মস্তিষ্কের জটিল রোগের চিকিৎসায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল হায়দরাবাদের KIMS (কৃষ্ণা ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস) হাসপাতাল। বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত গামা নাইফ রেডিয়োসার্জারি প্রযুক্তি চালু হওয়ার ফলে এখন থেকে কাটাছেঁড়া ছাড়াই ব্রেন টিউমার বা মস্তিষ্কের অন্যান্য জটিল রোগের চিকিৎসা সম্ভব হবে। এটি নিউরোসার্জিক্যাল চিকিৎসায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
KIMS হাসপাতালের চিফ মেডিক্যাল ডিরেক্টর (CMD) চিকিৎসক বোলিনেনি ভাস্কর রাও এই প্রসঙ্গে বলেন, দক্ষিণ ভারতের সবচেয়ে উন্নত গামা নাইফ KIMS হাসপাতালে নিয়ে আসতে পেরে আমরা গর্বিত। মস্তিষ্কের চিকিৎসায় এটি একটি নতুন বিপ্লব। আমাদের লক্ষ্য হল এই বিশ্বমানের প্রযুক্তি রোগীদের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছে দেওয়া।
গামা নাইফ রেডিয়োসার্জারি কী?
গামা নাইফ একটি স্টেরিওট্যাকটিক রেডিয়োসার্জারি পদ্ধতি। এটি রেডিয়েশন থেরাপির মাধ্যমে মস্তিষ্কের ছোট টিউমার বা অন্যান্য সমস্যার চিকিৎসা করে। এই পদ্ধতির প্রধান সুবিধাগুলি হল:
- কাটাছেঁড়া ছাড়াই অস্ত্রোপচার: এতে কোনো ধরনের চিরা বা রক্তপাত হয় না।
- কম ঝুঁকিপূর্ণ: ঐতিহ্যবাহী অস্ত্রোপচারের তুলনায় এর ঝুঁকি অনেক কম।
- দ্রুত সম্পন্ন: সাধারণত ৩০ মিনিট থেকে ২ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা শেষ হয়।
- ব্যথামুক্ত: রোগী প্রক্রিয়া চলাকালীন জেগে থাকেন এবং কোনো ব্যথা বা যন্ত্রণা অনুভব করেন না।
- স্বল্প হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন: বেশিরভাগ রোগী একদিনেই বাড়ি ফিরে যেতে পারেন এবং দ্রুত স্বাভাবিক কার্যকলাপে ফিরতে পারেন।
- কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: গবেষণায় দেখা গেছে, ২ শতাংশেরও কম রোগী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করেন।

বিশ্বব্যাপী সাফল্য ও পরিসংখ্যান :
গামা নাইফ চালু হওয়ার পর থেকে বিশ্বব্যাপী ১ কোটিরও বেশি রোগী এই চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। শুধুমাত্র ভারতেই প্রতি বছর ৮ হাজারেরও বেশি গামা নাইফ পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হয়। এই পদ্ধতিতে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত সাফল্য পাওয়া যায়।
চিকিৎসার পর ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি রোগী স্বাভাবিক কার্যকলাপে ফিরে আসেন। যেখানে অন্যান্য অস্ত্রোপচারে রোগীরা প্রায়শই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যথা অনুভব করেন, সেখানে এই নিউরোসার্জিক্যাল চিকিৎসায় তা হয় না।
KIMS হায়দরাবাদে এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন নিঃসন্দেহে মস্তিষ্কের জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য এক আশার আলো নিয়ে আসবে।