শিরোনাম দেখে অনেকেই হয়তো বিভিন্ন সবজির নাম এবং তাদের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে ভাবছেন। কিন্তু অনেকেই হয়তো অনুমান করতে পারছেন না সেই নাম। এক্ষেত্রে ইঙ্গিত হিসেবে বলা যায়, এই জাদুকরী সবজির নামটা শুনলেই অনেকে হয়তো মুখ বাঁকান এর তীব্র তেতো স্বাদের জন্য। কিন্তু যারা এর গুণাগুণ সম্পর্কে জানেন, তাদের কাছে এই তেতো সবজিটি যেন এক জাদুর কাঠি!
হ্যাঁ , অনেকেই হয়তো বুঝতে পারছেন যে এখানে করলার কথা হচ্ছে। প্রচলিত বিশ্বাস আছে, যারা নিয়মিত করলা খায়, রোগ নাকি তাদের আশপাশেও ঘেঁষতে পারে না। এই বিশ্বাস অমূলক নয়, কারণ করলার স্বাস্থ্য উপকারিতা এতটাই ব্যাপক যে এটিকে সুপারফুড বললেও অত্যুক্তি হবে না।
এক ঝলকে করলার পুষ্টিগুণ:
এই তেতো সবজিটি স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, এবং ভিটামিন A, C ও E। এছাড়াও, ক্যালসিয়াম ও আয়রনের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থেরও এটি একটি দারুণ উৎস। এত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হওয়ায় করলা আমাদের শরীরকে বহু রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে।
কোন কোন রোগকে দূরে রাখে করলা?

যারা নিয়মিত করলা খান, কয়েকটি গুরুতর রোগ তাদের থেকে দূরে থাকে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, করলার ম্যাজিক:
- ডায়াবেটিস: করলার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য গুণ হলো এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে দারুণ কার্যকরী। এতে ইনসুলিনের মতো এক ধরনের প্রোটিন পাওয়া যায়, যাকে পলিপেপটাইড পি বলা হয়। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সরাসরি সাহায্য করে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।
- পাচনতন্ত্রের সমস্যা: করলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। এই ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে মসৃণ রাখে এবং পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য বা অন্যান্য পাচন সংক্রান্ত সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে।
- লিভার ও হার্টের স্বাস্থ্য: করলা লিভারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং লিভার সংক্রান্ত রোগ প্রতিরোধ করে। একই সাথে, এটি খারাপ কোলেস্টেরলের (LDL) মাত্রা কমাতে দারুণ কার্যকর। ফলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের মতো হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়, যা হার্টের স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখে।
- ত্বকের সুরক্ষা: করলায় থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি ত্বককে সতেজ ও উজ্জ্বল রাখে এবং বিভিন্ন ত্বকের রোগ প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে।
সুতরাং, তেতো হলেও করলাকে অবহেলা করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এই সবজিটিকে আপনার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে আপনিও পেতে পারেন সুস্থ ও নীরোগ জীবন।