকে হিসাবরক্ষকের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অন্যদিকে সেই বছরই তিনি ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন এবং এর সদস্য হন। তারপর তিনি বাংলা সাহিত্যে স্নাতক অধ্যয়নের জন্যে ভর্তি হন প্রেসিডেন্সি কলেজে, কিন্তু সেখানে তাঁর স্নাতক অধ্যয়ন অসমাপ্ত থেকে যায়। 

 ১৯৫৬ সালে, শক্তিকে বিভিন্ন কারণে নিজের মামার বাড়ি ছেড়ে আসতে হয়েছিল এবং তিনি নিজের মা ও ভাইয়ের সাথে উল্টোডাঙ্গায় এক বস্তিতে বাস করতে শুরু করেন।

সে সময়ে তিনি সম্পূর্ণরূপে নিজের ভাইয়ের স্বল্প আয়ের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। দারিদ্রের কারণে তিনি স্নাতক পাঠ অর্ধসমাপ্ত রেখে প্রেসিডেন্সি কলেজ ত্যাগ করেছিলেন এবং সাহিত্যকেই নিজের জীবিকা করার উদ্দেশ্যে কবিতা, উপন্যাস ইত্যাদি লেখা শুরু করেন।

সাহিত্যজগতে শক্তি চট্টোপাধ্যায়-এর প্রবেশ, Shakti Chatterjee’s entry into the literary world

শক্তি চট্টোপাধ্যায় বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত ‘কবিতা’ নামক পত্রিকায় ১৯৫৬ সালে ‘যম’ কবিতা লিখে সাহিত্যজগতে প্রবেশ করেন। এছাড়াও তিনি যুক্ত ছিলেন কৃত্তিবাস পত্রিকার সঙ্গেও। পরবর্তীতে তিনি ‘কবিতা সাপ্তাহিকী’ নামক একটি পত্রিকা প্রকাশ করে কবিতাজগতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন৷ তাঁর প্রণীত, অনূদিত-সম্পাদিত কবিতা তথা গদ্যগ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক, তাছাড়া তাঁর লেখা অজস্র তথা অগ্রন্থিত রচনা পত্রপত্রিকায় ছড়িয়ে আছে। তিনি সাহিত্যে ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন। তাঁর ব্যবহৃত নামগুলো হল : স্ফুলিঙ্গ সমাদ্দার ও রূপচাঁদ পক্ষী।

সাহিত্যজগতে শক্তি চট্টোপাধ্যায়-এর প্রবেশ

শক্তি চট্টোপাধ্যায়- এর কর্মজীবন, career life of Shakti Chattopadhyay 

জীবিকাক্ষেত্রে তিনি বেশিরভাগ সময় সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি সাংবাদিক হিসেবে আনন্দবাজার পত্রিকায় কাজ করেছিলেন। তিনি ১৯৭০ সাল থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত উক্ত পত্রিকার সাথে যুক্ত ছিলেন। শক্তি চট্টোপাধ্যায় কর্মজীবনে শুধু সাংবাদিকতা নয়, বরং বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।

কিন্তু কোনো পেশায় তিনি দীর্ঘস্থায়ী ছিলেন না। একসময় দরিদ্রতার কারণে তিনি দোকানের সহকারী হিসেবেও কাজ করেছিলেন, তিনি সাক্সবি ফার্মা লিমিটেডে কাজ করেছেন, এছাড়াও ভবানীপুর টিউটোরিয়াল হোমে (হ্যারিসন রোড শাখায়) শিক্ষকতার কাজও করেন তিনি। আবার কোনো এক সময় ব্যবসা করার চেষ্টাও করেছিলেন।

শক্তি চট্টোপাধ্যায়- এর কর্মজীবন
শক্তি চট্টোপাধ্যায়- এর কর্মজীবন

কিন্তু সেক্ষেত্রে ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি একটি মোটর কোম্পানিতে জুনিয়র এক্সিকিউটিভ হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। তবে সবকিছুর পাশাপশি তিনি নিজের সাহিত্য চর্চা বজায় রেখেছিলেন। তাই আজ তাঁর এত জনপ্রিয়তা। কর্মক্ষেত্রে স্থায়ী না হলেও সাহিত্য কর্মে তিনি নিজের স্থায়ী জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়েছিলেন।

শক্তি চট্টোপাধ্যায়- এর ব্যক্তিগত জীবন, personal life of Shakti Chattopadhyay 

শক্তি চট্টোপাধ্যায় বিয়ে করেছিলেন মীনাক্ষী চট্টোপাধ্যায়কে, যিনি পেশাগত দিক থেকে একজন ভারতীয় লেখক। ১৯৬৫ সালে এক সাহিত্য আড্ডার মধ্য দিয়ে তাদের প্রথম সাক্ষাত হয়। পরবর্তীতে তাদের পরিচিতি ঘনিষ্ঠতায় পরিণত হয় এবং দুজনে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। তাদের সাংসারিক জীবনে একজন মেয়ের জন্ম হয়েছিল, যার নাম রাখা হয় তিতি চট্টোপাধ্যায়।

শক্তি চট্টোপাধ্যায়- এর ব্যক্তিগত জীবন

শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি,  Shakti Chatterjee’s immortal creation

শক্তি চট্টোপাধ্যায় রচনাবলী কত সালে এবং কোন প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় তা জেনে নিন :

শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি
  • ছবি আঁকে, ছিঁড়ে ফেলে- জানুয়ারি, ১৯৯১ সাল – আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড
  • যেতে পারি কিন্তু কেন যাবো- মার্চ, ১৯৮২ সাল – আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড- সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার (১৯৮৩)
  • কোথাকার তরবারি কোথায় রেখেছে – ১৯৮৩ সাল -আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড 
  • কক্সবাজারে সন্ধ্যা- ১৯৮৪ সাল- আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড
  • ও চিরপ্রণম্য অগ্নি- ১৯৮৫ সাল- আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড
  • সন্ধ্যায় সে শান্ত উপহার- আগস্ট, ১৯৮৬ সাল- আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড
  • আমি একা বড়ো একা- মে, ১৯৮০ সাল -বিশ্ববানী প্রকাশনী 
  • এই তো মর্মরমূর্তি- জানুয়ারি, ১৯৮৭ সাল – আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড 
  • আমাকে জাগাও – ১৯৮৯ সাল- আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড
  • পাতালে টেনেছে আজ- জুলাই, ১৯৯১সাল।
  • জঙ্গল বিষাদে আছে- জানুয়ারি, ১৯৯৪ সাল -আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড 
  • হে প্রেম হে নৈঃশব্দ্য- মার্চ, ১৯৬১ সাল – গ্রন্থজগৎ 
  • হেমন্তের অরণ্যে আমি পোস্টম্যান- মার্চ, ১৯৬৯ সাল – অরুণা প্রকাশনী, 
  • চতুর্দশপদী কবিতাবলী- মে, ১৯৭০ সাল।
  • পাতাল থেকে ডাকছি- মে ১৯৭৭ সাল – তাম্রলিপি 
  • আমাকে দাও কোল- ১৪ মার্চ ১৯৮০ সাল – জার্নাল 
  • প্রভু নষ্ট হয়ে যাই – আগস্ট ১৯৭২ সাল- আনন্দ পাবলিশার্স 
  • ছিন্ন বিচ্ছিন্ন – অক্টোবর, ১৯৭৫ সাল – আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড
  • সুন্দর এখানে একা নয়- জুন, ১৯৭৬ সাল বিশ্ববাণী প্রকাশনী
  • আমি ছিঁড়ে ফেলি ছন্দ, তন্তুজাল – ডিসেম্বর, ১৯৭৬ সাল – আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড 
  • এই আমি যে পাথরে – আগস্ট, ১৯৭৭ সাল – বিশ্ববাণী প্রকাশনী ( ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বাংলাদেশের আগামী প্রকাশনী থেকে উক্ত গ্রন্থের একটি সংস্করণ ১৯৮৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশিত হয়।)
  • উড়ন্ত সিংহাসন- ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৮ সাল – অরুণা প্রকাশনী 
  • পরশুরামের কুঠার – ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৮ সাল – স্বরলিপি
  • মন্ত্রের মতন আছি স্থির- বিশ্ববানী প্রকাশনী 
  • এই তো মর্মরমূর্তি – জানুয়ারি ১৯৮৭- আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড 
  • বিষের মধ্যে সমস্ত শোক- মে ১৯৮৭- মিরান্দা বুকস 
  • আমাকে জাগাও ১৯৮৯ আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড 
  • ছবি আঁকে, ছিঁড়ে ফেলে জানুয়ারি ১৯৯১ আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড
  • পাতালে টেনেছে আজ- জুলাই ১৯৯১ – ক্যাম্প 
  • জঙ্গল বিষাদে আছে – জানুয়ারি ১৯৯৪- আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড।
শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি

শক্তি চট্টোপাধ্যায়- এর জীবনাবসান, Death of Shakti Chattopadhyay 

শক্তি চট্টোপাধ্যায় ইহলোক ত্যাগ করেছিলেন ১৯৯৫ সালের ২৩ মার্চ। বিশ্বভারতীতে সৃষ্টিশীল সাহিত্যের অধ্যাপনায় রত থাকাকালীন তিনি শান্তিনিকেতনের এক অনুষ্ঠানে অতিথি-অধ্যাপক হিসেবে যান, তখন অকস্মাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তবে মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৬১ বছর। 

শক্তি চট্টোপাধ্যায়- এর জীবনাবসান

শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের পুরস্কার প্রাপ্তি, awards and recognition

সাহিত্য জীবনে শক্তি চট্টোপাধ্যায় পেয়েছেন বহু পুরস্কার। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল আনন্দ পুরস্কার, সাহিত্য একাডেমীর পুরস্কার, সম্বলপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গঙ্গাধর মেহের পুরস্কার, এছাড়াও তাঁর ঝুলিতে জমা আছে মরণোত্তর রবীন্দ্র পুরস্কার।

শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের পুরস্কার প্রাপ্তি

তিনি ১৯৭৫ সালে আনন্দ পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর ১৯৮২ সালে লেখা ” যেতে পারি কিন্তু কেন যাবো ” কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি ১৯৮৩ সালে সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার লাভ করেছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে নিজের লেখার জন্য তিনি একাধিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন।

উপসংহার, Conclusion 

শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ছিলেন জীবনানন্দ-উত্তর যুগের সময়কালীন বাংলা সাহিত্যের একজন প্রধান আধুনিক কবি। মূলত বিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে তিনি নিজের লেখার জন্য বিশেষভাবে আলোচিত ছিলেন।

শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ছিলেন জীবনানন্দ-উত্তর যুগের সময়কালীন বাংলা সাহিত্যের একজন প্রধান আধুনিক কবি

তিনি ১৯৬১ সাল থেকে মৃত্যুর পূর্ব অবধি অর্থাৎ ১৯৯৫ সাল অবধি সক্রিয়ভাবে সাহিত্য জগতের সাথে যুক্ত ছিলেন। তাই আজ নিজের লেখার মাধ্যমে তিনি আমাদের মধ্যে অমর হয়ে আছেন।

Frequently Asked Questions

শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম কবে হয়?

১৯৩৩ সালের ২৫ নভেম্বর।

শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু কবে হয়?

১৯৯৫ সালের ২৩ মার্চ। 

শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিষ্ঠিত গ্রন্থাগারের নাম কি ?

১৯৪৯ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘প্রগতি লাইব্রেরি’

Oindrila Banerjee

Oindrila Banerjee, a master's graduate in Modern History from Calcutta University, embodies a diverse range of passions. Her heart resonates with the rhythm of creative expression, finding solace in crafting poetic verses and singing melodies. Beyond her academic pursuits, Oindrila has contributed to the educational realm, serving as a teachers' coordinator in a kindergarten English medium school. Her commitment to nurturing young minds reflects her belief in the transformative power of education. Oindrila's guiding principle in life, encapsulated in the motto, "There are two ways of spreading light: to be the candle or the mirror that reflects it,"

Recent Posts