কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ জঙ্গি হামলার রেশ এখনও কাটেনি। দেশজুড়ে শোক আর আতঙ্কের আবহ চলছে। বেড়াতে গিয়ে সাধারণ পর্যটকদের উপর এই নৃশংস হামলার পর মানুষ যেমন স্তব্ধ, তেমনই বলিউড তারকা সলমন খানও ঘটনার প্রভাব থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারলেন না।
সলমন, যিনি ইতিমধ্যেই লরেন্স বিশ্নোই গ্যাং-এর হুমকির জেরে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন, এবার পহেলগাঁও হামলার পর নিজের একটি বড় আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।
অনুষ্ঠান স্থগিত, কারণ ‘এখন আনন্দ করার সময় নয়’

ইংল্যান্ডে ৪ ও ৫ মে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ‘দ্য বলিউড বিগ ওয়ান শো’, যেখানে সলমন খানের উপস্থিতির জন্য ভক্তদের মধ্যে চরম উন্মাদনা ছিল। কিন্তু সলমন নিজেই জানালেন—এখন এই রকম একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা অনুচিত।
সোমবার সামাজিক মাধ্যমে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে তিনি লেখেন, “কাশ্মীরের দুঃখজনক ঘটনার জেরে আমরা সকলেই গভীরভাবে মর্মাহত। দেশের এই শোকের সময়ে আমরা আনন্দের অনুষ্ঠান করতে পারি না। তাই এই অনুষ্ঠান পিছিয়ে দেওয়ার কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা জানি অনেক অনুরাগী এই শো দেখার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তাঁদের যদি এই সিদ্ধান্তে কোনও অসুবিধা হয়ে থাকে, আমরা আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইছি।”
বিশ্নোই হুমকির মধ্যেই চলছিল কাজ
উল্লেখযোগ্যভাবে, গত কিছু মাস ধরে সলমন খানের উপর লরেন্স বিশ্নোই গ্যাংয়ের প্রাণনাশের হুমকি রয়েছে। শুধু অভিনেতা নন, তাঁর পরিবারের সদস্যরাও এই হুমকির আওতায় রয়েছেন বলে জানা যায়, ফলে তাঁর বাড়ির নিরাপত্তা তীব্রভাবে বাড়ানো হয়েছে, এমনকি জানলার কাচ পর্যন্ত বদলে ফেলা হয়েছে।

তবুও এত ভয়-আতঙ্কের মধ্যেও তিনি কাজ বন্ধ করেননি। ‘সিকন্দর’ ছবির শুটিং চালিয়ে যাচ্ছিলেন নির্ধারিত সূচি মেনে। কিন্তু পহেলগাঁও হামলার ভয়াবহতায় অবশেষে তিনি বিরতি নিতে বাধ্য হলেন।
জাতির পাশে তারকার অবস্থান
সলমন খানের এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই সম্মান জানিয়েছেন। সাধারণ মানুষ থেকে অনুরাগী মহল মনে করছে, এক জন তারকা হিসেবে এই সংকটময় সময়ে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তিনি দায়িত্ববান নাগরিকের পরিচয় দিয়েছেন।
পহেলগাঁও হামলার অভিঘাত গোটা দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। সলমন খানের মতো তারকা যেখানে আনন্দ-উৎসব থেকে বিরত থাকছেন, তা নিঃসন্দেহে বার্তা দেয়—এই মুহূর্তে একমাত্র অগ্রাধিকার হওয়া উচিত জাতীয় নিরাপত্তা ও সংহতি।