করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর ফের আরেকটি মারণ রোগের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। রোগটির নাম গুলেইন বারি সিনড্রোমের (Guillain-Barre syndrome)। এই রোগটি স্নায়ু তন্ত্রের একটি বিরল সমস্যা, যা শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভুলবশত স্নায়ুর উপর আক্রমণ করার কারণে হয়। এর ফলে মাংসপেশির দুর্বলতা থেকে শুরু করে প্যারালাইসিস পর্যন্ত হতে পারে।
গুলেইন বারি সিনড্রোমের কারণ :
যদিও এই রোগের সঠিক কারণ এখনও অজানা, তবে মনে করা হয় যে কিছু ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, যেমন –
- খাদ্যজনিত অসুস্থতা
- শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ
- জিআই ট্র্যাক্টের সংক্রমণ
ইত্যাদি কারণে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে, যার ফলে গুলেইন বারি সিনড্রোম দেখা যায়।
লক্ষণ :

গুলেইন বারি সিনড্রোমের প্রধান লক্ষণগুলি হলো :
- হাত ও পায়ের দুর্বলতা, যা ধীরে ধীরে শরীরের উপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে
- পা, বাহু এবং মুখের পেশীগুলির পক্ষাঘাত
- কথা বলতে এবং গিলতে অসুবিধা
- ঝিনঝিন বা সুড়সুড়ি অনুভূতি
- মাংসপেশির দুর্বলতা
- ক্লান্তি
- শ্বাসকষ্ট
- হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি
রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা :
এই রোগের লক্ষণ দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। রোগ নির্ণয়ের জন্য স্নায়ু এবং মাংসপেশির কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়। এছাড়াও, স্পাইনাল ফ্লুইড পরীক্ষা এবং অন্যান্য ইমেজিং টেস্টের প্রয়োজন হতে পারে।
গুলেইন বারি সিনড্রোমের চিকিৎসায় সাধারণত ইমিউনোগ্লোবিন থেরাপি বা প্লাজমা এক্সচেঞ্জ ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও, সহায়ক চিকিৎসা হিসেবে শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম এবং ফিজিওথেরাপি প্রয়োজন হতে পারে।
প্রতিরোধ :

গুলেইন বারি সিনড্রোম একটি বিরল রোগ, তাই এর সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য নির্দিষ্ট কিছু উপায় অবলম্বন করা কঠিন। তবে, কিছু সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এই রোগের ঝুঁকি কিছুটা কমানো যায়, যেমন –
- সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা
- পর্যাপ্ত ঘুম
- নিয়মিত ব্যায়াম
- সংক্রমণ এড়াতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা
গুলেইন বারি সিনড্রোম একটি জটিল রোগ, তবে সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা শুরু করলে রোগটি সেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।