শাবনূর এর বয়স, উচ্চতা, জীবনী, প্রেম, ছবি | Bangladeshi Actress Shabnur Height, Weight, Age, Affairs, Biography & More in bangla

শাবনূর এর জীবনী

বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেত্রী কাজী শারমিন নাহিদ নূপুর, যার মঞ্চনাম শাবনূর। তিনি শাবনূর হিসাবেই অধিক পরিচিত। ২০০৫ সালে তিনি মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত দুই নয়নের আলো ছবিতে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া অভিনয় জীবনে তিনি ছয়বার বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেছেন। তিনি তারকা জরিপে রেকর্ড সংখ্যক ১০ বারেরও বেশি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার লাভ করেছেন।

অভিনেত্রী শাবনূরের প্রাথমিক জীবন, Actress shabnur early life

 অভিনেত্রী শাবনূরের জন্ম হয় ১৯৭৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর। বাংলাদেশের যশোর জেলার শার্শা উপজেলার নাভারণে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পারিবারিক ভাবে তাঁর নাম রাখা হয়েছিল কাজী শারমিন নাহিদ নুপুর। কিন্তু চলচ্চিত্রে আগমনের পরে পরিচালক এহতেশাম তাঁর নতুন নাম রাখেন শাবনূর। শাবনূর শব্দের অর্থ হল রাতের আলো। সুখ্যাত অভিনেত্রী শাবনূরের পিতার নাম ছিল শাহজাহান চৌধুরী। তিন জন ভাই বোনের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে বড়। তাঁর ছোট বোনের নাম হল ঝুমুর এবং ভাই এর নাম তমাল, ছোটো ভাই ও বোন দুজনেই নিজ নিজ পরিবারসহ অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী।

অভিনেত্রী শাবনূরের প্রাথমিক জীবন

শাবনূরের অভিনয় জীবন, Shabnur’s acting career

শাবনূর একসময় বাংলাদেশের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ছিলেন, তবে তাঁর জনপ্রিয়তা এখনও বর্তমান। শাবনূরের চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে চাঁদনী রাতে (১৯৯৩) চলচ্চিত্র দিয়ে। প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার এহতেশাম পরিচালিত এই সিনেমা ব্যর্থ হলেও পরে প্রয়াত নায়ক সালমান শাহের সাথে জুটি গড়ে ব্যাপক সফলতা পান।

সময়ের সাথে এই জুটি একের পর এক সুপারহিট ছবি দিতে থাকে। কিন্তু সালমানের অকাল মৃত্যুতে শাবনূরের ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়ে যায়। এর পর রিয়াজ, শাকিল খান, ফেরদৌস আহমেদ ও শাকিব খান এর সাথে বিভিন্ন চলচ্চিত্রে জুটি গড়ে বেশ কিছু হিট ছবি উপহার দিয়েছেন অভিনেত্রী।

শাবনূরের অভিনয় জীবন

২০০৫ সালে শাবনূর মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত দুই নয়নের আলো ছবিতে অভিনয় করে তার দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারের একমাত্র জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। 

অভিনেত্রী শাবনূরের শিক্ষাগত যোগ্যতা, Shabnur educational qualification

শাবনূর পড়াশোনা করেছেন আই এ পর্যন্ত। পড়াশুনা শেষ করার কিছু সময় পর থেকে চলচ্চিত্র জগতে কাজ শুরু করেন। প্রায় বিশ বছর চলচ্চিত্রের একজন জনপ্রিয় নায়িকা হিসেবে অভিনয় করা শাবনূর একসময় চলচ্চিত্র পরিচালনায় আগ্রহ প্রকাশ করেন। অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানকালীন সময়ে তিনি চলচ্চিত্র পরিচালনা সংক্রান্ত শর্ট কোর্স করেছেন, এক সাক্ষাতকারে তিনি নিজেই একথা সকলকে জানিয়েছেন। 

শাবনূর অভিনীত চলচ্চিত্রের তালিকা, Shabnur acted movie list 

  • ১৯৯৩ সালে, চাঁদনী রাতে । 
  • ১৯৯৪ সালে; দুনিয়ার বাদশাহ, তুমি আমার, সুজন সখি, বিক্ষোভ।
  • ১৯৯৫ সালে; শুধু তোমারি, স্বপ্নের ঠিকানা, হৃদয় আমার, আসামী বধূ, মহা মিলন, প্রেমের অহংকার।
  • ১৯৯৬ সালে; বিদ্রোহি প্রেমিক, বিচার হবে, স্ত্রী হত্যা, তোমাকে চাই, চিরঋনী, স্বপ্নের পৃথিবী, বাজীগর, মৌমাছি, জীবন সংসার, সৈনিক, চাওয়া থেকে পাওয়া।
  • ১৯৯৭ সালে; আত্মসাৎ, প্রেম, প্রেম পিয়াসী, শেষ ঠিকানা, স্বপ্নের নায়ক, আনন্দ অশ্রু, বুকের ভিতর আগুন, কে অপরাধী, রঙীন উজান ভাটি, মন মানেনা, তুমি শুধু তুমি। 
  • ১৯৯৮ সালে; অধিকার চাই, পৃথিবী তোমার আমার, মধুর মিলন, পাগলীর প্রেম, রঙ্গীন নয়ন মনি, মানুষ কেন অমানুষ, আমার অন্তরে তুমি।
  • ১৯৯৯ সালে; বিয়ের ফুল, আমি তোমারি, ভুলোনা আমায়, ভালবাসি তোমাকে, স্বপ্নের পুরুষ, বুক ভরা ভালবাসা, কাজের মেয়ে, ভয়ঙ্কর বিষু।
  • ২০০০ সালে; নারীর মন, এ বাধন যাবেনা ছিঁড়ে, আশা আমার আশা, দুষ্ট ছেলে মিষ্টি মেয়ে, রঙ্গীন বিনি সুতার মালা, কারিশমা, গোলাম, নিঃশ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি, জামিন নাই, সবার অজান্তে, এরই নাম দোস্তি, ফুল নেব না অশ্রু নেব, এই মন চায় যে..!
  • ২০০১ সালে; দিল তো পাগল, বস্তির মেয়ে, মন, প্রেমের তাজমহল, প্রেমের জ্বালা, নাচনেওয়ালী, শ্বশুরবাড়ী জিন্দাবাদ, স্বপ্নের বাসর, গুন্ডার প্রেম।
  • ২০০২ সালে; হৃদয়ের বন্ধন, স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ , মিলন হবে কত দিনে, সমাজকে বদলে দাও, মাটির ফুল, সবার উপরে প্রেম, ভালবাসা কারে কয়, সুন্দরী বধূ, ও প্রিয়া তুমি কোথায়, ভাইয়া।
  • ২০০৩ সালে; খেয়া ঘাটের মাঝি, তুমি বড় ভাগ্যবতী, দুই বধূ এক স্বামী, নসিমন, প্রানের মানুষ, স্বপ্নের ভালবাসা, নয়ন ভরা জল , বউ শ্বাশুরীর যুদ্ধ, প্রেম সংঘাত।
  • ২০০৪ সালে; দোস্ত আমার, ব্যাচেলর, কঠিন পুরুষ, জীবন এক সংঘর্ষ, হৃদয় শুধু তোমার জন্য, ভাইয়ের শত্রু ভাই, ফুলের মত বউ, যত প্রেম ততো জ্বালা, তোমার জন্য পাগল, অন্য মানুষ।
  • ২০০৫ সালে; চার সতীনের ঘর, ঘর জামাই, ভালবাসার যুদ্ধ, দুই নয়নের আলো, বলনা ভালবাসি, আমার স্বপ্ন তুমি, মোল্লা বাড়ীর বউ, কাল সকালে, বন্ধক, জীবন সীমান্তে।
  • ২০০৬ সালে; মায়ের মর্যাদা, এদেশ কার, জীবনের গল্প, জন্ম, বাঙলা, নিরন্তর, রঙ্গীন রসের বাইদানী, ভালোবাসা ভালোবাসা, ঢাকাইয়া পোলা বরিশালের মাইয়া। 
  • ২০০৭ সালে; জমেলা সুন্দরী, গ্রাম গঞ্জের পিরিতি, দুঃখিনী জোহরা, আমার প্রাণের স্বামী, কপাল, মেয়ে সাক্ষী, এই যে দুনিয়া, কঠিন প্রেম, বিয়াইন সাব।
  • ২০০৮ সালে; ছোট বোন, টিপ টিপ বৃষ্টি, ভালবাসার দুশমন, এ চোখে শুধু তুমি, ঘরের লক্ষ্মী, স্বামী নিয়ে যুদ্ধ, ১ টাকার বউ, তোমাকে বউ বানাবো, সমাধি 
  • ২০০৯ সালে; জীবন নিয়ে যুদ্ধ, তুমি আমার স্বামী, মন বসেনা পড়ার টেবিলে, চাঁদের মত বউ, বলব কথা বাসর ঘরে, বধূ তুমি কার, স্বামী স্ত্রীর ওয়াদা, ভালোবেসে বউ আনবো,মন ছুয়েছে মন, পিরিতির আগুন জ্বলে দ্বিগুণ।
  • ২০১০ সালে; গোলাপী এখন বিলাতে, যেখানে তুমি সেখানে আমি, মোঘলে আজম, এভাবেই ভালবাসা হয়। 
  • ২০১১ সালে; মা আমার চোখের মনি। 
  • ২০১২ সালে; আত্মগোপন, ভালবাসা সেন্টমার্টিনে, জিদ্দি বউ। 
  • ২০১৩ সালে; শিরি ফরহাদ, কিছু আশা কিছু ভালবাসা। 
  • ২০১৮ সালে; পাগল মানুষ।
  • ২০২৪ সালে; রঙ্গনা, মাতাল হাওয়া।
শাবনূর অভিনীত চলচ্চিত্রের তালিকা

অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত জীবন, Shabnur personal life

শাবনূরের বিয়ে হয়েছিল ব্যবসায়ী অনিক মাহমুদের সঙ্গে। ২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর তাদের আংটি বদল হয় এবং ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর দুজনে বিয়ে করেন। বিবাহের পর থেকে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস শুরু করেন ও সেখানকার নাগরিকত্ব লাভ করেন। পরের বছর অর্থাৎ ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর তিনি এক ছেলে সন্তানের মা হন।

অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত জীবন

এই দম্পতি তাদের ছেলের নাম রাখে আইজান নিহান। তবে এই সংসারে থাকার দীর্ঘ কিছু বছর পর তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি অ্যাডভোকেট (তালাকের নোটিশ এবং হলফনামা প্রস্তুতকারী) কাওসার আহমেদের মাধ্যমে অনিক মাহমুদকে অভিনেত্রী তালাক নোটিশ পাঠান।

অভিনেত্রী শাবনূরের পুরস্কার ও মনোনয়ন, awards and nominations

  • শাবনূর দুই নয়নের আলো (২০০৫) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য একবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। 
  • শাবনূর ছয়টি বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন, তন্মধ্যে স্বপ্নের ঠিকানা (১৯৯৫), ভালবাসি তোমাকে (১৯৯৯), বউ শাশুড়ীর যুদ্ধ (২০০৩), ফুলের মত বউ (২০০৪), আমার প্রাণের স্বামী (২০০৯) চলচ্চিত্রের অভিনয়ের জন্য পাঁচটি এবং ২০০৯ সালে বর্ষসেরা তারকা হিসেবে একটি।
  •  শাবনূর রেকর্ড সংখ্যক ১৩টি মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের মনোনয়ন থেকে ১০টি পুরস্কার অর্জনসহ অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন ।
অভিনেত্রী শাবনূরের পুরস্কার ও মনোনয়ন

বাংলাদেশের অভিনেত্রী শাবনূরের নেট ওয়ার্থ, Actress Shabnur’s net worth

বাংলাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেত্রী শাবনূরের আনুমানিক 100 মিলিয়ন ডলারের সম্পদ আছে বলে জানা গেছে। নিজের ব্যতিক্রমী প্রতিভা, সৌন্দর্য এবং চিত্তাকর্ষক অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র শিল্পে নিজের জন্য একটি বিশেষ স্থান তৈরি করেছেন এবং প্রভূত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন।

বাংলাদেশের অভিনেত্রী শাবনূরের নেট ওয়ার্থ

শাবনূরের সাফল্য এবং খ্যাতি নিঃসন্দেহে অসংখ্য এনডোর্সমেন্ট ডিল, ব্র্যান্ড সহযোগিতা এবং ব্যবসায়িক উদ্যোগের দরজা খুলে দিয়েছে, যা তাঁর ক্ষেত্রে চিত্তাকর্ষক নেট ওয়ার্থ তৈরিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। একজন অভিনেত্রী হিসেবে তার যাত্রা এবং তার নৈপুণ্যের প্রতি নিবেদন তাকে বাংলাদেশী বিনোদন শিল্পের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

শেষ কথা, Conclusion 

বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূর। দীর্ঘ সময় সিনেমা জগৎ থেকে বিরত থেকেও আবারও বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে ফিরেছেন তিনি। তাঁকে তাঁর অনুগামীরা নতুনভাবে গ্রহণ করতে সর্বদাই প্রস্তুত। বলাই বাহুল্য যে তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের অন্যতম সফল অভিনেত্রী। আশা করা যায় যে তাঁকে আগামীতে আরো ভালো ছবিতে কাজ করতে দেখা যেতে পারে।

বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূর

Frequently Asked Questions :

শাবনূরের জন্ম কবে হয়?

১৯৭৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর। 

শাবনূরের চলচ্চিত্রে কবে অভিষেক ঘটে ?

চাঁদনী রাতে (১৯৯৩) চলচ্চিত্র দিয়ে।

শাবনূরের বিয়ে কবে হয়েছিল ?

২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর

শাবনূরের স্বামী কে ?

ব্যবসায়ী অনিক মাহমুদ।

Oindrila Banerjee

Oindrila Banerjee, a master's graduate in Modern History from Calcutta University, embodies a diverse range of passions. Her heart resonates with the rhythm of creative expression, finding solace in crafting poetic verses and singing melodies. Beyond her academic pursuits, Oindrila has contributed to the educational realm, serving as a teachers' coordinator in a kindergarten English medium school. Her commitment to nurturing young minds reflects her belief in the transformative power of education. Oindrila's guiding principle in life, encapsulated in the motto, "There are two ways of spreading light: to be the candle or the mirror that reflects it,"

Recent Posts