হাঁপানি বা অ্যাজমা, এমন এক সমস্যা যা কেবল শারীরিক নয়, মানসিক কষ্টও দেয়। অনেকে মনে করেন হাঁপানি থাকলে বুঝি কোনো ব্যায়াম করা যায় না। কিন্তু এটা ভুল ধারণা; বরং কিছু নির্দিষ্ট শারীরিক কসরত হাঁপানির টান কমাতে দারুণ কার্যকর হতে পারে। এমনই এক উপকারী পদ্ধতি হলো যোগাসন। যোগাসনের এমন কিছু ভঙ্গি রয়েছে, যা হাঁপানি বা সিওপিডির মতো সমস্যাগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।
আমাদের ফুসফুসে বাতাস বহনকারী অসংখ্য সূক্ষ্ম নালি থাকে। অ্যালার্জি বা অন্যান্য কারণে এই শ্বাসনালিগুলির পেশি সংকুচিত হয়, যার ফলে বাতাস চলাচল ব্যাহত হয়। শরীর পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় না, শুরু হয় শ্বাসকষ্টসহ নানা শারীরিক সমস্যা। যদি আপনি ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়াতে চান এবং ইনহেলার ব্যবহারের প্রবণতা কমাতে চান, তবে বামদেবাসন নিয়মিত অভ্যাস করা অত্যন্ত জরুরি।
বামদেবাসন করবেন কী ভাবে?

নিয়মিত বামদেবাসন অভ্যাস করলে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং শ্বাসপ্রশ্বাস উন্নত হয়। হাঁপানি রোগীদের জন্য এটি একটি সহজ ও কার্যকরী যোগাসন।
ধাপে ধাপে বামদেবাসন করার পদ্ধতি এখানে দেওয়া হলো:
- প্রস্তুতি: প্রথমে একটি ম্যাটের উপর পদ্মাসনে বসুন। পদ্মাসনে বসতে না পারলে সুখাসনেও বসতে পারেন। মেরুদণ্ড সোজা রাখুন এবং শরীরকে শিথিল করুন।
- প্রথম ধাপ: এবার আপনার শরীরকে ডান দিকে কিছুটা বাঁকান। আপনার ডান হাত দিয়ে ডান পায়ের পাতা ধরুন।
- দ্বিতীয় ধাপ: এরপর আপনার বাম হাতটি মাথার উপর দিয়ে ঘুরিয়ে এনে বাম পায়ের পাতা ধরুন। এই অবস্থায় কিছুক্ষণ ধরে রাখুন এবং গভীরভাবে শ্বাস নিন।
- বিপরীত দিকে পুনরাবৃত্তি: একই পদ্ধতি অনুসরণ করে এবার বিপরীত দিকে আসনটি করুন। অর্থাৎ, শরীরকে বাম দিকে বাঁকিয়ে বাম হাত দিয়ে বাম পায়ের পাতা ধরুন এবং ডান হাতটি মাথার উপর দিয়ে ঘুরিয়ে এনে ডান পায়ের পাতা ধরুন।
- শ্বাস-প্রশ্বাস: এই আসন করার সময় শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখুন। শ্বাসপ্রশ্বাসকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করুন, এতে ফুসফুসের পেশিগুলো আরও শক্তিশালী হবে।
বামদেবাসন নিয়মিত অভ্যাস করলে শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক হয়, ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ে এবং সামগ্রিকভাবে হাঁপানির কষ্ট থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া যায়। তবে, কোনো নতুন ব্যায়াম শুরু করার আগে অবশ্যই একজন যোগ প্রশিক্ষক বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।