যোগাসনের এখন আর ভারতে সীমাবদ্ধতা নেই। বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ যোগাসনের মাধ্যমে সুস্থ জীবনযাপন করছেন। কিন্তু কিছু মানুষ আছে যারা যোগাভ্যাস শুরু করতে চান, কিন্তু কঠিন আসনের নির্ধারণে ভুল করে। তবে আপনি জানলে অবাক হবেন যে, যোগাভ্যাস করার জন্য কঠিন বা জটিল আসন দরকার নেই। কিছু সহজ আসনে সহজেই মুশকিল আসান হতে পারে। তাই শিশুরা বা যারা প্রথমবার যোগাভ্যাস করতে চাইছেন, তারা এই যাত্রা শুরু করতে পারেন কিছু সহজ আসনের মাধ্যমে।
১. তাডাসন

দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যে আসন করা হয় সেটি তাডাসন নামে পরিচিত। এই আসন দেখতে সহজ মনে হলেও, শরীরের সঠিক ভঙ্গি বা ‘পশ্চার’ ঠিক করতে এটি খুব সহায়ক।
কীভাবে করবেন?
এই আসন করার কোন প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দুই পা সামান্য ফাঁক করে রাখুন। এবার স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে নিতে হাত দুটি কাঁধ বরাবর তুলে মাথার উপর নমস্কারের ভঙ্গিতে নিয়ে যান। তারপর পায়ের গোড়ালিতে ভর দিন এবং শরীরকে উপরের দিকে টানটান করে রাখুন। তখন মনে হবে যেন, আপনার শরীর একটি পর্বতের মতো স্থির ও দৃঢ় হয়ে আছে। এই অবস্থায় ২০-৩০ সেকেন্ড স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে থাকুন। তারপর আগের অবস্থায় ফিরে আসুন।
উপকারিতা: এই আসনটি মেরুদণ্ডকে সোজা রাখতে সহায়তা করে। এই আসন পায়ের পেশি শক্তিশালী করতে সাহায্য এবং শরীরে ভারসাম্য ও স্থিরতা আনে।
২. ভুজঙ্গাসন

এই আসন অফিস কর্মচারীদের জন্য খুব উপকারী। যেসব ব্যক্তি দীর্ঘক্ষণ ধরে এক নাগাড়ে বসে কাজ করেন, তাদের মেরুদণ্ড এবং পেটের জন্য ভুজঙ্গাসন খুবই উপকারী।
কীভাবে করবেন?
এটি করার জন্য, প্রথমে পেটের উপর ভর দিয়ে শুয়ে পড়ুন। তারপর হাতের তালু কাঁধের নীচে রেখে শ্বাস নিতে নিতে বুক ও মাথা উপরের দিকে তুলুন, যেন একটি সাপ ফণা তুলেছে। পা দুটি সোজা এবং মাটিয়ে লেগে থাকবে। কিছুক্ষন এই অবস্থায় থেকে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে আগের অবস্থায় ফিরে আসুন।
উপকারিতা: এই আসনটি আমাদের শিরদাঁড়াকে নমনীয় রাখতে সহায়তা করে, পিঠের ব্যথা কমাতে সহায়ক, ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
৩. শবাসন

এই আসনটি করার সময় মৃতের মতো স্থির ভাবে শুয়ে থাকতে হয়। শরীরকে সম্পূর্ণভাবে শিথিল করে এবং নিরুদ্বেগ মন নিয়ে চুপচাপ শুয়ে থাকার ভঙ্গিমার নামই হল “শবাসন”।
কীভাবে করবেন?
শবাসন করতে গেলে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন। তবে শুয়ে দুই পায়ের মাঝে এক থেকে দেড় ফুট দূরত্ব রাখতে হবে। পাশাপাশি হাত দু’টিকে দেহ থেকে সামান্য দূরে রাখতে হবে। এরপর চোখ বন্ধ করে নিতে শরীরকে সম্পূর্ণ শিথিল করে দিন। এরপর নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসের উপর মনোযোগ দিন। ৫ থেকে ১০ মিনিট এই অবস্থায় থাকতে হবে।
শবাসনের উপকারিতা: এই আসন উচ্চ রক্তচাপ, উদ্বেগ এবং অনিদ্রা কমানোর ক্ষেত্রে কার্যকরী। পাশাপাশি এই আসনটি মস্তিষ্ককে শান্ত করে দেয় এবং শরীরে শক্তি জোগায়।