রোজ ১ ঘণ্টা ফ্রিজ বন্ধ রাখলে কী হয়? বিশেষজ্ঞদের বিস্ময়কর তথ্য জানলে চমকে যাবেন!

আজকের দিনে এসে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মনে—রোজ ১ ঘণ্টা করে ফ্রিজ বন্ধ রাখলে কি কোনও উপকার হয়? বিশেষ করে যখন বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের কথা ভাবা হচ্ছে বা পুরনো অভ্যাস থেকে এই প্রথা চালিয়ে আসছেন অনেকেই। বিশেষজ্ঞরা কিন্তু একেবারে ভিন্ন কথা বলছেন! চলুন, বিষয়টা বিশদে জেনে নেওয়া যাক।

প্রশ্নটা উঠছে কেন?

প্রথমত, যে কোনও ইলেকট্রনিক পণ্যেরই একটি নির্দিষ্ট ব্যবহারবিধি থাকে, যা নির্মাতারা ম্যানুয়ালের মাধ্যমে জানান। কিন্তু সেই ভাষা অনেকের কাছেই জটিল মনে হয়। ফলে, সঠিক নিয়ম জানার প্রয়োজন থেকেই প্রশ্নের জন্ম।
দ্বিতীয়ত, অভ্যাস। প্রায় ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমাদের দেশে ফ্রিজ ব্যবহারের একটা পুরনো নিয়ম ছিল—দিনের কোনও এক সময়ে কিছুক্ষণ ফ্রিজ বন্ধ রাখা হত, যাতে কম্প্রেসরের আয়ু দীর্ঘ হয়।

কিন্তু সময় বদলেছে, প্রযুক্তি উন্নত হয়েছে। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন আর ফ্রিজ রোজ ১ ঘণ্টা বন্ধ রাখার কোনও প্রয়োজন নেই। কেন? আসুন, কারণগুলি এক এক করে দেখি।

১. তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ

আজকের আধুনিক ফ্রিজে থার্মোস্ট্যাট থাকে, যা প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা বজায় রাখে। ফ্রিজের ভিতর অতিরিক্ত ঠান্ডা হয়ে গেলে কম্প্রেসর আপনা থেকেই বন্ধ হয়ে যায় এবং আবার তাপমাত্রা বেড়ে গেলে চালু হয়। আলাদা করে ফ্রিজ বন্ধ করার প্রয়োজন হয় না।

২. ইলেকট্রিক বিলের উপর প্রভাব

বারে বারে ফ্রিজ বন্ধ ও চালু করলে একটানা চালানোর তুলনায় বেশি বিদ্যুৎ খরচ হতে পারে। ফলে সামান্য হলেও ইলেকট্রিক বিল বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৩. খাবার নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি

ফ্রিজ এক ঘণ্টা বন্ধ থাকলে ভিতরের তাপমাত্রা বাড়তে পারে, ফলে খাবার নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। ঠান্ডার স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ফ্রিজের নিরবিচারে কাজ চালিয়ে যাওয়াই উত্তম।

৪. কম্প্রেসরের ক্ষতি

ঘন ঘন ফ্রিজ চালু ও বন্ধ করলে কম্প্রেসরের উপর চাপ পড়ে। এতে তার আয়ু কমে যেতে পারে। আধুনিক প্রযুক্তির ফ্রিজ নিজে থেকেই চালু ও বন্ধ হওয়ার ব্যবস্থা করে নিয়েছে, তাই এতে মানুষের হস্তক্ষেপ না করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

৫. আর্দ্রতা ও ছত্রাকের সমস্যা

ফ্রিজ বন্ধ থাকলে ভিতরে আর্দ্রতা জমে ছত্রাক তৈরি হতে পারে। যদি পরিষ্কার না করা হয়, তাহলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে। তাই এই ঝুঁকি না নেওয়াই ভালো।

তাহলে কখন ফ্রিজ বন্ধ করা উচিত?

হ্যাঁ, কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে অবশ্যই ফ্রিজ বন্ধ করা উচিত—

• যখন ফ্রিজ স্থানান্তরিত করা হবে।
• যখন ফ্রিজ পরিষ্কার করা হবে।
• যখন দীর্ঘদিন বাড়িতে কেউ থাকবে না।

এই সময় অবশ্যই ফ্রিজের ভেতর থেকে সমস্ত খাবারদাবার বের করে পরিষ্কার করে বন্ধ রাখতে হবে।