টলিউডের প্রথম সারির অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য। বড় পর্দা থেকে মঞ্চ, সর্বত্রই তাঁর অনবদ্য উপস্থিতি প্রশংসিত। কিছুদিন আগেই ঘোষণা হয়েছিল দেব অভিনীত ‘রঘু ডাকাত’ ছবিতে দেখা যাবে অনির্বাণকে। কিন্তু আচমকাই সেই ছবির ভবিষ্যৎ পড়ল প্রশ্নচিহ্নের মুখে। কারণ, টেকনিশিয়ানদের তরফে অভিনেতাকে বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
কী ঘটেছে হঠাৎ করে?

সূত্র অনুযায়ী, এসভিএফ প্রযোজিত অনির্বাণের ব্যান্ড ‘হুলিগানিজম’-এর নতুন মিউজিক ভিডিওর শ্যুটিং হওয়ার কথা ছিল ১৪ মে। কিন্তু তার ঠিক আগের দিন, অর্থাৎ ১৩ মে প্রযোজনা সংস্থাকে জানিয়ে দেওয়া হয়, টেকনিশিয়ানরা অনির্বাণের সঙ্গে আর কোনও কাজ করতে চান না। ফলে বাতিল হয়ে যায় ওই ভিডিওর শ্যুটিং।
কারণ কী?
এই ঘটনার পেছনে রয়েছে দীর্ঘদিনের জটিলতা। কিছুদিন আগে একাধিক পরিচালক ফেডারেশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন কয়েকজন পরিচালক। অনির্বাণ ভট্টাচার্যও তাঁদের মধ্যে অন্যতম। জানা গিয়েছে, শুধু পরিচালক হিসেবে নয়, অভিনেতা অনির্বাণের সঙ্গেও আর কাজ করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন টেকনিশিয়ানরা।
ব্যান্ড ‘হুলিগানিজম’-এর প্রভাব :
‘হুলিগানিজম’ ব্যান্ডের হয়ে ইতিমধ্যেই ‘মেলার গান’ শিরোনামে একটি মিউজিক ভিডিও মুক্তি পেয়েছে, যেখানে গায়ক ও অভিনেতা—দুই ভূমিকাতেই দেখা গিয়েছিল অনির্বাণকে। পরবর্তী ভিডিওর পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন অভিনেতা ঋদ্ধি সেন। কিন্তু সেখানেও টেকনিশিয়ানদের প্রতিবাদের মুখে পড়তে হয় এই প্রজেক্টকে।
প্রসঙ্গত, এই ব্যান্ডের প্রোডাকশন ডিজাইনার শুভার্থী বিশ্বাসের সঙ্গেও কাজ করতে অস্বীকার করেছেন টেকনিশিয়ানদের একটি বড় অংশ। এর আগেই দ্য ওয়াল-এর একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই তথ্য।
টলিউডে বাড়ছে বিভাজন?

এই ঘটনায় টলিউডে একপ্রকার বিভাজন তৈরি হয়েছে বলেই মনে করছেন ইন্ডাস্ট্রির অনেকে। অভিনেতা, পরিচালক ও টেকনিশিয়ানদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান মতবিরোধ ইন্ডাস্ট্রির সুস্থ কাজের পরিবেশকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।
অনির্বাণ বা তাঁর প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে টেকনিশিয়ানদের এই অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে, পরিস্থিতি সহজে মিটবে না।
একজন প্রতিভাবান শিল্পীকে ঘিরে এই ধরণের বিতর্ক নিঃসন্দেহে টলিউডের জন্য অস্বস্তির। শিল্পী এবং কলাকুশলীদের মধ্যে সংলাপ এবং সমঝোতা না হলে এই দ্বন্দ্ব ভবিষ্যতে আরও বড় সংকট ডেকে আনতে পারে। এখন দেখার, এই জটিল পরিস্থিতির সুরাহা কীভাবে হয়, এবং ‘রঘু ডাকাত’-এর মতো বহু প্রতীক্ষিত প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কী হয়ে দাঁড়ায়।