বর্ধমান রাজবাড়ির গোপন সুড়ঙ্গ—কী আছে সেখানে?

রাজবাড়ীর মহন্ত অস্থল

ঐতিহাসিক বর্ধমানে বহু ঐতিহাসিক কাহিনী প্রচলিত। এর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হল রাজবাড়ীর গোপন সুড়ঙ্গ। তবে এই সুড়ঙ্গ রাজবাড়ীর কোনো ঘরে নয় বরং এটি রয়েছে রাজবাড়ীর মহন্ত অস্থল বৈষ্ণব মঠের গর্ভগৃহের নিচে।

বর্ধমানের সুদৃশ এই রাজবাড়ী ও মঠ পরিদর্শনে বহু ভ্রমণপিপাসু ভিড় করেন। তবে অনেকেই এই সুরঙ্গকে ঘিরে থাকা ঘটনা সম্পর্কে জানেন না।

বর্ধমান রাজবাড়ি

বর্ধমানের ঐতিহাসিক স্থানগুলির অন্যতম হল এই মহন্ত অস্থল বৈষ্ণব মঠ। স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, সম্পত্তির লোভে এই মঠে ঘটেছিল এক জঘন্য হত্যাকান্ড। ১৯৭১ সালে খুন মঠের মহন্ত সরবেশ্বর স্বরং দেব।

এক সময় বন্ধ হয়ে যায় এই ধর্মীয় মঠ। মঠের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি চুরি করে নেয় দুষ্কৃতীরা। মঠের মধ্যে ছিল অপরূপ ঝর্ণা, উপরে ছিল বেলজিয়ামের ঝালর। চূড়ায় ছিল সোনার পাত মোড়া কলস। এইসবকিছু মঠকে দিয়েছিলেন বর্ধমানের রাজা কীর্তিচাঁদ। কিন্তু আজ সে সবই লুঠ হয়ে গেছে।

পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই মঠের গর্ভগৃহের নিচে ছিল একটি গোপন সুড়ঙ্গ। ঘরটিতে মঠের মহন্ত মহারাজরা প্রায়ই ধ্যান করতেন। ওই ঘরের ভেতরে নিচে দিকে নেমে যাওয়ার জন্য ধাপে ধাপে সিঁড়ি রয়েছে, যেখানে পাওয়া যায় অনেক সিন্দুক। অনুমান করা হয় মঠের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি ঐখানে রাখা হত।

গোপন সুড়ঙ্গ

ওই বহুমূল্য সম্পদের লোভে পড়ে গিয়েছিলেন বহু স্বার্থান্বেষী মানুষ। এর মধ্যে মঠের বেশ কিছু মহন্তও ছিলেন। এই সম্পদ আত্মসাতের জন্য ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল, যার শিকার হয়েছিলেন মঠাধ্যক্ষ মহন্ত সরবেশ্বর স্বরং দেব।

বর্তমানে এই মঠের সুড়ঙ্গটি বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সিন্দুকগুলো তার ভেতরেই রয়েছে। তবে এই সুড়ঙ্গ দেখার জন্য অনেকেরই কৌতুহল রয়েছে। তাই প্রতিবছর এই রাজবাড়ী এবং মঠে পর্যটকদের আনাগোনা দেখা যায়। বর্ধমান স্টেশনে এসে সেখান থেকে রাজগঞ্জ গেলেই পেয়ে যাবেন এই মঠ। স্টেশন থেকে এটি মাত্র ৪-৫ কিমি দূরত্বে অবস্থিত। বর্ধমান গেলে অবশ্যই একবার এই স্থান পরিদর্শন করতে পারেন।

RIma Sinha

Rima Sinha is working as a writer and also as a journalist. she got her bachelor of arts degree from Tripura University. She has also completed Master of Arts in Journalism and mass communication from Chandigarh University.

Recent Posts