আপনি কি সন্তানের পরীক্ষার পর বেড়ানোর পরিকল্পনা করছেন? গরমের এই সময়টাতে যদি শান্তি এবং শীতল পরিবেশে সময় কাটাতে চান, তবে পাহাড়ি এলাকা হতে পারে আদর্শ গন্তব্য। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা কিছু অসংখ্য শৈলশহরের মধ্যে কিছু জায়গা এমন আছে, যা তুলনামূলকভাবে কম পরিচিত হলেও ভ্রমণপিপাসুদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয়। চলুন, দেখে নিই এমন পাঁচটি শৈলশহরের কথা, যেখানে আপনি পেতে পারেন প্রশান্তির স্নিগ্ধ অনুভূতি।
১. পনমুডি (কেরল)

পশ্চিমঘাট পর্বতমালার প্রান্তে অবস্থিত কেরলের পনমুডি এক অসাধারণ শৈলশহর। কেরলের মুন্নার যেমন পরিচিত, তেমনি পনমুডি এক শান্তিপূর্ণ স্থান যেখানে আপনি নিখুঁত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। এখানকার মীনমুত্তি জলপ্রপাত, উপত্যকা, অরণ্য এবং কুয়াশার দৃশ্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১১০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই শৈলশহরের আবহাওয়া সারা বছরই মনোরম থাকে, বিশেষ করে গরমের সময়ে।
কীভাবে যাবেন?
তিরুঅনন্তপুরম শহর থেকে ৫৩ কিলোমিটার দূরে পনমুডি পৌঁছাতে বাস বা গাড়ি ব্যবহার করা যেতে পারে। তিরুঅনন্তপুরমে বিমানবন্দর এবং রেল স্টেশনও রয়েছে।
২. পাব্বর ভ্যালি (হিমাচল প্রদেশ)

হিমাচল প্রদেশের শিমলা থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পাব্বর ভ্যালি একেবারেই কম পরিচিত একটি স্থান, তবে এর সৌন্দর্য সত্যিই অসাধারণ। দেবদারু, পাইন এবং ওক বৃক্ষ দ্বারা ঘেরা এই উপত্যকার মধ্যে প্রবাহিত পাব্বর নদী এবং এর চারপাশে ছড়িয়ে থাকা গ্রাম্য আঞ্চলিকতা আপনাকে প্রকৃতির এক অনবদ্য অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে হাঁটলে, আপনি পাবেন বিশুদ্ধ প্রকৃতির সঙ্গে মিলিত হওয়ার এক দারুণ সুযোগ।
কীভাবে যাবেন?
পাব্বর ভ্যালি যেতে শিমলা, চণ্ডীগড় অথবা দিল্লি থেকে সড়কপথে পৌঁছানো যেতে পারে।
৩. হাফলং (অসম)

অসমের ডিমাহাসাও জেলার হাফলং এক অসাধারণ শৈলশহর। এই স্থানটি তার সবুজ পাহাড়, ঝিল এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দিয়ে আপনার মন মুগ্ধ করবে। হাফলং শহরের মাঝখানে থাকা ঝিলের শান্ত পরিবেশ এবং পাহাড়ি দৃশ্য দেখতে দেখতে আপনিও যেন প্রকৃতির সঙ্গে এক হয়ে যাবেন। পাখি পর্যবেক্ষণের শখ থাকলে, ঝটিংগা আপনাকে চমকে দিতে পারে। এছাড়া এখানকার স্থানীয় বাজার এবং খাবারের স্বাদও এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
কীভাবে যাবেন?
হাওড়া থেকে ট্রেনে নিউ হাফলং স্টেশন পৌঁছাতে পারবেন। শিলচর বিমানবন্দর থেকে ১০৮ কিলোমিটার দূরে হাফলং অবস্থিত।
৪. মাউন্ট আবু (রাজস্থান)

গরমে রাজস্থান সাধারণত খুবই উষ্ণ থাকে, তবে মাউন্ট আবু এখানে একটি উত্তম শৈলশহর। এই শৈলশহরের মনোরম আবহাওয়া, পবিত্র দিলওয়াড়া মন্দির, নাক্কি হ্রদ, সানসেট পয়েন্ট, গুরু শিখর ইত্যাদি দর্শনীয় স্থানগুলো আপনাকে অন্য একটি দুনিয়ায় নিয়ে যাবে। মাউন্ট আবু থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত অচলগড় দুর্গও দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
কীভাবে যাবেন?
উদয়পুর বিমানবন্দর থেকে মাউন্ট আবু যেতে পারেন। এছাড়া, দিল্লি বা অন্য বড় শহর থেকে সড়কপথেও যাওয়া যায়।
৫. ধনৌল্টি (উত্তরাখণ্ড)

উত্তরাখণ্ডের ধনৌল্টি এক আদর্শ পাহাড়ি স্থান। মুসৌরি থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই জায়গা দেবদারু ও পাইন গাছের জন্য বিখ্যাত। প্রকৃতির সান্নিধ্যে সময় কাটাতে চাইলে ধনৌল্টি হতে পারে আপনার পরবর্তী গন্তব্য। এখানকার নৈসর্গিক সৌন্দর্য, রডোডেনড্রনের গাছ এবং শান্ত পরিবেশে আপনি এক চমৎকার সময় কাটাতে পারবেন।
কীভাবে যাবেন?
দিল্লি থেকে সড়কপথে কিংবা হৃষীকেশ বা দেহরাদূন থেকে গাড়িতে ধনৌল্টি পৌঁছানো যেতে পারে।
আপনার সন্তানের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর এসব শৈলশহরগুলোর মধ্যে যেকোনো একটিতে সফর করতে পারেন। প্রতিটি স্থান আপনাকে তার নিজস্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্যে এক অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করবে।