আমরা প্রতিদিন যেসব কয়েন হাতে নিই, কখনো কি খেয়াল করেছি সেগুলোর গায়ে থাকা ছোট্ট ছোট্ট চিহ্নগুলোর দিকে? কখনো বিন্দু, কখনো তারকা, কখনো আবার হীরের মতো চিহ্ন—এই রহস্যময় প্রতীকগুলো যে কেবল ডিজাইনের অংশ নয়, তা জানলে অবাক হবেন!
এগুলোই হলো “মিন্ট মার্ক”—মুদ্রার গায়ে থাকা এক ছোট্ট প্রতীক, যা জানিয়ে দেয়, কয়েনটি কোন টাঁকশাল (Mint) থেকে এসেছে।
চলুন খুঁজে বের করি, এই মিন্ট মার্কের লুকোনো অর্থগুলো!
মিন্ট মার্ক কী?

মিন্ট মার্ক হচ্ছে একটি ক্ষুদ্র প্রতীক বা অক্ষর, যা মুদ্রার গায়ে খোদাই করা থাকে। এটি কয়েনটির উৎপাদনস্থল তথা টাঁকশাল চিহ্নিত করে; অর্থাৎ, আপনার পকেটে থাকা ১০ টাকার কয়েনটি ঠিক কোন শহরে তৈরি হয়েছে, তা বলে দেয় এই ছোট্ট চিহ্নটি!
ভারতের কয়েনে থাকা মিন্ট মার্কগুলো কী বলে?
ভারতে বর্তমানে ১, ২, ৫, ১০ এবং ২০ টাকার কয়েন প্রচলিত রয়েছে। এই কয়েনগুলোর গায়ে থাকা প্রতীক দেখে সহজেই বুঝে নেওয়া যায়, কোন টাঁকশালে সেটি তৈরি হয়েছে।
১. মুম্বই টাঁকশাল (স্থাপিত: ১৮২৯)
- চিহ্ন: ⧫ (হীরের চিহ্ন)
- কখনও কখনও ‘B’ বা ‘M’ অক্ষরও দেখা যায়।
- বিশেষত্ব: সবচেয়ে বেশি কয়েন উৎপাদন করে।
২. হায়দরাবাদ টাঁকশাল (স্থাপিত: ১৮০৩)
- চিহ্ন: ★ (তারকা চিহ্ন)
- বিশেষত্ব: একাধিক ধাতুর মুদ্রা তৈরি করে এই টাঁকশাল।
৩. নয়ডা টাঁকশাল (স্থাপিত: ১৯৮৮)
- চিহ্ন: • (বিন্দু)
- বিশেষত্ব: তুলনামূলক নতুন, আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ।
৪. কলকাতা টাঁকশাল (স্থাপিত: ১৭৫৭)
- চিহ্ন: কোনো চিহ্ন নেই, মাঝেমধ্যে ‘C’ দেখা যায়
- বিশেষত্ব: এটি ভারতের সবচেয়ে পুরনো টাঁকশাল।
কেন এত গুরুত্বপূর্ণ মিন্ট মার্ক?

সংগ্রাহকদের কাছে মিন্ট মার্ক বিশাল মূল্যবান। কারণ:
- এক বছরেই একই মুদ্রা, কিন্তু ভিন্ন টাঁকশাল থেকে তৈরি হলে দামেও বড় পার্থক্য হতে পারে।
- অনেক সময় নির্দিষ্ট টাঁকশালের কয়েন খুব সীমিত সংখ্যায় তৈরি হয়, যা একে দুর্লভ করে তোলে।
- কয়েনের ইতিহাস, উৎপাদন সংখ্যা, বৈচিত্র—সবই বোঝা যায় এই চিহ্ন দেখেই!
আপনার পকেটেই লুকিয়ে থাকতে পারে একটি রত্ন!
এখনই নিজের পকেটে বা মানিব্যাগে থাকা কয়েনগুলো ভালো করে দেখুন। খুঁজে বের করুন—তারকা আছে নাকি হীরা? নাকি কিছুই নেই?
হতে পারে আপনি হাতে ধরে আছেন ১৭৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত কলকাতা টাঁকশালে তৈরি কোনো বিশেষ কয়েন!
ছোট্ট এক চিহ্ন, আর তাতেই লুকিয়ে আছে এক বিশাল ইতিহাস!
আপনার কয়েন কী বলছে? এখনই দেখুন, আর বন্ধুদের সঙ্গেও শেয়ার করুন এই মজার তথ্য!