পাকা চুলের সমস্যা এখন আর বয়স বাড়ার লক্ষণ নয়, বরং এটি একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু হেয়ার কেয়ার রুটিন নয়, আমাদের খাদ্যাভ্যাস, পরিবেশ দূষণ, এমনকি কিছু স্বাস্থ্যগত সমস্যাও এর জন্য দায়ী। অনেকে শুনেছেন যে লিভারের সমস্যা থাকলে কম বয়সে চুল পেকে যেতে পারে। অত্যধিক মদ্যপান ও ধূমপানও এই সমস্যার কারণ। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে এটি বংশগতও হতে পারে।
অনেকের মনে হয়, চুল পাকলে বুঝি অভিজ্ঞতা বাড়ে। কিন্তু আজকাল অল্প বয়সেই যদি চুল পাকতে শুরু করে, তখন তো চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আজকাল অবশ্য কাঁচা-পাকা চুল স্টাইলে ইন, কিন্তু সেটি ৫০-এর কাছাকাছি বয়সীদের জন্য। তার আগেই চুল পাকতে শুরু করলে অনেকেই হেয়ার কালারের আশ্রয় নেন। তবে বাজারচলতি যে কোনো রং ব্যবহার করা কিন্তু মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়, কারণ এতে চুলের ক্ষতি হতে পারে।
চুলে মেলানিনের পরিমাণ কমে গেলে চুল ধূসর হতে শুরু করে। এই অবস্থায় হেয়ার কালারের উপর ভরসা না রেখে ঘরোয়া টোটকা ব্যবহার করে দেখুন। হেয়ার মাস্ক, হেয়ার অয়েল এবং হেয়ার টনিক ব্যবহার করে আপনি পাকা চুলের সমস্যা অনেকটাই দূর করতে পারেন।

- হেয়ার মাস্ক : একটি কার্যকরী হেয়ার মাস্ক তৈরি করতে, ৩ চামচ আমলকির গুঁড়ো, ৩ চামচ হেনা পাউডার এবং ১ চামচ কফি গুঁড়ো একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এতে পরিমাণমতো জল মিশিয়ে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি আপনার চুলে ভালো করে লাগিয়ে ২ ঘণ্টা রাখুন। এরপর শ্যাম্পু করে নিন। এটি নিয়মিত ব্যবহারে চুলের গোড়া মজবুত হবে এবং পাকা চুলের সমস্যা কমবে।
- হেয়ার অয়েল : চুলের যত্নে কারি পাতা, নারকেল তেল এবং মেথি দানা অত্যন্ত কার্যকরী। একটি পাত্রে নারকেল তেল নিয়ে তাতে কিছু কারি পাতা ও মেথি দানা দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। তেল ঠান্ডা হয়ে গেলে প্রতিদিন স্ক্যাল্প এবং চুলে ভালো করে মালিশ করুন। শ্যাম্পু করার ৩০ মিনিট আগেও এই তেল ব্যবহার করতে পারেন। এই তেল চুলকে পুষ্টি জোগায় এবং অকালে চুল পাকা রোধ করে।
- হেয়ার টনিক : একটি সসপ্যানে এক গ্লাস জল গরম বসান। এতে এক মুঠো কারি পাতা, ১ চামচ মেথি, ১ চামচ কালোজিরে, ১ চামচ চা পাতা (দানা চা) এবং ১ চামচ কফি পাউডার মিশিয়ে দিন। মিশ্রণটি ভালো করে ফুটিয়ে নিন এবং তারপর ছেঁকে নিন। এই হেয়ার টনিকটি আপনার চুলে ভালো করে স্প্রে করুন। এরপর চুল বেঁধে ২ ঘণ্টা রাখুন। সবশেষে শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে দু’দিন এই টনিক ব্যবহার করলে দ্রুত ফল পাবেন।
এই ঘরোয়া টোটকাগুলো নিয়মিত ব্যবহার করে দেখুন। আশা করি, এক মাসের মধ্যেই আপনার পাকা চুলের সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে এবং চুল আবার প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।