তানজানিয়ার উত্তরে অবস্থিত লেক নেট্রন হ্রদে নামলেই পশু-পাখি “পাথর” হয়ে যায়। এর প্রধান কারণ হলো হ্রদের পানির বিশেষ রাসায়নিক গঠন।
এই হ্রদের জলে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম কার্বোনেট এবং সোডা রয়েছে। এর ফলে হ্রদের জলের ক্ষারত্ব অনেক বেশি, প্রায় পিএইচ ১০.৫। এই উচ্চ ক্ষারত্বের কারণে কোনো প্রাণী হ্রদে নামলে তাদের শরীর দ্রুত ক্যালসিয়াম কার্বোনেটের একটি স্তর দিয়ে ঢেকে যায়। এই স্তরটি ধীরে ধীরে পাথরের মতো শক্ত হয়ে যায়।

নেট্রন হ্রদের দৈর্ঘ্য ৫৭ কিলোমিটার (৩৫ মাইল)। হ্রদটি দৈর্ঘ্যে লম্বা হলেও বেশ অগভীর। এর গভীরতা সাধারণত ১০ ফুটের বেশি হয় না।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, হ্রদের লাল রঙের কারণে অনেক পাখি আকৃষ্ট হয়ে এখানে আসে। কিন্তু এই হ্রদের জল তাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। হ্রদে নামার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের শরীর পাথরের মতো শক্ত হয়ে যায় এবং তারা মারা যায়।
এই হ্রদের আশেপাশে অনেক পাখির দেহাবশেষ দেখা যায়, যা দেখলে মনে হয় যেন তারা পাথরের মূর্তি হয়ে আছে। তবে ফ্লেমিংগো নামের এক বিশেষ প্রজাতির পাখি এই হ্রদে বসবাস করে এবং তারা এই পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে।

এই হ্রদটি পূর্ব আফ্রিকার লেসার ফ্লেমিংগোর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রজনন ক্ষেত্র। প্রায় ২৫ লক্ষ লেসার ফ্লেমিংগো এখানে বাস করে। হ্রদের অগভীর জলে প্রচুর নীলাভ-সবুজ শৈবাল জন্মায়, যা ফ্লেমিংগোগুলির খাদ্য এবং বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য।
লেক নেট্রন একটি রহস্যময় স্থান এবং এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য অনেক পর্যটকের কাছে আকর্ষণীয়। তবে এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হওয়ায় এখানে যাওয়া উচিত না।