ভারতীয় রেল, বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্ক, প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ যাত্রীকে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছে দেয়। ১৩,০০০-র বেশি ট্রেন এবং ৭,৩০৮টিরও বেশি স্টেশন নিয়ে এই রেল ব্যবস্থাই ভারতের পরিবহণ ব্যবস্থার মেরুদণ্ড। কিন্তু এই বিশাল রেল জগতে এমন কিছু রেল স্টেশন রয়েছে, যাদের নিয়ে আমরা খুব কমই জানি। আজ তেমনই এক রেকর্ডবুকে নাম তোলা স্টেশনের কথা জানাব আমরা।
দুনিয়ার দীর্ঘতম প্ল্যাটফর্ম কর্ণাটকে!

বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা রেল প্ল্যাটফর্ম এখন আর পশ্চিমবঙ্গের খড়গপুর নয়, সেটি স্থান পেয়েছে কর্ণাটকের শ্রী সিদ্ধারূধা স্বামীজি হুবলি স্টেশন-এ। দীর্ঘ ১,৫০৭ মিটার এই প্ল্যাটফর্মটি নির্মাণ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ২০ কোটি টাকা। হুব্বলি স্টেশনটি কর্ণাটকের অন্যতম ব্যস্ত রেলজংশন, যা বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, মুম্বই এবং গোয়ার মতো বড় শহরের সঙ্গে সংযুক্ত।
এই দীর্ঘ প্ল্যাটফর্মটির নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর ২০২৩ সালের ১২ মার্চ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এর উদ্বোধন করেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই স্টেশন ইতিমধ্যেই গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ স্থান করে নিয়েছে “বিশ্বের দীর্ঘতম রেলওয়ে প্ল্যাটফর্ম” হিসেবে।
খড়গপুর ও গোরক্ষপুরের রেকর্ড ছাপিয়ে গেল হুব্বলি
এর আগে দীর্ঘতম প্ল্যাটফর্মের রেকর্ড ছিল পশ্চিমবঙ্গের খড়গপুর স্টেশন-এর দখলে, যার দৈর্ঘ্য ছিল ১০৭২.৫ মিটার। পরে সেটি হারায় গোরক্ষপুর জংশন-এর কাছে, যেখানে প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য দাঁড়ায় প্রায় ১,৩৬৬ মিটার। গোরক্ষপুর স্টেশনের ওই দীর্ঘ প্ল্যাটফর্মে অনায়াসে ২৬ বগির দু’টি ট্রেন পাশাপাশি দাঁড় করানো যায়। প্রতিদিন প্রায় ১৭০টির বেশি ট্রেন যাতায়াত করে এই স্টেশন দিয়ে, যা এটিকে অন্যতম ব্যস্ত স্টেশনেও পরিণত করেছে।

রেল পরিকাঠামোর উন্নয়নে গতি :
শুধু দীর্ঘতম প্ল্যাটফর্ম নয়, কর্ণাটকের হুব্বলি স্টেশন ঘিরে তৈরি হয়েছে একটি আধুনিক এক্সপ্রেসওয়ে যার দৈর্ঘ্য ১১৮ কিলোমিটার এবং নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৮,৪৮০ কোটি টাকা। এর ফলে বেঙ্গালুরু-মহীশূর রুটে যাত্রার সময় ৩ ঘণ্টা থেকে কমে গিয়ে দাঁড়াবে মাত্র ৭৫ মিনিটে।
এই রকম অসাধারণ রেল পরিকাঠামো ভারতকে বিশ্বমঞ্চে আরও উঁচুতে তুলছে। আপনি যদি রেল ভ্রমণ পছন্দ করেন, তবে একবার ঘুরে আসতেই পারেন এই গিনেস-স্বীকৃত হুব্বলি স্টেশন থেকে।