আত্মনিয়ন্ত্রণ কমলেই কি বাড়ে রাজনৈতিক উগ্রতা? সাম্প্রতিক এক রোমাঞ্চকর গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই এক চমকপ্রদ ইঙ্গিত। প্রশ্ন হচ্ছে—আপনি যে রাজনৈতিকভাবে এত আবেগপ্রবণ, তা কি আসলে আপনার মস্তিষ্কের ‘গ্লিচ’? ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রবীণ সৈনিকদের উপর চালানো এক বিস্তৃত গবেষণায় উঠে এসেছে, মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অংশে ক্ষতি হলে মানুষের রাজনৈতিক অনুভূতি হয়ে ওঠে অতিমাত্রায় তীব্র, এমনকি উগ্র।
গবেষণার চাঞ্চল্যকর ফলাফল কী বলছে?
প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স, যা আত্মনিয়ন্ত্রণ ও যুক্তিবোধের কেন্দ্র, সেখানে ক্ষতি হলে রাজনৈতিক উগ্রতা বেড়ে যায়, আবার অ্যামিগডালা, যা আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে, সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে মানুষ রাজনৈতিকভাবে আরও শান্ত বা নির্লিপ্ত হয়ে ওঠে।

১২৪ জন মার্কিন যোদ্ধার উপর গবেষণাটি পরিচালিত হয় যাদের মাথায় আঘাত লেগেছিল। তাদের সঙ্গে তুলনা করা হয় ৩৫ জন এমন প্রবীণের সঙ্গে যাদের মস্তিষ্কে কোনও ক্ষতি হয়নি।
প্রায় ৪০-৪৫ বছর পর মূল্যায়ন করা হয় তাদের রাজনৈতিক মত ও আবেগের তীব্রতা।
গবেষকেরা কী বলছেন?
নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জর্ডান গ্রাফম্যান বলেন, “আমরা রক্ষণশীল বা উদার মতাদর্শ নয়, বরং এমন মস্তিষ্ক নেটওয়ার্ক চিহ্নিত করেছি যেগুলো রাজনৈতিক আবেগ ও সম্পৃক্ততা কতটা তীব্র হবে তা নির্ধারণ করে।”, অর্থাৎ, আপনি কোন দলে সেটা নয়, বরং আপনার দলের প্রতি কতটা ‘উগ্র’ হয়ে উঠবেন, তা নির্ভর করছে মস্তিষ্কের অবস্থা ও কার্যকারিতার উপর।
এর ফলাফল কী হতে পারে?

এই গবেষণা রাজনীতি নয়, আমাদের মস্তিষ্কের জটিল গঠন ও আবেগের নিয়ন্ত্রণ কৌশল বুঝতে এক নতুন দরজা খুলে দিয়েছে। এমনকি চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দিকনির্দেশনা হতে পারে—নিউরোসাইকিয়াট্রিক পরীক্ষায় ভবিষ্যতে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনও বিবেচনায় আনা হবে।
আপনার রাজনৈতিক চিন্তাভাবনার পেছনে শুধু শিক্ষা বা অভিজ্ঞতা নয়, মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট কোণের অবস্থা পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। তাই রাজনৈতিক বিতর্কে ঝাঁপ দেওয়ার আগে একবার ভাবুন—আপনার মতটা কি সত্যিই আপনার? নাকি আপনার নিউরনগুলোর এক নিঃশব্দ খেলা?
শেয়ার করুন এই চমকপ্রদ তথ্য—জানুক সবাই, মাথার ভেতর লুকিয়ে থাকা সত্য!