আমাদের দেশে ট্রেন পরিষেবা বেশি ব্যবহার হয় কারণ খুব কম খরচে অনেক দূরে যাত্রা করা যায় ট্রেনের সাহয্যে। এছাড়া ভারতের প্রতিটি শ্রেণীর লোকেরা এই রেল পরিষেবাকে অনায়াসেই ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু জানেন কি ভারতে এমন কয়েকটি ট্রেন রয়েছে যেগুলোর ভাড়া প্রায় আকাশছোঁয়া, যেগুলো সাধারণ মানুষের সাধ্যের বাইরে। এরকম একটি ট্রেন হল “মহারাজা এক্সপ্রেস”।
মহারাজা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভারতের সবচেয়ে বিলাসবহুল ও ব্যয়বহুল একটি ট্রেন। আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা এই ট্রেনের বিষয়ে বিস্তারিত জানবো। এই ট্রেনটি শুধু ভারতেই নয় পুরো বিশ্বেই বিখ্যাত। এই ট্রেনটিকে মূলত রাজকীয় ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনার জন্যই তৈরি করা হয়েছে। এই ট্রেনটি ২০১০ সালে প্রথম চালু হয়েছিল। এটি আমাদের দেশের ইতিহাস, সংস্কৃত ও ঐতিহ্যের একটি উদাহরণ।
মহারাজা এক্সপ্রেস ট্রেনটি যাত্রীদের দেশের বিভিন্ন বিখ্যাত জায়গা যেমন তাজমহল, খাজুরাহো মন্দির, রণথম্বোর, বারানসীর স্নানঘাট ইত্যাদির মতো স্থানে নিয়ে যায়। এই ট্রেনে যারা ভ্রমণ করে তারা পাঁচ তারকা হোটেলের মতো সুযোগ ও সুবিধা পান।
এই ট্রেনে রয়েছে রাজকীয় চটকদার চেয়ার, টেবিল, বিছানা, খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা, শাওয়ার যুক্ত বাথরুম, মিনি বার, লাইভ টিভি ইত্যাদি। শুধু তাই নয় এতে নানারকমের ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক খাবারও পাওয়া যায় যেগুলো তৈরি করেন বিখ্যাত শেফরা।
এছাড়াও মহারাজা এক্সপ্রেসে যাত্রীদের জন্য লাইভ মিউজিক, নৃত্য ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মতো বিনোদনের ব্যবস্থাও রয়েছে। এই ট্রেনটির প্রত্যেকটি কেবিনই রাজকীয়ভাবে সাজানো হয়েছে। ট্রেনটিকে কাঠের কাজ, সুন্দর কারুকাজ এবং বিলাসবহুল ফ্যাব্রিক দিয়ে সাজানো হয়েছে যা ট্রেনটিকে আরো সুন্দর করে তোলে। এতে রয়েছে প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট, ডিলাক্স, ডিলাক্স কেবিন, জুনিয়ান স্যুট।

মহারাজা এক্সপ্রেসের ভাড়া কিন্তু অনেক। তাই এই ট্রেনে যারা যাতায়াত করেন তাদের সব ধরনের সুযোগ ও সুবিধা দেওয়া হয় যেই সুযোগ সুবিধাগুলো অন্য কোনো ট্রেনে দেওয়া হয়না যদিও এই ট্রেনের ভাড়া ট্রেনের রুট ও কেবিনের ধরনের ভিত্তিতে ঠিক করা হয়। এই ট্রেনের টিকিটের দাম এতটাই যে এটি দিয়ে আপনি ভারতের রাজধানীতে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনতে পারবেন।
আপনি যদি দিল্লি-আগ্রা-রণথাম্বোর-জয়পুর রুটের ডাবল অকুপেন্সি ডিলাক্স কেবিন সিলেক্ট করেন তাহলে আপনাকে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা ভাড়া দিতে হবে। আর যদি আপনি প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট চান তাহলে আপনাকে ১১ লাখ টাকা ভাড়া দিতে হবে।
যদি আপনি দিল্লি-জয়পুর-রণথম্বোর-ফতেহপুর সিক্রি-আগ্রা-খাজুরাহো-বারানসি-দিল্লি রুট সিলেক্ট করেন তাহলে আপনাকে এর থেকেও বেশি ভাড়া দিতে হবে অর্থাৎ এই রুটের জন্য আপনাকে দিতে হবে ২০ লক্ষ টাকার বেশি ভাড়া। এই ট্রেনের টিকিট বুক করতে চাইলে আপনাকে এই এক্সপ্রেস ট্রেনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে টিকিট বুকিং করতে হবে।