বলিউড – এক সময়ের রঙিন পর্দা, ক্যামেরার ঝলকানি, তুমুল জনপ্রিয়তা আর তারকাদের উজ্জ্বল উপস্থিতি। সেই জগতে পা রেখে অনেকেই স্বপ্ন দেখেন সুদিনের। তেমনই একজন ছিলেন অভিনেতা সাভি সিধু। ‘গুলাল’, ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’, ‘পাটিয়ালা হাউজ’ এর মতো সুপারহিট ছবিতে অভিনয় করে দর্শকদের নজর কেড়েছিলেন তিনি। যদিও প্রধান চরিত্রে তাঁকে দেখা না গেলেও পার্শ্বচরিত্রে তাঁর অভিনয় ছিল প্রশংসনীয়। কিন্তু আজ সেই অভিনেতা কর্মসূত্রে এক বহুতলের নিরাপত্তারক্ষী।
কেন এমন পরিণতি?

এক সময় পর্দায় তাঁর উপস্থিতি দর্শকদের মুগ্ধ করত। কিন্তু ধীরে ধীরে বলিউডের প্রান্তে ঠেলে দেওয়া হয় তাঁকে। জানা যায়, শারীরিক অসুস্থতার কারণে কিছুদিনের জন্য অভিনয় থেকে বিরতি নিতে বাধ্য হন সিধু। ভেবেছিলেন, শরীর সুস্থ হলে আবার ফিরবেন ক্যামেরার সামনে। কিন্তু সেই বিরতি তাঁর কেরিয়ার থেকে তাঁকে স্থায়ীভাবে দূরে সরিয়ে দেয়।
সুস্থ হওয়ার পর বহু চেষ্টা করেও বলিউডে আর জায়গা করে নিতে পারেননি তিনি। অনেক পরিচালকের দরজায় কড়া নেড়েছেন, বহুদিন অপেক্ষাও করেছেন। কিন্তু কাজের খোঁজে আশাহত হয়ে শেষমেশ পারেলের এক আবাসনে নিরাপত্তারক্ষীর চাকরি নিতে বাধ্য হন।
ছবি ভাইরাল, চোখে জল দর্শকদের
সম্প্রতি সাভি সিধুর নিরাপত্তারক্ষীর পোশাকে একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। সেই ছবি দেখে নেটিজেনদের একাংশ আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। বহু মানুষ প্রশ্ন তোলেন, কেন বলিউড এমন প্রতিভাধর একজন শিল্পীকে দূরে সরিয়ে দিল?
পাশে দাঁড়ালেন অনুরাগ কাশ্যপ ও রাজকুমার রাও

সাভি সিধুর জীবনকাহিনী ছড়িয়ে পড়তেই নজর পড়ে পরিচালকদের। বিশেষ করে অনুরাগ কাশ্যপ এবং অভিনেতা রাজকুমার রাও বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেন।
অনুরাগ কাশ্যপ, যাঁর পরিচালনায় সিধু প্রথম ছবি ‘পাঁচ’-এ অভিনয় করেন, জানান – “এমন অনেক প্রতিভাবান অভিনেতা রয়েছেন, যাঁরা কাজ না পেয়ে হারিয়ে যান। আমি সাভি সিধুকে সম্মান করি।”
অন্যদিকে, রাজকুমার রাও বলেন, “সিধুর ইতিবাচক মনোভাব আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি আমার কাস্টিং ডিরেক্টর বন্ধুদের বলব, যেন তাঁকে আবার সুযোগ দেওয়া হয়।”
সাভি সিধুর জীবনযাত্রা বলিউডের এক নির্মম বাস্তব চিত্র তুলে ধরে। প্রতিভা, পরিশ্রম, এবং অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও কাজ না পাওয়ার কষ্ট, অসুস্থতা, এবং একাকীত্ব – সবকিছুর সঙ্গে লড়াই করে আজও তিনি মাথা উঁচু করে বাঁচার চেষ্টা করছেন। তাঁর গল্প শুধু কষ্টের নয়, অনুপ্রেরণারও।