সম্প্রতি একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, পুরুষদের মধ্যে তিনটি স্বাস্থ্য সমস্যা সবচেয়ে বেশি প্রাণঘাতী। ডেনমার্কের সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষক অ্যাঞ্জেলা চ্যাংয়ের নেতৃত্বে পরিচালিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষরা নারীদের তুলনায় উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং এইচআইভি/এইডস-এ বেশি আক্রান্ত হন এবং এসবের কারণে তাঁদের আয়ু কমে যায়।
১. উচ্চ রক্তচাপ (Hypertension)

উচ্চ রক্তচাপ প্রায়ই কোনো উপসর্গ ছাড়াই শরীরে বাসা বাঁধে, কিন্তু এটি হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষরা নারীদের তুলনায় উচ্চ রক্তচাপে বেশি আক্রান্ত হন এবং চিকিৎসা নিতে পিছিয়ে থাকেন। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, লবণ ও ক্যাফেইন কম খাওয়া, ধূমপান ত্যাগ এবং পর্যাপ্ত ঘুম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
২. টাইপ ২ ডায়াবেটিস (Type 2 Diabetes)

টাইপ ২ ডায়াবেটিস মূলত জীবনযাত্রার কারণে হয়, বিশেষ করে অতিরিক্ত ওজন ও শারীরিক অক্রিয়তার কারণে। পুরুষদের মধ্যে এই রোগের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রেখে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
৩. এইচআইভি/এইডস (HIV/AIDS)

এইচআইভি/এইডস পুরুষদের মধ্যে বেশি ছড়ায়, বিশেষ করে যারা নিরাপদ যৌন সম্পর্ক মেনে চলেন না। যদিও এই রোগ পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য নয়, তবে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার মাধ্যমে রোগী সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন এবং ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, পুরুষরা নারীদের তুলনায় স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে কম আগ্রহী এবং চিকিৎসা নিয়মিতভাবে অনুসরণ করেন না। এছাড়া, পুরুষদের মধ্যে ধূমপান ও মদ্যপানের প্রবণতা বেশি, যা এই রোগগুলোর ঝুঁকি বাড়ায়।
সতর্কতা ও প্রতিরোধের উপায়:
- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও রক্তচাপ পরিমাপ করা।
- স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও শারীরিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি করা।
- ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করা।
- নিরাপদ যৌন সম্পর্ক মেনে চলা ও নিয়মিত এইচআইভি পরীক্ষা করা।
- স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে আগ্রহী হওয়া ও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা।
পুরুষদের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো ও স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে উৎসাহিত করা জরুরি। এই রোগগুলোর প্রতিরোধে সচেতনতা ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।