মাত্র ১৪ বছর বয়সেই আইপিএলে (IPL 2025) নজিরবিহীন সাফল্য ছিনিয়ে নিয়ে কোটিপতি হয়ে উঠেছেন বৈভব সূর্যবংশী (Vaibhav Suryavanshi)। বিহারের সমষ্টিপুর জেলার এই তরুণ ক্রিকেটার তৃতীয় ম্যাচেই ঝড়ো শতরান করে নজর কাড়েন গোটা দেশের। রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে মাত্র ৩৫ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম শতরানের মালিক হয়েছেন তিনি।
আইপিএল নিলামেই বাজিমাত
মাত্র ৩০ লাখ টাকা বেস প্রাইস নিয়ে আইপিএল নিলামে অংশ নেন বৈভব। দিল্লি ক্যাপিটালস এবং রাজস্থান রয়্যালস তাঁকে দলে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে। শেষ পর্যন্ত রাজস্থান ১.১০ কোটি টাকায় তাঁকে দলে নেয়, যার ফলে নিলামের দিনই তিনি কোটিপতি বনে যান।

সেঞ্চুরিতেই সাফল্যের শিখরে
গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে মাত্র তৃতীয় ম্যাচেই ৩৫ বলে দুর্দান্ত শতরান হাঁকান বৈভব সূর্যবংশী। তাঁর এই ইনিংস শুধুমাত্র দলকে জয় এনে দেয়নি, তাঁকে ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন সেনসেশন হিসেবেও প্রতিষ্ঠা দিয়েছে।
বাবার স্বপ্ন পূরণ করলেন বৈভব
বৈভবের বাবা সঞ্জীব সূর্যবংশী নিজে একসময় ক্রিকেটার হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু নানা কারণে সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তবে ছেলেকে ক্রিকেটার বানানোর জন্য নিজের জমি বিক্রি করতেও পিছপা হননি তিনি। বৈভব জানান, শতরান করার পর প্রথমেই তিনি বাবাকে ফোন করে প্রণাম করেন।
কম বয়সেই রঞ্জি খেলার অভিজ্ঞতা
মাত্র ১২ বছর বয়সেই বিহারের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে ভিনু মানকড় ট্রফিতে অংশ নেন বৈভব এবং পরে রঞ্জি ট্রফিতেও সুযোগ পান। পাটনায় প্রতিদিন ৬০০টি বল খেলে প্রস্তুতি নিতেন তিনি, নেটে খেলতেন ১৬-১৭ বছর বয়সী বোলারদের বিরুদ্ধে।
রাজনীতিকদের শুভেচ্ছা ও পুরস্কার

বৈভবের এই সাফল্যে আনন্দ প্রকাশ করেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তিনি বৈভবকে ১০ লাখ টাকার পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছেন।
বিজ্ঞাপন ও ব্র্যান্ড অফারে ভরা ভবিষ্যৎ
আইপিএলে বৈভবের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর বহু বড় কোম্পানি তাঁকে বিজ্ঞাপনের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছে। একাধিক ব্র্যান্ড এনডোর্সমেন্টের সুযোগ পাওয়ায় তাঁর আয়ের পরিমাণ কয়েক কোটি টাকায় পৌঁছেছে বলে অনুমান।
বৈভবের শতরানের পর তাঁর গ্রামের মানুষজন উৎসবের পরিবেশে মেতে উঠেছেন। আনন্দে আত্মহারা পরিবার ও প্রতিবেশীরা বৈভবকে ‘গর্ব’ বলে সম্মান জানাচ্ছেন।
বৈভব সূর্যবংশীর গল্প শুধুমাত্র একটি ক্রিকেটার হওয়ার নয়, বরং তা একটি স্বপ্নের বাস্তব রূপ পাওয়ার গল্প। কম বয়সেই যে ধৈর্য, পরিশ্রম ও প্রতিভার মাধ্যমে তিনি নিজের জায়গা তৈরি করেছেন, তা ভবিষ্যতের তরুণদের জন্য নিঃসন্দেহে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।