পাসপোর্ট আবেদনকারীদের জন্য বড়সড় স্বস্তির খবর! কেন্দ্রীয় সরকার পাসপোর্ট সংক্রান্ত নিয়মে এনেছে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন। এখন থেকে পাসপোর্টে স্বামী বা স্ত্রীর নাম অন্তর্ভুক্ত করতে আর প্রয়োজন হবে না বিয়ের শংসাপত্রের; বরং, বিকল্প হিসেবে গ্রাহকরা ব্যবহার করতে পারবেন ‘অ্যানেক্সার জে’ নামে একটি ফর্ম, যা বিদেশমন্ত্রক নতুন নিয়ম অনুযায়ী বৈধ ঘোষণা করেছে।
কী বলছেন আধিকারিকেরা?

পুনের আঞ্চলিক পাসপোর্ট আধিকারিক অর্জুন দেওরের মতে, এই নতুন নিয়ম পাসপোর্ট সংশোধনের প্রক্রিয়া আরও সহজ এবং নাগালের মধ্যে এনে দিয়েছে। টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে তিনি জানান, “স্বামী এবং স্ত্রীর যৌথ স্বাক্ষরিত ছবি এখন বিবাহের শংসাপত্রের বিকল্প হিসেবে গ্রহণ করা হচ্ছে, যা আগে অনেক আবেদনকারীর পক্ষে কঠিন হয়ে উঠত।”
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে আঞ্চলিক বৈষম্যও অনেকটাই দূর হবে; যেমন, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন সাধারণ, কিন্তু উত্তর ভারতের অনেক জায়গায় এখনও বিবাহ নিবন্ধনের চল নেই; ফলে সেখানে শংসাপত্র না থাকায় পাসপোর্টে নাম অন্তর্ভুক্তি কঠিন হয়ে উঠত।
‘অ্যানেক্সার জে’ ফর্ম কীভাবে কাজ করে?
নতুন এই নিয়ম অনুযায়ী, আবেদনকারীদের একটি যৌথ ঘোষণা ফর্ম পূরণ করতে হবে, যেখানে নিচের তথ্যগুলি উল্লেখ থাকতে হবে—
- আবেদনকারীর নাম ও বাসস্থান
- বিবাহিত অবস্থার নিশ্চয়তা
- স্বামী বা স্ত্রীর নাম
- উভয়ের যৌথ ছবি (ফর্মে নির্ধারিত স্থানে)
- স্বাক্ষরের স্থান ও তারিখ
- স্বামী/স্ত্রীর স্বাক্ষর
এছাড়াও, অতিরিক্ত তথ্য হিসেবে উল্লেখ করতে হবে—
- উভয় পক্ষের আধার নম্বর
- ভোটার আইডি নম্বর
- পাসপোর্ট নম্বর (যদি আগে থেকে থাকে)
ফর্মে থাকা স্বীকারোক্তি অংশে নিশ্চিত করতে হবে, আবেদনকারী যে তথ্য দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ সঠিক ও বিশ্বাসযোগ্য।
বিবাহবিচ্ছেদ বা নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কী করণীয়?

বিদেশ মন্ত্রকের সূত্র জানাচ্ছে, বিবাহবিচ্ছেদ হলে পাসপোর্ট থেকে স্বামী বা স্ত্রীর নাম অবশ্যই মুছে ফেলতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথিপত্রের মধ্যে রয়েছে—
- বিবাহবিচ্ছেদ বা মৃত্যুর শংসাপত্র (প্রথম স্ত্রীর ক্ষেত্রে)
- পুনর্বিবাহের শংসাপত্র বা যৌথ ছবি
- কিউআর কোড যুক্ত আধার যাচাইকরণ-সহ নতুন পরিচয়পত্র
সরকারের এই নতুন সিদ্ধান্ত পাসপোর্ট প্রক্রিয়াকে অনেকটাই সহজ, সময়সাপেক্ষ এবং জনবান্ধব করে তুলেছে। অনেকেই যাঁরা নানা কারণে বিয়ের শংসাপত্র সংগ্রহ করতে পারছিলেন না, তাঁদের জন্য এটা এক বড় স্বস্তির খবর। এখন শুধু যৌথ ঘোষণা ও যৌথ ছবি দিয়েই স্বামী/স্ত্রীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব—এটা এক বড়সড় ইতিবাচক পরিবর্তন।