বাংলাদেশের প্রধান তথা কেন্দ্রীয় ব্যাংক হল বাংলাদেশ ব্যাংক। এটি দেশের আর্থিক কর্তৃপক্ষ। দেশের মুদ্রানীতি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নিরূপিত ও পরিচালিত হয়। এটি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল সংরক্ষণ করে থাকে। এর কার্যনির্বাহী প্রধান গভর্নর হিসাবে আখ্যায়িত। বাংলাদেশ ব্যাংক সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করবো আজকের এই প্রতিবেদনে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সৃষ্টির ইতিহাস, History of creation of Bangladesh Bank
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে জয় লাভ করার পর বাংলাদেশ সরকার ঢাকায় অবস্থিত স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের ঢাকা শাখাকে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসাবে প্রতিষ্ঠা করে এবং নতুন নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ ব্যাংক হিসেবে। ‘বাংলাদেশ ব্যাংক আদেশ, ১৯৭২’ পাশ হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির মুদ্রা, Bangabandhu portrait coin
আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর মুদ্রায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ব্যবহার করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা চৌধুরী মহিদুল হক তখন কারেন্সি বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত নির্বাহী পরিচালক হিসেবে বঙ্গবন্ধু সিরিজের নোট প্রকাশ করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। একজন ডেপুটি গভর্নরের নেতৃত্বে মুদ্রার ডিজাইন অ্যাডভাইজারি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিতে ছিলেন দেশের বেশ কিছু প্রখ্যাত আর্টিস্টরা। শেষে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি নিয়ে নোটের ডিজাইন চূড়ান্ত করা হয়। বর্তমানে বাজারে ১ টাকা, ২ টাকা, ৫ টাকা, ১০ টাকা, ২০ টাকা, ৫০ টাকা, ১০০ টাকা, ২০০ টাকা, ৫০০ টাকা ও ১০০০ টাকার নোট প্রচলিত আছে যেগুলোতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি রয়েছে।
স্মারক মুদ্রা, Commemorative coins
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, স্থান ও ঘটনাগুলোকে স্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময়ে স্মারকমুদ্রা, নোট এবং দেশীয় ও বিদেশীয়ভাবে মুদ্রণ করা হয়। এই স্মারকমুদ্রা ও নোটগুলো বিনিময়যোগ্য নয়।
এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ১৭টি স্মারকমুদ্রা ইস্যু করা হয়েছে। ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী উপলক্ষে স্মারক কয়েন বের করা হয়, যার অভিহিত মূল্য ছিল ১০ টাকা এবং বিক্রয় মূল্য ছিল ৩ হাজার ৩০০ টাকা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২০১১ সালে ৪০ টাকার স্মারক নোট প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই নোটের সামনের অংশে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতি এবং অপর অংশে ছয়জন বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতি দেওয়া হয়েছিল।
ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ, Board of Directors of the Bank
৯ জন ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত একটি পরিচালনা পর্ষদের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও দিকনির্দেশনা অর্পিত থাকে। পরিচালনা পর্ষদে একজন গভর্নর, একজন ডেপুটি গভর্নর, তিন জন উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এবং চার জন এমন ব্যক্তি নিযুক্ত আছেন যারা ব্যাংকিং, বাণিজ্য, ব্যবসায়, শিল্প ও কৃষি খাতে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছেন। পর্ষদের সভাপতি হলেন গভর্নর নিজেই। পরিচালনা পর্ষদের সবাই সরকার কর্তৃক নির্বাচিত হন। প্রতি ছয় মাসে পরিচালনা পর্ষদের সভা কমপক্ষে একবার অথবা প্রতি তিন মাস অন্তর একবার হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা কার্যালয়সমূহ, Branch offices of Bangladesh Bank
বাংলাদেশ ব্যাংক এর প্রধান কার্যালয়সহ আরও দশটি শাখা কার্যালয় রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়ে থাকে। ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় অবস্থিত রাজধানী ঢাকার মতিঝিলে। শাখা কার্যালয়সমূহগুলি হল :
- মতিঝিল
- সদরঘাট
- বগুড়া
- চট্টগ্রাম
- রাজশাহী
- বরিশাল
- খুলনা
- সিলেট
- রংপুর
- ময়মনসিংহ
এই শাখা কার্যালয়গুলো ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে, যা বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমি নামে পরিচিত। এটি ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিসমূহ, Policies of Bangladesh Bank
দেশের আর্থিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে থাকে। নীতিসমূহের মধ্যে অন্যতম হল :
মুদ্রানীতি
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রানীতি পরিচালনা করে, এই মুদ্রানীতি দেশের অর্থনীতিতে অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত ও নিয়ন্ত্রণ করে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রণীত মুদ্রানীতির প্রধান লক্ষ্যগুলো হল :
- মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা;
- বিনিময় হার স্থিতিশীলতা;
- যুক্তিসঙ্গত মূল্য স্থিতিশীলতা;
- অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তরান্বিত করা;
- ব্যবসায় চক্র স্থিতিশীল রাখা;
- সুদের হার নিয়ন্ত্রণ এবং
- বেকারত্ব হ্রাস করা।
রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা নীতি
বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ সংরক্ষণ করে থাকে, এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারে ব্যাপক ওঠানামা থেকে উদ্ভূত ঝুঁকি এবং বৈশ্বিক অর্থ বাজারে সুদের হারের ওঠা-নামায় সৃষ্ট ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব হয়। রিজার্ভ ব্যবস্থাপনার অন্তর্নিহিত নীতি হচ্ছে ন্যূনতম বাজার ঝুঁকির সাথে বিনিয়োগের সর্বোত্তম রিটার্ন নিশ্চিত করা।
সুদ হার নীতি
বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক খাত সংস্কার কর্মসূচির আওতায় নমনীয় সুদ হার নীতিমালা প্রণয়ন করে থাকে। সেই অনুসারে, ব্যাংকগুলি প্রত্যয়পত্র ব্যতীত যাবতীয় আমানত ও ঋণের সুদ হার নির্ধারণ করে থাকে। সময় সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় ব্যাংকের সুদের হারের সীমা বেঁধে দেয়।
ব্যাংক ও ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মূলধন পর্যাপ্ততা নীতি
অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশ ব্যাংকও ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্যাংকিং তদারকি সম্পর্কিত ব্যাসেল কমিটি প্রণীত ব্যাসেল-৩ প্রবিধান চালু করেছে। তফসিলি ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমুহের আর্থিক অবস্থা ও আনুষাঙ্গিক ঝুঁকি বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংক ন্যুনতম মূলধন, নগদ রিজার্ভ ও বিধিবদ্ধ তারল্য সংরক্ষণের হার পরিবর্তন করে থাকে।
আমানত বীমা
বাংলাদেশ ব্যাংক আমানতকারীদের সুরক্ষা হিসেবে ১৯৮৪ সালে আমানত বীমা চালু করেছিল। আমানত বীমার অধীনে যেসব ব্যাংকসমূহ আছে সেখানে গচ্ছিত আমানতের একটা নির্দিষ্ট অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জমা রাখতে হয়। কখনো কোন ব্যাংক যদি দেউলিয়া হয়ে যায় তবে উক্ত বীমার অধীনে যে অর্থ জমাকৃত ছিল তার থেকে নির্দিষ্ট হারে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন কার্যাবলী,Various functions of Bangladesh Bank
বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের আর্থিক কর্তৃপক্ষ। সেই হিসাবে দেশের ব্যাংক এবং ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসমূহের নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে এটি। বাংলাদেশ ব্যাংক আদেশ, ১৯৭২-এর ৭(A) ধারা অনুসারে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যাবলীসমূহ হল :
- মুদ্রানীতি ও ঋণনীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন;
- ব্যাংক ও ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ এবং দেশীয় আর্থিক বাজারের প্রসার ও উন্নয়ন;
- দেশের বৈদেশিক রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা;
- মুদ্রা (ধাতব ও কাগুজে মুদ্রা) ইস্যু করা;
- পরিশোধ ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান;
- টাকা পাচার (মানি লন্ডারিং) প্রতিরোধ;
- ঋণের তথ্য সংগ্রহ করা;
- বৈদেশিক বিনিময় নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন করা;
- আমানত বীমা প্রকল্প পরিচালনা।
বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার, Bangladesh Bank Award
বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার চালু হয় ২০০০ সালে। দেশের অর্থনীতি নিয়ে গবেষণা এবং অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ ব্যাংক এর পক্ষ থেকে পুরস্কার প্রদান করা হয় থাকে। এরজন্য ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বে দেশের কয়েকজন প্রসিদ্ধ অর্থনীতিবিদের সমন্বয়ে একটি বোর্ড গঠিত হয়, যা পুরস্কারের মনোনয়ন চূড়ান্ত করে থাকে। পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম হলঃ
- রেহমান সোবহান (২০০০)
- নুরুল ইসলাম (২০০৯)
- মোশাররফ হোসেন (২০১১)
- মোজাফফর আহমদ এবং স্বদেশ রঞ্জন বসু (২০১৩)
- আজিজুর রহমান খান এবং মাহবুব হোসেন (২০১৭)
- আজিজুর রহমান খান ও মাহবুব হোসেন (২০১৮)
- ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ (২০২০)
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন প্রকাশনাসমূহ, Various publications of Bangladesh Bank
বাংলাদেশ ব্যাংক সময়ভিত্তিক বিভিন্ন প্রকাশনা, অর্থনৈতিক পর্যালোচনা, গবেষণাপত্র, আর্থিক ও ব্যাংকিং সম্পর্কিত উন্নয়ন প্রতিবেদন এবং পরিসংখ্যান ইত্যাদি প্রকাশ করে থাকে। এসবের মধ্যে অন্যতম হল :
- বার্ষিক প্রতিবেদন।
- বাংলাদেশ ব্যাংক ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন।
- আর্থিক নীতি পর্যালোচনা প্রতিবেদন।
- বিবিটিএ জার্নাল: ব্যাংকিং এবং অর্থায়ন সম্পর্কিত চিন্তাভাবনা।
- গ্রিন ব্যাংকিং সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদন।
- আমদানি রপ্তানি প্রতিবেদন।
- আর্থিক স্থিতিশীলতা মূল্যায়ন প্রতিবেদন।
বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ে সমালোচনা, Criticism of Bangladesh Bank
রিজার্ভ ব্যাংক এ চুরি
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি, ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশে ব্যাংকের রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে একদল হ্যাকার ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার বা ৮১০ কোটি টাকা চুরি করে। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয় যে, রিজার্ভ চুরির সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভিতরের কেউ-কেউ জড়িত থাকতে পারে।
যদিও এই অভিযোগ বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবরই নাকচ করে এসেছে। চুরি যাওয়া অর্থ ফেরত ও দোষীদের খুঁজে বের করতে সরকার একটি কমিটি গঠন করে। এই কমিটি এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেয় যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের অদক্ষতা ও অবহেলাকেই মূলত দায়ী করা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে চুরি যাওয়া অর্থের প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার উদ্ধার করতে সমর্থ হয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
স্বর্ণ সংরক্ষণ বিতর্ক
২০১৮ সালের জুলাইতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত ৯৬৩ কেজি সোনা পরীক্ষা করে অনিয়ম পাওয়া গিয়েছে- বলে দাবী করা হয়। ৯৬৩ কেজি সংক্রান্ত সোনা সংক্রান্ত যে চিঠি শুল্ক বিভাগ দিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক তার প্রতিউত্তরে আণবিক শক্তি কমিশন দ্বারা এই স্বর্ণ পুনরায় মাপার আহ্বান করে। ব্যাংক নির্বাহী পরিচালকের মতে, যে মানদন্ড শুল্ক বিভাগ ব্যবহার করেছে, তা তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। শুল্ক বিভাগ বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগের পক্ষে কোন অকাট্য প্রমাণ দেখাতে পারেনি।
শেষ কথা, Conclusion
১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ের দিক থেকে বহু মানুষের সেবা প্রদান করে আসছে। ব্যাংকের বিভিন্ন নীতি তথা সুবিধা প্রদান করার মধ্য দিয়ে দেশের জনগণকে উপকৃত করেছেন।
Frequently Asked Questions
১৯৭১ সালে।
২০০০ সালে।
রাজধানী ঢাকার মতিঝিলে।