বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ সংক্ষেপে বেফাক হিসেবেও পরিচিত। বেফাক শব্দের অর্থ হচ্ছে পারস্পরিক ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করা। এটি হলো বাংলাদেশের কওমি মাদরাসাসমূহের সবচেয়ে বৃহত্তম বোর্ড। বেফাক বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড নামেও পরিচিত। তবে এটি ছাড়াও বাংলাদেশের কওমি মাদরাসা সমূহের ৫টি শিক্ষা বোর্ড রয়েছে। আজকের এই প্রতিবেদনে বেফাক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করবো।
#বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ রেজাল্ট
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া অর্থ কি?
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ ( স.: বেফাক ) হলো বাংলাদেশের কওমি মাদরাসাসমূহের সবচেয়ে বৃহত্তম বোর্ড, যা বাংলাদেশ কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড নামেও পরিচিত।
![বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া অর্থ কি?](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%81%E0%A6%B2-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%B2-%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE-%E0%A6%85%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A5-1.png)
বেফাকের উদ্দেশ্য, Objectives of BEFAK
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ডের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে– বাংলাদেশের কাওমি মাদ্রাসা সমূহের পাঠ্যসূচি প্রণয়ন উন্নয়ন এবং সনদ প্রদান সহ ইত্যাদি কাজ সম্পাদন। এই বোর্ডের ধরন বেসরকারি। একটি রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে এই কাওমি মাদ্রাসার অধীনে রয়েছে ২০ হাজারেরও বেশি মাদ্রাসা।
![বেফাকের উদ্দেশ্য](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%95-objective-1.png)
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ কত সনে প্রতিষ্ঠিত হয়?
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া পাকিস্তান ( উর্দু: وفاق المدارس العربیہ) বোর্ড ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি বিশ্বের বৃহত্তম ইসলামী শিক্ষা বোর্ড।
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সভাপতি কে? Who is the President of BEFAK?
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সভাপতি মাহমুদুল হাসান যিনি ১৯৫০ সালের ৫ই জুলাই ময়মনসিংহ জেলার কেতয়ালি থানার অন্তর্ভুক্ত চরখরিচাতে জন্মগ্রহণ করেন সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। যার পিতার নাম গালিমুদ্দিন আহমদ এবং মাতা ফাতেমা রমজানী।
তিনি একাধারে একজন বাংলাদেশী দেওবন্দী ইসলামী পন্ডিত, শিক্ষাবিদ লেখক ও আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ। শিক্ষাজীবন সমাপ্তির পর তিনি যশোর রেলস্টেশনে মাদ্রাসায় শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন পরবর্তীতে ২০২০ সালের দিকে অক্টোবরের তিন তারিখে সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত হন বাংলাদেশের কাওমি মাদ্রাসা সমূহের সবচেয়ে বৃহত্তম বোর্ড বেফাক এর।
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ -সভাপতি কে? Who is the vice president of BEFAK?
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সিনিয়র সহ–সভাপতি পদে নূর হুসাইন কাসেমী আসীন।
বেফাকের বর্তমান মহাসচিব কে?
বেফাকের বর্তমান মহাসচিবের নাম হলোঃ মাওলানা মাহফুজুল হক
বেফাকের লক্ষ্য কি ? Aims of BEFAK
বেফাকের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য গুলা নিন্মরূপঃ
- ১. বাংলাদেশের কওমী মাদরাসাসমূহকে একত্রিত করা,
- ২. দ্বীন ইসলামের হিফাযত করা,
- ৩. দ্বীনী শিক্ষার বিষয়ে সকলকে উৎসাহিত করে তোলা,
- ৪. কওমী মাদরাসা সমূহকে জনগণের নিকট ধর্মীয় খিদমতগার প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত করানো,
- ৫. কওমী মাদরাসা সমূহকে সকল ফেৎনা-ফাসাদ ও ইসলাম বিরোধীদের ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করা,
- ৬. যোগ্য মুদাররিস গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণ দান ও উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা করা,
- ৭. বিশ্বের বিভিন্ন দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা,
- ৮. কওমী মাদরাসা শিক্ষার মানোন্নয়নকল্পে বিভিন্ন পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করা,
- ৯. দ্বীনী আরবী শিক্ষার ক্ষেত্রে কওমী মাদরাসাসমূহের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরার মাধ্যমে সকল মহলের কাছ থেকে স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা করা,
- ১০. কওমী মাদরাসায় শিক্ষাপ্রাপ্ত উলামায়ে কিরামকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা ইত্যাদি।
বেফাকের কার্যক্রম, Activities of BEFAK
![বেফাকের কার্যক্রম](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AE-1.png)
বেফাকুল মাদারিস তাদের নিবন্ধিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠ্যসূচি প্রণয়ন, উন্নয়ন, বিভিন্ন স্তরভেদে পরীক্ষা গ্রহণ এবং সনদ প্রদানের কাজ করে থেকে। ২০১২ সালে রিপোর্ট অনুসারে বেফাকের অধীনে বিশ হাজারেরও বেশি কওমি মাদরাসা রয়েছে। ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৯৪ সাল অবধি বেফাকের অফিস ছিল জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলূম ফরিদাবাদ, ঢাকা। ১৯৯৪ সাল থেকে ২০০৬ সাল অবধি ছিল নয়া পল্টন, ঢাকা-১০০০; ২০০৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে কাজলা (ভাঙ্গা প্রেস), যাত্রাবাড়ি, ঢাকা-১২০৪ এলাকায় বেফাকের প্রতিষ্ঠার জন্য জায়গা ক্রয় করে সেখানেই বেফাকের কার্যক্রম শুরু করা হয়।
বেফাকের ইতিহাস সম্পর্কে তথ্য, Information about the history of BEFAK
২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বেফাকের সভাপতি শাহ আহমদ শফীর মৃত্যু হয়। তিনি মৃত্যুবরণ করার পর বেফাকের সভাপতি পদটি শূন্য হয়ে যায়। অভ্যন্তরীণ কিছু কর্মকাণ্ডের কারণে অন্যান্য কর্মকর্তাদের মধ্যেও বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্ক শুরু হয়। ফলস্বরূপ ২০২০ সালের ৩ অক্টোবর মজলিসে আমেলার ১২৫ সদস্যের উপস্থিতিতে একটি বৈঠক আয়োজিত হয়। উক্ত বৈঠকে সভাপতি পদ পান মাহমুদুল হাসান, আর সহ-সভাপতি পদ পেয়েছিলেন নূর হুসাইন কাসেমী এবং মহাসচিব পদে নিয়োগ লাভ করে মাহফুজুল হক।
![বেফাকের ইতিহাস সম্পর্কে তথ্য](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2023/12/bef5.jpeg)
বাংলাদেশের মাদরাসাগুলোর দুঃখজনক অবস্থা ছিল, এমন অবস্থার অবসানকল্পে দারুল উলূম দেওবন্দের অনুকরণে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশস্থ দারুল উলূমের শাখা-প্রশাখা প্রতিষ্ঠানসমূহ, আর সেগুলোকে একত্রিত ও ঐক্যবদ্ধ করার মাধ্যমে জাতির বৃহত্তম কল্যাণ কামনায় বাংলাদেশের সর্ব স্তরের মাশাইখ ও উলামায়ে কিরাম একটা কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড গড়ে তোলা হয়, যার নাম রাখা হয়- “বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ”, যার নাম সংক্ষেপে বেফাক।
আসমানী শিক্ষা ও এ শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তিদের মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে জাতি গঠন, নিরক্ষরতা ও মূর্খতা দূরীকরণ এবং দরিদ্রতা ও সন্ত্রাসমুক্ত সুখী ও সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ গঠন করার কোরআনিক বিধান বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই নেওয়া হয়েছিল এ পদক্ষেপ।
আল্লহ পাক এর বক্তব্য- “তোমরা আল্লাহ ও তদীয় রসূলগণের নির্দেশ মেনে চলবে এবং পরস্পরে ঝগড়া-বিবাদ করবে না। কেননা, পরস্পর ঝগড়া বিবাদ করলে তোমাদের ঐক্য বিনষ্ট হবে এবং তোমরা হীনবল হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব- প্রতিপত্তি শেষ হয়ে যাবে”। এটি ছিল সূরা আনফাল : ৪৬।
বিশ্বনবী (স.) ইরশাদ করেছেন- “ইলম অর্জন করা সকল মুসলমানের ওপর ফরয”। তিনি আরো বলেছিলেন- “তোমরা ইলম অর্জন কর ও তা মানুষকে শিক্ষা দাও’’ । “তোমরা কোরআন শিখ ও তা মানুষকে শিক্ষা দাও’’।
জ্ঞানের কথা একটি বাক্য হলেও তা আমার পক্ষ হতে অন্যের নিকট পৌঁছে দাও। তোমাদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তি সে, যে কোরআনের জ্ঞান অর্জন করে ও তা অন্যকে শিক্ষা দেয়। কোরআনিক বিপ্লবের এ আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে যেমন আত্মপ্রকাশ করেছিল দারুল উলুম দেওবন্দ, ঠিক তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আত্ম-প্রকাশ করেছে বাংলাদেশস্থ বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ।
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের রূপরেখা, Outline of Befakul Madarisil Arabia Bangladesh
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত দ্বীন-বিজ্ঞানসহ এবং বাকি ৮ বছর অর্থাৎ মাস্টার্স ডিগ্রি অবধি শুধু ধর্মীয় শিক্ষার বিষয় রয়েছে।
![বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের রূপরেখা](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%81%E0%A6%B2-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%B2-%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A6%A4-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A0%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%8B.png)
ধর্মীয় শিক্ষার বিষয় সমূহ হল:
- আরবি ভাষা, নহব, সরফ, বালাগাত ও আরুয।
- ফিকহ ও উছুলে ফিকহ।
- তাফসির ও উছুলে তাফসির।
- হাদীস ও উছুলে হাদীস।
- তাজবীদ।
- ফারাইয
- ইসলামের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সিরাত।
- ইসলামের অর্থনীতি।
- ইসলামের সমাজ বিজ্ঞান ও সিরাত।
- ইসলামের দর্শন।
- পরিবার বিজ্ঞান।
- বৈষয়িক জ্ঞান-বিজ্ঞান সংক্রান্ত বিষয় সমূহ হল:
- বাংলা ভাষা এবং বাংলা ব্যাকরণ।
- ইংরেজি এবং ইংরেজি ব্যাকরণ।
- উর্দূ ও উর্দূ কাওয়ায়েদ।
- ফারসি ও ফারসি কাওয়ায়েদ।
- গণিত ও জ্যামিতি
- ইতিহাস
- ভূগোল
- বিজ্ঞান
- যুক্তিবিদ্যা
- মুনাযারা
পাশ্চাত্য দর্শন
উক্ত বিষয়গুলো ছাড়া ধর্মীয় জ্ঞান – বিজ্ঞানের সাধারণ ধারা হচ্ছে দাওরায়ে হাদীস তথা মাস্টার্স ডিগ্রি পর্যন্ত। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন বিষয়ে ডিপ্লোমা কোর্স। বিষয়গুলো হল: হাদীস, তাফসীর, ফিকহ, আরবি ভাষা, ইসলামি অর্থনীতি, ইসলামী রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও মুকারানাতুল আদইয়ান প্রভৃতি।
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের শিক্ষাগত কাঠামো, Educational structure
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ (বেফাক) মাদ্রাসায় প্রদত্ত ইসলামী শিক্ষার তত্ত্বাবধানকারী একটি কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ হিসাবে দেশের শিক্ষাগত কাঠামোতে একটি স্বতন্ত্র অবস্থান ধারণ করে। ইসলামী শিক্ষার মান ও গুণগত মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত বেফাক বাংলাদেশের ধর্মীয় ও বুদ্ধিবৃত্তিক ভূ-প্রকৃতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ঐতিহাসিক পটভূমি: বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলামী শিক্ষার বৃহত্তর ঐতিহ্যের শিকড় খুঁজে পায়। মাদ্রাসা, ইসলামিক শিক্ষার কেন্দ্র হিসাবে, এই অঞ্চলের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে যেখানে পণ্ডিতরা বিভিন্ন ইসলামিক বিজ্ঞানে জ্ঞান প্রদান করেন।
![বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%81%E0%A6%B2-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%B2-%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%BE-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%BE-1.png)
![শিক্ষাগত কাঠামো](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2023/12/bef4-1024x576.jpg)
মিশন : বেফাকের প্রাথমিক লক্ষ্য হল এর আওতাধীন মাদ্রাসার স্পেকট্রাম জুড়ে অভিন্নতা এবং গুণমান নিশ্চিত করার সাথে সাথে ইসলামী জ্ঞানকে সমুন্নত রাখা এবং প্রচার করা। এটি অর্জনের জন্য, বোর্ড বেশ কয়েকটি মূল লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে:
- • কারিকুলাম ডেভেলপমেন্ট: বেফাক সক্রিয়ভাবে মাদ্রাসার পাঠ্যক্রম ডিজাইন ও আপডেট করার কাজে নিয়োজিত। পাঠ্যক্রমটি সাধারণত কোরআনিক অধ্যয়ন, হাদিস, ফিকহ, আকিদা, আরবি ভাষা এবং ইসলামের ইতিহাস সহ বিস্তৃত বিষয় কভার করে। উদ্দেশ্য হল ছাত্রদেরকে ইসলামী শিক্ষার ব্যাপক জ্ঞান প্রদান করা।
- • পরীক্ষা প্রশাসন: বেফাক মাদ্রাসা পদ্ধতির মধ্যে বিভিন্ন স্তরে পরীক্ষা পরিচালনা করে। এই পরীক্ষাগুলি নির্ধারিত বিষয়গুলিতে শিক্ষার্থীদের দক্ষতার মূল্যায়ন করার জন্য এবং তাদের ইসলামী নীতিগুলির বোঝার মূল্যায়ন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। পরীক্ষার প্রক্রিয়াটি কঠোর, উচ্চ একাডেমিক মান বজায় রাখার প্রতি বোর্ডের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।
- • সার্টিফিকেশন: বেফাক পরীক্ষা সফলভাবে সমাপ্তির ফলে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এই সার্টিফিকেটগুলি নিছক একাডেমিক প্রশংসা নয়; তারা উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্য রাখে। বেফাক সার্টিফিকেটধারী গ্রাজুয়েটরা ইসলামী জ্ঞানে পারদর্শী ব্যক্তি হিসাবে স্বীকৃত এবং প্রায়শই তাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্মীয় পণ্ডিত, শিক্ষক বা নেতা হিসাবে খোঁজ করা হয়।
- • নিয়ন্ত্রণ এবং গুণমানের নিশ্চয়তা: বেফাক একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসাবে কাজ করে, নিশ্চিত করে যে মাদ্রাসাগুলি শিক্ষার প্রতিষ্ঠিত মানগুলি মেনে চলে। নির্দেশিকা নির্ধারণ এবং সম্মতি নিরীক্ষণের মাধ্যমে, বোর্ডের লক্ষ্য বিভিন্ন মাদ্রাসা দ্বারা প্রদত্ত শিক্ষার মানের তারতম্য রোধ করা।
- পাঠ্যক্রম এবং শিক্ষাগত কাঠামো: বেফাক দ্বারা প্রণীত পাঠ্যক্রম ঐতিহ্যগত ইসলামী বিজ্ঞান এবং সমসাময়িক জ্ঞানের একটি সুষম মিশ্রণ প্রতিফলিত করে। বেফাকের সাথে অধিভুক্ত মাদ্রাসায় নথিভুক্ত ছাত্ররা একটি কঠোর শিক্ষামূলক যাত্রার মধ্য দিয়ে যায় যা কুরআন মুখস্থ করা এবং তেলাওয়াত, হাদিস সাহিত্যের গভীরতা, ইসলামী আইনশাস্ত্রের অন্বেষণ এবং আরবি ভাষায় ভাষাগত দক্ষতাকে অন্তর্ভুক্ত করে।
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা, Befakul Madarisil Arabia is the current education system of Bangladesh
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা ব্যবস্থা মূলত তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।
প্রথম পর্যায় : এই পর্যায়ে রয়েছে দু’টি স্তর। সেগুলি হল :
- প্রথম স্তর: এই স্তরে রয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা। কুরআন তিলাওয়াত করা এবং ইসলামিয়াতসহ গণিত, বাংলা, ইংরেজি ও সমাজ বিজ্ঞান প্রভৃতি ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত। একে আল মারহালাতুল ইবতিদাইয়্যাহ বা কওমী প্রাইমারি/প্রাইমারি মাদরাসা বলা হয়।
- দ্বিতীয় স্তর: এই স্তরে রয়েছে সাধারণ শিক্ষা সহ ইসলামিক শিক্ষা; অর্থাৎ আরবি ভাষা, আরবি ব্যাকরণ ও ফিকাহশাস্ত্র, গণিত, বাংলা, ইংরেজি এবং সমাজ বিজ্ঞান। একে মারহালাতুল মুতাওয়াসসিতাহ বলা হয়। এর শিক্ষা গ্রহণ ক্ষেত্রে সময়- ৩ বছর। অর্থাৎ: ৬ষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় অবধি।
দ্বিতীয় পর্যায়: এই পর্যায়টিতে রয়েছে মোট ৪টি স্তর। সেগুলি হল :
- ১ম স্তর হল:- আল – মারহালাতুস সানাবিয়াতুল বা মাধ্যমিক স্তর। এক্ষেত্রে রয়েছে দু’বছর অর্থাৎ ৯ম-১০ম শ্রেণী।
- ২য় স্তর হল: আল – মারহালাতুস সানাবিয়াহ্ আল উলইয়া অর্থাৎ উচ্চ মাধ্যমিক স্তর। এক্ষেত্রে সময় রয়েছে দু’বছর অর্থাৎ একাদশ শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী।
- ৩য় স্তর হল : মারহালাতুল ফজিলাত অর্থাৎ স্নাতক ডিগ্রি। এক্ষেত্রে সময় রয়েছে দু’বছর।
- ৪র্থ স্তর হল:- মারহালাতুল তাকমিল অর্থাৎ মাস্টার্স ডিগ্রি। এক্ষেত্রে সময় রয়েছে দু’বছর। এই স্তরকে দাওরায়ে হাদীস বলা হয়।
![বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2023/12/bef6.jpg)
তৃতীয় পর্যায়: এই পর্যায়ে বিষয়ভিত্তিক ডিপ্লোমা ও গবেষণামূলক শিক্ষা কোর্স রয়েছে।
সেই কোর্সগুলো হল: হাদীস, তাফসির, ফিকহ, ফতওয়া, তাজবিদ, ইংরেজি, উর্দূ ও ফারসি ভাষা, বাংলা সাহিত্য, আরবিসাহিত্য, ইসলামের ইতিহাস, ও সীরাত, ইলমুল কালাম, ইসলামি দর্শন, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, পৌর বিজ্ঞান ও সমাজ বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ের গবেষণামূলক শিক্ষা।
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশে পরীক্ষা ও মূল্যায়ন, Testing and evaluation
শিক্ষাগত কাঠামোতে বিভিন্ন স্তরের, প্রতিটি নির্দিষ্ট পরীক্ষা দ্বারা চিহ্নিত। এই পরীক্ষায় তাদের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা এক স্তর থেকে পরবর্তী স্তরে অগ্রসর হয়। পাঠ্যক্রমের ক্রমিক প্রকৃতি ইসলামী জ্ঞানের একটি পদ্ধতিগত এবং প্রগতিশীল অধিগ্রহণ নিশ্চিত করে।
পরীক্ষা ও মূল্যায়ন: বেফাক বিভিন্ন স্তরে পরীক্ষা পরিচালনা করে, যেমন দাখিল, আলিম এবং ফাজিল, প্রতিটি মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন পর্যায়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মূল্যায়ন প্রক্রিয়াটি সূক্ষ্ম, লিখিত পরীক্ষা, মৌখিক মূল্যায়ন এবং শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় জ্ঞানের ব্যবহারিক প্রদর্শনকে অন্তর্ভুক্ত করে।
![](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%81%E0%A6%B2-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%B2-%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE-bangaldesh-1.png)
![বেফাক বিভিন্ন স্তরে পরীক্ষা পরিচালনা করে](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2023/12/bef8-1024x538.jpeg)
পরীক্ষাগুলি শুধুমাত্র একাডেমিক মূল্যায়নের একটি মাধ্যম নয় বরং ইসলামিক বিজ্ঞানে স্বীকৃত পণ্ডিত হতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য উত্তরণের একটি অনুষ্ঠান হিসেবে কাজ করে। এই পরীক্ষাগুলিতে সাফল্য স্নাতকদের জন্য বিভিন্ন সুযোগের দ্বার উন্মুক্ত করে, যার মধ্যে ইমাম এবং ধর্মীয় শিক্ষকের ভূমিকা থেকে শুরু করে পণ্ডিত চেনাশোনাগুলির অবদানকারী সদস্য।
স্নাতকদের জন্য, বেফাক সার্টিফিকেট ইসলামিক স্টাডিজে আরও বিশেষীকরণ বা শিক্ষাদান এবং ধর্মীয় নেতৃত্বের ক্ষেত্রে প্রবেশের পথ খুলে দেয়। এই সার্টিফিকেটগুলিকে দেওয়া স্বীকৃতি মাদ্রাসা ব্যবস্থার সীমার বাইরেও প্রসারিত হয়, স্নাতকরা প্রায়শই তাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রভাবশালী ভূমিকা গ্রহণ করে।
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ নিবন্ধন ফরম
![বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ নিবন্ধন ফরম](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%81%E0%A6%B2-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%B2-%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A6%A8-%E0%A6%AB%E0%A6%B0%E0%A6%AE-1-1.png)
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের বালিকা ও বাকিলার নিবন্ধন ফরম পাবেন নিচের লিংকে।
• বালক ও বালিকা নিবন্ধন ফরম(https://wifaqbd.org/documents-list/65)
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ পরীক্ষার রুটিন, BEFAK exam routine
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের পরীক্ষার রুটিন, কোর্স ও অন্যান্য ফরম পাবেন নিচের লিংকে।
• পরীক্ষার রুটিন, কোর্স ও অন্যান্য ফরম https://wifaqbd.org/documents-list/62
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ রেজাল্ট, BEFAK result
আপনি যদি বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশে আপনার ব্যক্তিগত বা পরিচিত কারো ফলাফল, মাদরাসাওয়ারী ফলাফল ও মেধা তালিকা দেখতে চান তবে তাদের নির্ধারিত ওয়েভ সাইটে যেতে হবে। নিচে তাদের ওয়েভ সাইটের এড্রেস দেয়া হল।
• বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ রেজাল্ট ওয়েভ সাইট http://wifaqresult.com/
এখানে আপনি ২০০৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত রেজাল্ট দেখতে পাবেন। আপনি যদি ২০২৩ সালের রেজাল্ট দেখতে চান তবে আপনাকে তাদের নতুন ওয়েভ সাইটে যেতে হবে। নিচে তাদের নতুন ওয়েভ সাইটের লিংক দেয়া হলো।
• বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ রেজাল্ট ২০২৩ https://wifaqedu.com/
![বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ রেজাল্ট](https://okbangla.com/wp-content/uploads/2024/06/%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%81%E0%A6%B2-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%B2-%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6-%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%9F-1.png)
বেফাক কোথায় অবস্থিত? Where is BEFAK located?
বেফাকের ঠিকানাঃ হোল্ডিং – ২০৫, কাজলার পাড় (ভাঙ্গাপ্রেস), যাত্রাবাড়ী, ঢাকা – ১২৩৬
যোগাযোগঃ
মেইলঃ wifaqbd@gmail.com
মোবাইলঃ 01716-299444
মাদরাসা রেজিস্ট্রেশন (ইলহাক) ও ডাক শাখাঃ ০১৯৭৭৫০৫০৫৭
তা‘লিম তরবিয়াত (মাদরাসা পরিদর্শন) বিভাগঃ ০১৭২৫৮৩৭১১৫
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ বিভাগঃ ০১৭১৬২৯৯৪৪৪,
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকঃ ০১৮৭৭৩৮৫৯৪৬
হিসাব বিভাগঃ ০১৮৭৭৩৮৫৯৪৯,
প্রকাশনাঃ ০১৭৯৮২৮৮৩৯২
পরিশেষে, Conclusion
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশে ধার্মিক শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সময়ের সাথে সাথে, এই মাদ্রাসার পাঠ্যক্রম এবং পরীক্ষার প্রক্রিয়াগুলি নিয়ন্ত্রণ এবং মানসম্মত করার জন্য একটি কেন্দ্রীভূত কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে, যা বেফাক প্রতিষ্ঠার দিকে পরিচালিত করে।