কোভিড লকডাউনের সময়টা আমাদের শিখিয়েছে কীভাবে ছোট ছোট জিনিস থেকেও আনন্দ খুঁজে নিতে হয়। ডালগোনা কফি থেকে শুরু করে ২০ মিনিট হাত ধোয়ার চ্যালেঞ্জ — নানান মজার ভিডিওতে তখন ভরে উঠত সোশ্যাল মিডিয়ার পাতা।
সেই ধারা বজায় রেখেই এবার নতুন এক ট্রেন্ড আলোড়ন তুলেছে ইন্টারনেট দুনিয়ায়: ‘গ্লোয়িং ওয়াটার ট্রেন্ড’! ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব খুললেই দেখা মিলছে এর মজাদার সব ভিডিও। কিন্তু হঠাৎ কেন এই ট্রেন্ডের এত রমরমা?
এর পেছনে দুটো মূল কারণ আছে। প্রথমত, এই ট্রেন্ড অনুসরণ করার জন্য খুব বেশি উপকরণের প্রয়োজন নেই। দ্বিতীয়ত, এর ফলাফল দেখে নেটিজেনরা রীতিমতো মুগ্ধ হচ্ছেন! কী এমন সেই ফলাফল?
মাত্র মিনিট খানেকের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি জিনিস ব্যবহার করেই তৈরি করা যাচ্ছে ঝলমলে, জাদুকরি এক আলো।
আপনিও কি এই ট্রেন্ডের তালে তাল মেলাতে চান? তাহলে জেনে রাখুন, এই নতুন ধারাকে আপনি নিজের কাজেও লাগাতে পারেন। আপনার ঘরে কি ছোট শিশু আছে? শিশুদের জন্য এই ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা খুবই মজাদার হতে পারে!
আপনার সন্তানকে চমকে দিতে, তাদের মুখে হাসি ফোটাতে এই ট্রেন্ডটি অবশ্যই একবার অনুসরণ করে দেখুন। সেই জাদুর মুহূর্তটি ক্যামেরাবন্দী করে রাখতে পারেন, যা পরে পুরো পরিবার মিলে উপভোগ করতে পারবেন। অনেক ভিডিওতেই দেখা যাচ্ছে, এই ট্রেন্ডে শিশুরা দারুণ আনন্দ পাচ্ছে, খিলখিল করে হেসে উঠছে তারা!
কীভাবে তৈরি করবেন ‘গ্লোয়িং ওয়াটার’?

খুবই সহজ কিছু ধাপ অনুসরণ করে আপনিও তৈরি করতে পারেন এই আকর্ষণীয় ‘গ্লোয়িং ওয়াটার’:
- ফোনের ফ্ল্যাশলাইট অন করুন এবং ফোনটি উল্টে রাখুন। ফ্ল্যাশলাইটটি উপরের দিকে মুখ করে থাকবে।
- লাইটের উপরে একটি স্বচ্ছ কাচের পাত্র রাখুন। পাত্রটিতে অর্ধেকের বেশি জল ভরে দিন।
- ঘরের সমস্ত আলো বন্ধ করে দিন। এতে গ্লোয়িং ইফেক্টটি আরও ভালোভাবে দেখা যাবে।
- এবার ধীরে ধীরে জলের মধ্যে অল্প হলুদগুঁড়ো ফেলুন অথবা একটি ভিটামিন বি২ (রাইবোফ্ল্যাভিন) ক্যাপসুল ভেঙে এর গুঁড়ো মিশিয়ে দিন।
- শুরু হবে জাদুর খেলা! দেখতে পাবেন, জলের পাত্রটি উজ্জ্বল আলোয় ঝলমল করছে।
কেন এই আলো তৈরি হয়?
শিশুদের জন্য যেমন মজাদার, তেমনই শিক্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে এই ধারা। এই আলোর নেপথ্যে যে বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে, সেটিও আপনি বাড়ির ছোটদের সহজেই বুঝিয়ে দিতে পারেন।
আসলে, ভিটামিন বি২ একটি প্রাকৃতিক ফ্লুরোসেন্ট পদার্থ। এর অর্থ হলো, এটি ফ্ল্যাশলাইট থেকে আলো শোষণ করে এবং তারপর পুনরায় সেই আলো প্রতিফলন করে। আর এই প্রক্রিয়ার ফলেই তৈরি হয় ঝিকমিকে আভা।
হলুদগুঁড়োর মধ্যেও রাইবোফ্ল্যাভিন এবং কারকিউমিন নামক ফ্লুরোসেন্ট উপাদান থাকে। ফ্ল্যাশলাইট বা ঘন অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাবে এই উপাদানগুলো চকমক করে ওঠে, যা আমরা ‘গ্লোয়িং ওয়াটার’ হিসেবে দেখতে পাই।
তাহলে আর দেরি কেন? এক চিমটে হলুদে নিয়ে আপনিও এই ট্রেন্ডে গা ভাসিয়ে দিন।