ঠিকঠাক মত ভোটার নিবন্ধন করার পরও দেখা যায়, অনেকেই NID Smart Card পান নি। দেশের বহু মানুষের প্রশ্ন, কেন আমাদের স্মার্ট কার্ড হয়নি, কখন পাব, এ বিষয়ে আমাদের করণীয় কি ? তাই এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনে স্মার্ট কার্ড কিভাবে পাবেন এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
স্মার্ট কার্ড কিভাবে পাবেন ? How to get Smart Card?
বর্তমানে দেশে প্রায় সাড়ে ৭ কোটির বেশি ভোটার আছেন। এদের মধ্যে অনেকেই এখনো তাদের স্মার্ট কার্ড পাননি। বেশিরভাগ মানুষই জানেন না স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করার পদ্ধতি সম্পর্কে যারা স্মার্ট কার্ড পাননি, জেনে নিন কখন ও কিভাবে পাবেন। যারা পুরাতন ভোটার তারা ১০ আঙ্গুলের ছাপ ও আইরিশের বায়োমেট্রিক তথ্য দিয়ে স্মার্ট কার্ড পেতে পারেন।অনলাইনে আইডি কার্ড বের করার জন্য, নিচে দেওয়া সহজ ধাপগুলো অনুসরণ করুন:
- ভিজিট করুন নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট NID Account Registration
- NID Number, Date of Birth এবং Captcha Code লিখে সাবমিট করুন;
- ঠিকানা Select করুন এবং Mobile Number ও Face Verification করুন;
- Password সেট করুন এবং লগইন করে আইডি কার্ড ডাউনলোড করুন।
আইডি কার্ড দুটি পদ্ধতিতে বের করা যায়, সেগুলি হল :
- ভোটার নিবন্ধন স্লিপ নাম্বার দিয়ে এবং
- NID নাম্বার দিয়ে।
স্মার্ট কার্ড না পাওয়ার বিভিন্ন কারণ, There are various reasons for not getting a smart card :
এমন অনেকেই আছেন যারা এখনও অবধি স্মারকার্ড পান নি। এর নেপথ্যে বিভিন্ন কারণ রয়েছে। সেগুলি হল :
- ২০১৬ সালের পূর্বের ভোটার :
২০১৬ সালের পূর্ব দিকে দেশে স্মার্ট আইডি কার্ড দেওয়া হত না। তখন সকল ভোটারকে লেমিনেট করা আইডি কার্ডই প্রদান করা হত। তখন ভোটার নিবন্ধন করার সময় কোনো ব্যক্তিরই ১০ আঙ্গুলের ছাপ, চোখের আইরিশ এবং Blood Group ইত্যাদির তথ্য নেয়া হয়নি।
এদিকে এসব তথ্য ছাড়া বেশিরভাগ মানুষেরই Smart NID Card প্রিন্ট করা যাচ্ছে না, তাই যারা ২০১৬ সালের পূর্বের ভোটার আছেন, তারা এখনো স্মার্ট কার্ড পাননি।এক্ষেত্রে অনেকেরই মনে প্রশ্ন আছে যে, ২০১৬ সালের পূর্বের ভোটারদের স্মার্টকার্ড করণীয় কি?
জেনে নিন যে যদি কারো জরুরী ভিত্তিতে Smart Card প্রয়োজন হয়ে থাকে, তখন আপনি উপজেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও তথ্য নিতে পারেন।
এছাড়া কেউ চাইলে সরাসরি জাতীয় পরিচয় পত্র অনুবিভাগ, আগারগাঁও, ঢাকাতে যোগাযোগ করে সেখানে নিজের ১০ আঙ্গুলের ছাপ ও প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে Smart Card এর জন্য পুনরায় আবেদন করতে পারেন।
- ২০১৬ সালের পরের ভোটারদের স্মার্ট কার্ড :
২০১৬ সালের পর যারা ভোটার নিবন্ধন করেছেন, তাদের প্রায় বেশিরভাগ মানুষই স্মার্ট কার্ড পেয়ে গেছেন। তবে এদের মধ্যেও যারা কার্ড পাননি তাদের ক্ষেত্রে ২টি সমস্যা হতে পারে।
তাদের নিবন্ধনে হয়তো ১) অপরিপূর্ণ বা ভুল তথ্য ছিল অথবা ২) স্মার্ট কার্ড প্রিন্ট জটিলতার কারণে প্রিন্ট হয়নি।উল্লেখ্য অপরিপূর্ণ বা ভুল তথ্য বলতে, কিছু ভোটারের এনআইডি তৈরি হলেও তাদের প্রদান করা তথ্যে Blood Group বা অন্য কোন প্রয়োজনীয় তথ্যের কমতি থাকতে পারে।
এসব কারণেও Smart Card প্রিন্ট হওয়া থেকে বাদ পড়ে যেতে পারে।দেশের সব নাগরিককে ২০১৬ সাল থেকে Smart Card দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়।
কিন্তু তবুও; সামর্থ্য, কাঁচামাল ও প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে প্রায় Smart Card Print প্রক্রিয়া বিভিন্ন সময় বন্ধ থাকতে দেখা যায়। এইসব কারণেও অনেক ভোটার সঠিক সময় তাদের স্মার্ট কার্ড পাননি।
স্মার্ট কার্ড কখন পাবেন চেক করুন, Check when you will get smart card :
শুধুমাত্র একটি SMS পাঠিয়ে অথবা অনলাইন থেকেই আপনারা খুব সহজে জানতে পারবেন যে আপনার স্মার্ট কার্ড কখন পাবেন।
- অনলাইনে স্মার্ট কার্ড এর স্ট্যাটাস চেক :
অনলাইনে স্মার্ট কার্ড এর স্ট্যাটাস চেক করতে ভিজিট করুন https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/card-status/ এই লিংকে। এখানে গিয়ে প্রদত্ত পেজে আপনার NID বা Form Number এবং জন্ম তারিখ ইত্যাদি লিখুন। এরপর একটি ক্যাপচা কোড আসবে, সেটি পূরণ করে Submit লেখা বাটনে ক্লিক করে দিলে Smart Card Status সংক্রান্ত তথ্য আপনার সামনে এসে পড়বে। এভাবে আপনি স্মার্ট কার্ড এর স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন।
- SMS দিয়ে স্মার্ট কার্ড চেক:
এসএমএস এর মাধ্যমে স্মার্ট কার্ড সম্পর্কে জানতে হলে মোবাইলের মেসেজ অপশন থেকে লিখুন SC NID NID-No, তারপর 105 নম্বরে Send করে দিন। আপনার এই এসএমএস এর ফিরতি মেসেজে আপনার NID নম্বর ও Smart Card Status সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়া হবে। কেউ ফরম নম্বর দিয়ে স্মার্ট কার্ড যদি চেক করতে চায় তবে SMS এ লিখুন SC F Form-No D 01-01-2001 এবং ১০৫ নম্বরে Send করুন।
স্মার্ট কার্ড পেতে করণীয় বিষয়সমূহ, Things to do to get Smart Card :
নতুন ভোটার যারা এখনো স্মার্ট কার্ড পাননি তারা চাইলে অনলাইন থেকে এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন। এটি স্মার্ট কার্ড হিসেবেই ব্যবহার করা যাবে এবং এর সাহায্যে সব কাজ করতে পারবেন।
অন্যদিকে পুরাতন ভোটারদের মধ্যে যারা Smart Card পাননি বা Laminated ID Card ও পাননি, তাদের ক্ষেত্রে প্রথমে উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে NID নম্বর জেনে নিতে হবে।
এরপর ভোটার আইডি কার্ড রিইস্যুর অর্থাৎ পুনরায় তৈরির জন্য আবেদন করতে পারেন। এর জন্য, প্রথমে আপনাকে পুলিশ স্টেশনে জাতীয় পরিচয় পত্র হারানো বা নষ্ট হওয়া নিয়ে একটি জিডি করতে হবে, এরপর বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে ফি দিয়ে অনলাইনে আবেদন করে নিতে হবে।
আবেদন অনুমোদন হয়ে গেলে, অনলাইন থেকে আইডি কার্ড সহজেই ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
জরুরী ভিত্তিতে স্মার্ট কার্ড প্রয়োজন হলে কি করবেন জেনে নিন, Know what to do if you need a smart card urgently :
জরুরী ভিত্তিতে কারও যদি Smart NID Card প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে, প্রথমে আপনি যে এলাকায় ভোটার, সেই এলাকার উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে খোঁজ নিন যে কেন আপনি স্মার্ট কার্ড পাননি।যদি সেখান থেকে জানতে পারেন যে স্মার্ট কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার কোন তথ্য কম আছে; যেমন, ১০ আঙ্গুলের ছাপ, চোখের আইরিশ ও রক্তের গ্রুপ ইত্যাদি; এসব তথ্য সংশোধন করার জন্য আবেদন করে স্মার্ট কার্ডে তথ্য সমূহ যুক্ত করতে হবে। এর জন্য উপজেলা নির্বাচন অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী জরুরী পদক্ষেপ নিন।
স্মার্ট কার্ড নিতে কত টাকা লাগে? How much does it cost to get a smart card?
স্মার্ট কার্ডের মধ্যে যেকোনো তথ্য পরিবর্তন করতে হলে প্রথমবার আবেদনের সময় ২৩০ টাকা, দ্বিতীয়বার ৩৪৫ টাকা এবং তারপর থেকে প্রতিবার আবেদনের জন্য ৫৭৫ টাকা জমা দিতে হবে।
জাতীয় পরিচয় পত্র হারিয়ে গেলে কি করবেন? What to do if the national identity card is lost?
জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে প্রথমে যেখানে হারিয়েছে তার নিকটস্থ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করতে হবে। তারপর জিডি কপি আপলোড করে অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র রিইস্যুর আবেদন করতে হবে।
পরিশেষে, Conclusion :
বাংলাদেশের গ্রামে বা বিভিন্ন এলাকা ভিত্তিক স্মার্ট কার্ড বিতরণ ক্যাম্পেইন করা হয়, এর মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে স্মার্ট আইডি কার্ড প্রদান করা হয়। তবে কারও যদি স্মার্ট কার্ড না পেয়ে থাকেন তবে উপরে উল্লেখিত পদ্ধতিতে তা সংগ্রহ করতে পারবেন। আশা করি আজকের এই প্রতিবেদনে আপনারা স্মার্ট কার্ড কিভাবে পাবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
Frequently Asked Questions :
প্রথমবার আবেদনের সময় ২৩০ টাকা, দ্বিতীয়বার ৩৪৫ টাকা এবং তারপর থেকে প্রতিবার আবেদনের জন্য ৫৭৫ টাকা জমা দিতে হবে।
নিকটস্থ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করতে হবে। তারপর জিডি কপি আপলোড করে অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র রিইস্যুর আবেদন করতে হবে।