প্রতি বছর মিশরের রাজধানী কায়রোর সংগ্রহশালায় তুতানখামেনের সমাধি দেখতে লক্ষ লক্ষ পর্যটক পাড়ি দেন। ১৯২২ সালে বৃটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক হাওয়ার্ড কার্টারের আবিষ্কৃত বালক রাজা (ফারাও) তুতানখামেন আজও দর্শকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে। কিন্তু ১০৩ বছর পর মিশরে এক নতুন ফারাওয়ের সমাধি আবিষ্কৃত হওয়ার পর, সেই প্রাচীন ইতিহাসের নতুন অধ্যায় কি তুতানখামেনের দর্শক আকর্ষণকে চ্যালেঞ্জ জানাবে?
সম্প্রতি এক বিস্ময়কর আবিষ্কার ঘটেছে। বৃটিশ-মিশরীয় প্রত্নতাত্ত্বিকদের একটি দল ফারাও দ্বিতীয় থুটমোসের সমাধি খুঁজে পেয়েছেন। এই আবিষ্কারটি মিশরের প্রাচীন ইতিহাসে এক নতুন চমক। দ্বিতীয় থুটমোস ছিলেন মিশরের অষ্টাদশ রাজবংশের একমাত্র ফারাও যাঁর সমাধি এতদিন অজানা ছিল। ১৪৯৩-১৪৭৯ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে তিনি মিশরে রাজত্ব করেছিলেন এবং তুতানখামেনের পূর্বসূরি ছিলেন।
এটি মিশরের লুক্সর শহরের অদূরে থিবান নেক্রোপলিসের পশ্চিম উপত্যকায় পাওয়া গেছে। এখানে পুরাতত্ত্ববিদরা একাধিক মহামূল্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনও উদ্ধার করেছেন, যা ফারাও দ্বিতীয় থুটমোসের রাজত্বের প্রমাণ বহন করে। এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার হচ্ছে সমাধির অক্ষত ছাদ, যা প্রাচীন মিশরের শাসক ফারাওদের সমাধির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হিসেবে পরিচিত। এই ছাদে নীল রঙের উপর হলুদ রং দিয়ে খোদাই করা নানা চিত্র পাওয়া গেছে, যা কেবলমাত্র শাসক ফারাওদের সমাধিতেই দেখা যায়।
এর আগেই, ২০২২ সালে, দ্বিতীয় থুটমোসের সৎ বোন তথা স্ত্রী হাটসেপসুটের সমাধি আবিষ্কৃত হয়েছিল। হাটসেপসুটের সমাধি থেকে খুব দূরেই পাওয়া গেছে এই সমাধিটি, যা প্রমাণ করে যে এই অঞ্চলে আরও অনেক অজানা ইতিহাস লুকিয়ে রয়েছে।
ফারাও দ্বিতীয় থুটমোসের সমাধি আবিষ্কারের ফলে মিশরের প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা নতুন এক দিগন্তের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি ইতিহাসের এক অমূল্য ধন, যা আগামী দিনে আরও অনেক ইতিহাসপ্রেমীকে মিশরের প্রাচীন সভ্যতার দিকে আকৃষ্ট করবে।