বাজারে গরম পড়তেই তরতরিয়ে চাহিদা বেড়েছে তরমুজের। রসালো, ঠান্ডা, মিষ্টি—তরমুজ যেন গ্রীষ্মের শ্রেষ্ঠ উপহার। কিন্তু থামুন! আপনি যে তরমুজ খাচ্ছেন, সেটি কি সত্যি লাল? নাকি লুকিয়ে আছে কৃত্রিম রঙের মারাত্মক ফাঁদ?
সম্প্রতি এক গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য—তরমুজে ব্যবহার করা হচ্ছে কৃত্রিম রং ‘রেড-৪০’, যা মানবদেহের জন্য ভয়ংকর রকমের ক্ষতিকর। এমনকি এই রঙে ভেজাল তরমুজ খেলে হতে পারে পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, বমি, ক্ষুধা হ্রাস, এমনকি কিডনি ও লিভার সমস্যাও!
তরমুজ কিনছেন? সাবধান!

বাজারে এমন অনেক তরমুজ দেখা যায়, যা কাটলেই চোখ ধাঁধানো লাল। কিন্তু তা কি প্রাকৃতিক? বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই না। ভেতরে সিরিঞ্জ ঢুকিয়ে ঢোকানো হচ্ছে রাসায়নিক রং, যা তরমুজকে করে তোলে লালচে, কিন্তু স্বাদে ফিকে!
তবে সুখবর! এবার আর ঠকে যাওয়ার ভয় নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের দুই ছাত্র—তানহাউল ইসলাম ও আহসান হাবীব খন্দকার—উদ্ভাবন করেছেন এক দারুণ ঘরোয়া পদ্ধতি, যাতে মাত্র ৫ মিনিটেই বুঝে যাবেন তরমুজে কৃত্রিম রং আছে কি না!
জেনে নিন সেই সহজ ঘরোয়া টেস্ট:
- বাজার থেকে আনা তরমুজের ছোট একটা ফালি কেটে নিন।
- রস বের করে নিন (জুস করে)।
- এই রস ঢালুন একটি স্বচ্ছ গ্লাস বা টিউবে।
- সমপরিমাণ নারকেল তেল মেশান।
- এক মিনিট ভালো করে ঝাঁকিয়ে রেখে দিন।
- ৫ মিনিট পর ফলাফল দেখুন!
ফলাফল ব্যাখ্যা:
নিচের স্তর যদি স্বচ্ছ ও পানির মতো থাকে — আপনি নিরাপদ! তরমুজে কৃত্রিম রং নেই।
নিচের স্তরের রঙ যদি লাল বা গোলাপি হয়ে যায় — সাবধান! এই তরমুজে কৃত্রিম রং মেশানো হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক নীলুফার নাহার জানিয়েছেন, তরমুজের প্রাকৃতিক রঙ লাইকোপিন তেলের সঙ্গে মিশে ওপরে ভেসে ওঠে। কিন্তু কৃত্রিম রঙ অজৈব হওয়ায় তা পানির স্তরে থেকে যায়।
এই গবেষণাই প্রথম!
২০১৬ সালেই শুরু হয় এই গবেষণা, যা এ বছর নতুন উদ্যমে আবার চালু হয়েছে। বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্যের জন্য এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
আপনার পরিবারের জন্য এখনই করুন এই টেস্ট!
এক গ্লাস, একটু তরমুজের রস আর নারকেল তেল—ব্যস! তাতেই আপনি জানতে পারবেন আপনি এবং আপনার প্রিয়জনেরা নিরাপদ কিনা।
তরমুজ খাওয়ার আগে সতর্ক হোন, স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়ান। আর যদি এই তথ্য উপকারী মনে হয়, শেয়ার করুন আপনার বন্ধুদের সঙ্গেও—সতর্ক থাকুক সবাই!