কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর দেশজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সেই আবহে সাহসী এবং সংবেদনশীল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সঙ্গীতশিল্পী শ্রেয়া ঘোষাল। অরিজিত সিংহের দেখানো পথে হাঁটলেন তিনিও। গান থাকবে, সুর থাকবে, কিন্তু সব সময় গান গাওয়া বা শোনার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয় না—এই ভাবনা থেকেই শ্রেয়া তাঁর নির্ধারিত অনুষ্ঠান বাতিলের ঘোষণা করেছেন।

২২ এপ্রিল শান্ত কাশ্মীরে ফের মাথাচাড়া দেয় সন্ত্রাসবাদ। নিরীহ পর্যটকদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালায় জঙ্গিরা। গোটা দেশ উত্তাল হয়ে ওঠে। সমাজমাধ্যমে নানা খ্যাতনামীরা তাঁদের ক্ষোভ উগরে দেন। শ্রেয়া ঘোষালও ব্যথিত হৃদয়ে জানান, এই নারকীয় ঘটনার পরে তাঁর কণ্ঠরোধ হয়েছে। তিনি নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং স্বজনহারাদের প্রতি গভীর সহানুভূতি জানান।
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় শ্রেয়া ঘোষাল ২৬ এপ্রিল সুরাতে নির্ধারিত গানের অনুষ্ঠান বাতিল করেন। তিনি শুধু অনুষ্ঠান বাতিল করেই ক্ষান্ত হননি, বরং দর্শক-শ্রোতাদের টিকিটের মূল্য ফেরতের ব্যবস্থাও নিশ্চিত করেছেন। সমাজমাধ্যমে এক বার্তায় শ্রেয়া লেখেন, ‘‘অনুষ্ঠান করার মতো পরিস্থিতি আরও অনেক আসবে। কিন্তু এখন নীরবতা পালনই শ্রেয়।’’
এর আগে অরিজিত সিংহও ঠিক একই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। চেন্নাইয়ে ২৭ এপ্রিলের অনুষ্ঠানের আয়োজন বাতিল করে তিনিও টিকিটের মূল্য ফেরতের আশ্বাস দেন।

শ্রেয়া ঘোষাল কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের বিখ্যাত কবিতা ‘প্রিয় ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য’-এর পঙ্ক্তি সামান্য পরিবর্তন করে বলেন, ‘‘গান শোনাবার দিন নয় অদ্য।’’ এই সংবেদনশীলতায় মুগ্ধ হয়েছেন শ্রোতারা। সমাজমাধ্যমে অনুরাগীদের শুভেচ্ছায় ভরে উঠেছে দুই শিল্পীর মন্তব্যবাক্স।
অনুরাগীদের দাবি, প্রকৃত শিল্পী তিনিই, যিনি সমাজের ব্যথা অনুভব করেন, শোকের মুহূর্তে সঠিক বার্তা দেন। তাঁদের মতে, অরিজিত এবং শ্রেয়ার এই মানবিক পদক্ষেপ তাঁদের প্রতি আরও শ্রদ্ধা বাড়িয়ে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর বলিউডেরও একাধিক প্রচারধর্মী অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে, প্রতিবাদ জানাতে।