ক্যান্সার একটি ভয়ঙ্কর শব্দ, এবং এটি যখন একটি নীরব ঘাতক হয়ে উঠে তখন এটি আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে। আমরা ডিম্বাশয় এবং জরায়ু ক্যান্সারের কথা বলছি, যা ক্রমশ বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে উঠছে। এর লক্ষণগুলি এতটাই সাধারণ যে বেশিরভাগ মহিলারা এগুলিকে দৈনন্দিন অসুস্থতা বলে ভুল করেন। যখন তারা চিকিৎসকদের সহায়তা চান, তখন প্রায়শই অনেক দেরি হয়ে যায়।
এই ক্যান্সারগুলি এত বিপজ্জনক কেন?
এর প্রধান কারণ হল সচেতনতার অভাব এবং বিলম্বিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা। অনেক মহিলা ক্রমাগত গ্যাসের ব্যথা, অতিরিক্ত মাসিক রক্তপাত, বা তীব্র তলপেটে ব্যথার মতো লক্ষণগুলি উপেক্ষা করেন। তারা ব্যথানাশক ওষুধ খান এবং সর্বোত্তম ফল আশা করেন, কিন্তু জানেন না যে এগুলি ক্যান্সারের প্রাথমিক সতর্কতা লক্ষণ হতে পারে। যখন তারা ডাক্তারের কাছে যান, তখন ক্যান্সার প্রায়শই ছড়িয়ে পড়ে।

ঝুঁকিতে কারা?
ক্যান্সারের বীজ প্রায়শই আমাদের জিন এবং জীবনযাত্রায় বপন করা হয়। আপনার কি স্তন, জরায়ু, প্রোস্টেট বা কোলন ক্যান্সারের পারিবারিক ইতিহাস আছে? যদি তাই হয়, তাহলে আপনার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ এবং রোবোটিক সার্জনদের মতে, বেশিরভাগ মহিলাই এই ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন নন। কিন্তু পারিবারিক ইতিহাস না থাকলেও, 30 বা 40 বছরের বেশি বয়সী প্রতিটি মহিলার নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত।
জীবন রক্ষাকারী স্ক্রিনিং যা আপনি মিস করতে পারবেন না :
- ট্রান্সভ্যাজাইনাল আল্ট্রাসাউন্ড: এটি 40 বছরের বেশি বয়সী মহিলাদের জন্য আবশ্যক। এই স্ক্যানটি জরায়ু এবং ডিম্বাশয়ের ভিতরে টিউমার বা সিস্টের মতো কোনও বৃদ্ধি দ্রুত সনাক্ত করতে পারে। কিছু চিকিৎসা কেন্দ্র এমনকি বিশেষজ্ঞ স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের সাথে বিনামূল্যে পরামর্শ প্রদান করে যাতে আপনার কোন পরীক্ষাগুলি প্রয়োজন তা নির্ধারণ করতে সহায়তা করে।
- হিস্টেরোস্কোপি এবং বায়োপসি: যদি আপনি মেনোপজের পরে রক্তপাত অনুভব করেন, তাহলে একটি সাধারণ আল্ট্রাসাউন্ড যথেষ্ট নয়। হিস্টেরোস্কোপি এবং বায়োপসি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই পদ্ধতিতে জরায়ুর সন্দেহজনক স্থান থেকে টিস্যুর নমুনা নেওয়া জড়িত। রেডিওলজিস্ট রেশমি চাঁদের মতে, এটি ক্যান্সার নির্ণয়ের একটি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য উপায়।
এই সতর্কতামূলক লক্ষণগুলি উপেক্ষা করবেন না!

- ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার: যদি আপনার পেটে ব্যথা, বদহজম, দ্রুত পেট ভরা অনুভূতি, অথবা তিন থেকে চার সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঘন ঘন প্রস্রাবের মতো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। কেবল গ্যাসকে দোষারোপ করবেন না!
- জরায়ু ক্যান্সার: আপনার পিঠের নীচের অংশ, পেটে বা পায়ের উপরের অংশে ক্রমাগত ব্যথা উপেক্ষা করা উচিত নয়। বিশেষ করে যদি আপনি মেনোপজের পরে কোনও রক্তপাত অনুভব করেন, তবে এটি একটি বিশাল সতর্কতা যা আপনার পরীক্ষা করানো প্রয়োজন।
ক্যান্সার একটি নীরব ঘাতক। যত তাড়াতাড়ি আপনি এটি সনাক্ত করবেন, তত দ্রুত এর বিরুদ্ধে লড়াই করার সম্ভাবনা তত বেশি। নিয়মিত চেক-আপ, বিশেষ করে 30-40 বছর বয়সের পরে, আপনার সেরা প্রতিরক্ষা। একবার ক্যান্সার ধরা পড়লে, সম্পূর্ণ নিরাময় কঠিন হতে পারে, তবে প্রাথমিক সনাক্তকরণ আপনার জীবন বাঁচাতে পারে। অনেক দেরি না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না। সচেতন থাকুন, এবং সুস্থ থাকুন!