মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা সম্প্রতি মহাকাশে এক অদ্ভুত রহস্যের সন্ধান পেয়েছে, যা বিজ্ঞানীদের নতুন করে ভাবনার খোরাক জুগিয়েছে। নাসার হাবল স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে ধরা পড়েছে এক অতিকায় ব্ল্যাক হোল, যা আমাদের নিকটবর্তী এক ছায়াপথে অবস্থিত।
এই ব্ল্যাক হোলটি এত বিশাল যে, তা মহাকাশের অপার রহস্যময়তাকে আরও একবার সবার কাছে তুলে ধরেছে। মানবজাতির কাছে এখনও মহাজাগতিক বস্তুসমূহ সম্পর্কে অনেক কিছু জানার বাকি রয়েছে, আর এ ধরনের ব্ল্যাক হোল আমাদের সেই জ্ঞানের অভাবকে আরও প্রকট করেছে।

গ্যালাক্সি এম৮৭, যেটি আকাশগঙ্গার কাছেই অবস্থিত, বহুদিন ধরেই বিজ্ঞানীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। তবে “কাছের” হিসেবে আমাদের পরিচিত পরিমাপের একক অনুযায়ী এটি একেবারেই কাছের নয়, কেননা এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৫ কোটি ২০ লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে।
এই ছায়াপথের মধ্যে অবস্থিত ব্ল্যাক হোলটির ভর পৃথিবীর সূর্যের ২.৬ বিলিয়ন গুণ বেশি। অর্থাৎ, এই ব্ল্যাক হোলের ভিতরে প্রায় ২৬০ কোটি পৃথিবীও একসাথে প্রবাহিত হতে পারে!
এই ব্ল্যাক হোলটি আসলে একটি মহাকাশীয় শক্তির উৎস, যা বিজ্ঞানীদের কাছে এক ধরণের “কসমিক পাওয়ারহাউস” হিসেবে পরিচিত। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, ভবিষ্যতে তারা এই ব্ল্যাক হোল সম্পর্কে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হবেন, যা ব্ল্যাক হোলটির প্রকৃতি এবং গঠন সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে আরও সুস্পষ্ট করবে।
এছাড়াও, নাসা সম্প্রতি একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে যা ব্ল্যাক হোলের গঠন ও চরিত্র সম্পর্কে আমাদের উপলব্ধি আরও গভীর করতে সহায়ক। ভিডিওতে দেখা যায়, ব্ল্যাক হোলের দিকে যতই এগোনো হয়, ততই তারার উজ্জ্বলতা এবং গ্যাসের ঘুরন্ত ডিস্কের মাধ্যমে ব্ল্যাক হোলটি আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

ব্ল্যাক হোলের ভিতরে প্রবেশের পর, ক্যামেরা যেন একটি অনন্ত পথের দিকে এগিয়ে চলে, যেখানে সময় এবং স্থান একত্রে মিলে গিয়ে সমস্ত গতিশীলতাকে স্থবির করে দেয়।
ব্ল্যাক হোলের এই দিগন্তকে বলা হয় ইভেন্ট হরাইজন। এই ইভেন্ট হরাইজনের দিকে যতই এগোনো হয়, ততই যেন সব কিছু স্থবির হয়ে যায়। এটি মানুষের কল্পনাকে ছুঁয়ে যাওয়া এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা, যেখানে বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, আরও গভীরভাবে এই ব্ল্যাক হোলটির রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হবে।
মহাকাশের এই বিশাল এবং রহস্যময় ব্ল্যাক হোলটি শুধু বিজ্ঞানীদের জন্য নয়, পুরো মানবজাতির জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।