আয়াতুল কুরসি পবিত্র কোরআনের শ্রেষ্ঠ আয়াতগুলোর অন্যতম। এই আয়াতকে স্বয়ং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই কোরআনের শ্রেষ্ঠ আয়াত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা এই বিশেষ আয়াত সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
আয়াতুল কুরসি শব্দের অর্থ কি? Meaning of Ayatul Kursi
অর্থ “আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, [তিনি] চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী/সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না ও নিদ্রাও নয়। আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে, সবকিছু তাঁরই।
আয়াতুল কুরসি সুরা বাকারার কত নং আয়াত? What part of Sura Bakara is Ayatul Kursi Ayaat?
আয়াতুল কুরসি কোরআন শরিফের প্রসিদ্ধ আয়াত। পুরো আয়াতে আল্লাহর একত্ববাদ, মর্যাদা ও গুণের বর্ণনা থাকার কারণে আল্লাহ তাআলা এ আয়াতের মধ্যে অনেক ফজিলত রেখেছেন। এটি পাঠ করলে অসংখ্য পুণ্য লাভ হয়। সুরা বাকারার ২৫৫ নম্বর আয়াত আয়াতুল কুরসি নামে পরিচিত
আয়াতুল কুরসিতে কটি বাক্য রয়েছে? How many sentences are there in Ayatul Kursi?
আয়াতুল কুরসিতে মোট ৯টি বাক্য আছে
প্রথম বাক্যের সঙ্গে নবম বাক্যর মিল । প্রথম বাক্যে: আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। নবম বাক্য: তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।,
দ্বিতীয়বাক্যের সঙ্গে অস্টম বাক্যর মিল (তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়।) অষ্টম বাক্য (আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়),
তৃতীয় বাক্যের সঙ্গে সপ্তম বাক্যর মিল (আসমান ও জমিনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর) সঙ্গে সপ্তম বাক্য(তাঁর কুরসি (সিংহাসন) সমস্ত আসমান ও জমিনকে পরিবেষ্টিত করে আছে)
চতুর্থ বাক্যের সঙ্গে ষষ্ঠ বাক্যর মিল (কে আছ এমন যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া?)সঙ্গে ষষ্ঠ বাক্যের(তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোনো কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন।) অলৌকিক মিল!
বাদ পড়ে শুধু পঞ্চম বাক্য দৃষ্টির সামনে কিংবা পেছনে যা কিছু রয়েছে, সে সবই তিনি জানেন।
সেটি মাঝে থেকে কী সুন্দরভাবে তার অর্থ ও অবস্থানকে অর্থবহ করে তোলে।
আয়াতুল কুরসি পাঠ করলে কি হয়? Ayatul Kursi paath korle ki hoy?
প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক (ফরজ) নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, মৃত্যু ব্যতীত কোনো কিছু তার জান্নাতে প্রবেশে বাধা দিতে পারবে না। ‘
আয়াতুল কুরসির শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি, Acknowledgment of Ayatul Kursi’s excellence
আয়াতুল কুরসির গুরুত্বপূর্ণ ফজিলতের কারণ হলো, এই আয়াতে আল্লাহর একত্ববাদ বিষয়ে বর্ণনা ও তার গুণবাচক ১০টি বাক্য রয়েছে। আর শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকার জন্যও এই আয়াত অত্যন্ত কার্যকর।
উবাই বিন কাব রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তোমার দৃষ্টিতে কোরআন মাজিদের কোন আয়াতটি সর্ব শ্রেষ্ঠ? তিনি বলেছিলেন, আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুআল হাইয়্যুল কাইয়্যুম তথা আয়াতুল কুরসি। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ হাত দিয়ে তার বুকে মৃদু আঘাত করে বলেন, আবুল মুনজির! এই জ্ঞানের কারণে তোমাকে মোবারকবাদ। (মুসলিম, হাদিস, ১৩৯৬)
আয়াতুল কুরসি আরবি আয়াত, Ayatul Kursi verse
আরবি :
اَللهُ لآ إِلهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ، لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَّلاَ نَوْمٌ، لَهُ مَا فِى السَّمَاوَاتِ وَمَا فِى الْأَرْضِ، مَنْ ذَا الَّذِىْ يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ، يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيْطُوْنَ بِشَيْئٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَآءَ، وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ، وَلاَ يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَ هُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيْمُ-
আয়াতুল কুরসির বাংলা উচ্চারণ হল, Bengali pronunciation of Ayatul Kursi
আল্লাহু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কাইয়ুম, লা তা’খুযুহু সিনাতুঁও ওয়ালা নাউম। লাহু মা-ফিসসামা-ওয়া-তি ওয়ামা ফিল আরদ্ব। মান জাল্লাজি ইয়াশফা’উ ইনদাহু ইল্লা বিইজনিহি। ইয়া’লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম। ওয়ালা ইয়ুহিতুনা বিশাইইম মিন্ ইলমিহি ইল্লা বিমা- শাআ। ওয়াসি‘আ কুরসিয়্যুহুস সামা-ওয়াতি ওয়াল আরদ্ব। ওয়ালা ইয়াউদুহু হিফজুহুমা ওয়া হুয়াল আলিয়্যূল আজিম।
আয়াতুল কুরসির বাংলা অর্থ হল, Bengali meaning of Ayatul Kursi
আল্লাহ, যিনি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। তন্দ্রা বা নিদ্রা তাঁকে পাকড়াও করতে পারে না। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সবকিছু তারই মালিকানাধীন। তাঁর হুকুম ব্যতীত এমন কে আছে যে তাঁকে সুপারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখে ও পেছনে যা কিছু আছে সবকিছুই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসমুদ্র হতে তারা কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না, কেবল যতটুকু তিনি দিতে ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত। তাঁর কুরসি সমগ্র আসমান ও জমিন পরিবেষ্টন করে আছে। আর সেগুলোর তত্ত্বাবধান তাঁকে মোটেই শ্রান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ ও মহান।
আয়াতুল কুরসি কিভাবে হেফাজত করতে হয়? Ayatul Kursi kibhabe Hefazat korte hoy?
এই আয়াতটি মুখস্থ করুন এবং প্রতিদিন এটি পাঠ করুন। প্রতিদিন আইয়া আল-কুরসি পাঠ করা সুন্নত: 1) ঘুমানোর আগে: “ যখন আপনি আপনার বিছানায় শুয়ে থাকবেন, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আয়াতুল কুরসি পাঠ করুন; আল্লাহ আপনার জন্য একজন অভিভাবক (ফেরেশতা) নিযুক্ত করবেন যিনি আপনার কাছে থাকবেন, যতক্ষণ না আপনি সকালে ঘুম থেকে উঠবেন ”
আয়াতুল কুরসির ফজিলত ও সওয়াব, A few words about the Fazilat and Sowab of Ayatul Kursi
আয়াতুল কুরসি পবিত্র কোরআনের সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী একটি আয়াত। এ আয়াতে রয়েছে জান্নাত লাভের পথ, রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তির পথ, খারাপ জ্বিন ও শয়তানের অনিষ্ট থেকে দূরে থাকার পথ, ফেরেশতার সঙ্গ পাবার পথ ও রহমত-বরকত লাভের পথ ইত্যাদি। আয়াতুল কুরসি পড়ার ফজিলত অসংখ্য।
শরিফে বর্ণিত আয়াতুল কুরসির ফজিলতগুলো এখানে তুলে ধরা হলো :
শয়তান থেকে বাঁচার আমল
উবাই বিন কাব (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, “তার একটি খেজুর রাখার থলি ছিল। ক্রমে সেটা থেকে তার খেজুর কমতে থাকত। একরাতে তিনি পাহারা দেন। হঠাৎ যুবকের মতো এক জন্তু দেখতে পেলেন, তিনি তাকে সালাম দেন। সে সালামের উত্তর দেয়। তিনি বলেন, তুমি জিন না মানুষ? সে বলে, জিন।
তারপর উবাই বিন কাব (রা.) তার হাত দেখতে চাইলে সে তার হাত দেয়। তার হাত ছিল কুকুরের হাতের মত আর চুল ছিল কুকুরের চুলের মত। তিনি বলেন, এটা জিনের সুরত। সে (জন্তু) বলে, জিন সম্প্রদায়ের মধ্যে আমি সবচেয়ে সাহসী। তিনি বলেন, তোমার আসার কারণ কী? সে বলে, আমরা শুনেছি আপনি সাদকা পছন্দ করেন, তাই কিছু সাদকার খাদ্যসামগ্রী নিতে এসেছি।
সাহাবি বলেন, তোমাদের থেকে পরিত্রাণের উপায় কী? সে বলে, সুরা বাকারার এই আয়াতটি (আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লাহ হুআল হাইয়ুল কাইয়ুম), যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় এটি পড়বে, সকাল পর্যন্ত আমাদের থেকে পরিত্রাণ পাবে। আর যে ব্যক্তি সকালে এটি পড়বে, সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাদের থেকে নিরাপদে থাকবে। সকাল হলে তিনি রাসুল (সা.) এর কাছে আসেন এবং ঘটনার খবর দেন। রাসুল (সা.) বলেন খবিস সত্য বলেছে।’ (সহিহ ইবন হিব্বান, হাদিস : ৭৯১)”
ফেরেশতা নিযুক্তকারী আয়াত
আবু হুরায়ারা (রা.) থেকে এই আয়াতের ফজিলত সম্পর্কে বর্ণনা পাওয়া যায়, যেখানে তিনি বলেন, “এক রমজান মাসে রাসুল (সা.) আমাকে জাকাতের সম্পদ পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তখন দেখতে পেলাম একজন আগন্তুক সদকার মাল চুরি করছে। তখন আমি তার হাত ধরে ফেললাম এবং বললাম- আল্লাহর কসম, আমি তোমাকে আল্লাহর রাসুলের কাছে নিয়ে যাব। তখন আগন্তুক বলল, আমি খুব অভাবী আর আমার অনেক প্রয়োজন। তার এ কথা শুনে দয়া করে তাকে ছেড়ে দিলাম। পরদিন সকালে রাসুল (সা.) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, গতকাল তোমার অপরাধী কী করেছে?
আমি উত্তর দিলাম, হে আল্লাহর রাসুল, লোকটি নাকি অনেক অভাবী তাই তাকে দয়া করে ছেড়ে দিয়েছি। রাসুল (সা.) বললেন, অবশ্যই সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে আর সে আবার আসবে।
পরদিন আমি আবার অপেক্ষা করতে লাগলাম। যখন সে আবারও চুরি করতে আসল, তখন তাকে পাকড়াও করে বললাম, এবার অবশ্যই আমি তোমাকে আল্লাহর রাসুলের কাছে নিয়ে যাব। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দাও, আমি খুব অভাবী, আমার পরিবার আছে, আমি আর আসব না। তখন আমি তাকে দয়া করে এবারও ছেড়ে দিলাম। পরদিন আবারও রাসুল (সা.) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, গতকাল তোমার অপরাধী কী করেছে?
আমি এবারও উত্তর দিলাম, হে আল্লাহর রাসুল, লোকটি নাকি অনেক অভাবী— তাই তাকে দয়া করে ছেড়ে দিয়েছি। রাসুল (সা.) এবারও বললেন, অবশ্যই সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে, আর সে আবার আসবে।
তৃতীয় দিনও আমি চোরের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। যখন সে আবারও চুরি করতে আসল, তখন তাকে পাকড়াও করে বললাম, এবার অবশ্যই আমি তোমাকে আল্লাহর রাসুলের কাছে নিয়ে যাব, তুমি বার বার প্রতিশ্রুতি করেও চুরি করতে এসে থাকো। তখন (অবস্থা বেগতিক দেখে) সে বলল, আমাকে ক্ষমা করে দাও।
আমি তোমাকে এমন কিছু কথা জানাবো— যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাকে কল্যাণ দান করবেন। আমি বললাম, সেগুলো কী? তখন সে বলল, যখন ঘুমাতে যাবে তখন আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমাবে তাহলে আল্লাহ তোমার জন্য একজন পাহারাদার নিযুক্ত করবেন, যে তোমার সঙ্গে থাকবে। আর কোনো শয়তান সকাল পর্যন্ত তোমার কাছে আসতে পারবে না।
এটা শুনে আবু হুরায়রা (রা.) তাকে ছেড়ে দিলেন। পরদিন রাসুল (সা.) আবার অপরাধীর কথা জানতে চাইলে তিনি আগের রাতের কথা বললেন। তখন রাসুল (সা.) বললেন, যদিও সে চরম মিথ্যাবাদী কিন্তু সে সত্য বলেছে । রাসুল (সা.) আবু হুরায়রা (রা.)-কে আরো বললেন, তুমি কি জান সে কে? আবু হুরায়রা (রা.) বললেন, না। রাসুল (সা.) আবু হুরায়রাকে বললেন, সে ছিল শয়তান। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৩১১)”
হাদিসে আয়াতুল কুরসি পাঠের একাধিক উপকার, Various benefits of reciting Ayatul Kursi
কোরআনের গুরুত্বপূর্ণ আয়াত
হজরত উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ এক দিন আবুল মুনজিরকে লক্ষ করে বলেন, হে আবুল মুনজির! আল্লাহর কিতাবের কোন আয়াত তোমার কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ? আবুল মুনজির বলেন, এ বিষয়ে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুল সর্বাধিক অবগত। হজরত রাসুল (সা.) আবার বলেন, হে আবুল মুনজির! আল্লাহর কিতাবের কোন আয়াত তোমার কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ? তখন আমি বললাম, আয়াতুল কুরসি (আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ)। এ কথা শুনে তিনি আমার বুকের ওপর হাত রেখে বলেন, হে আবুল মুনজির! তোমার জ্ঞানকে স্বাগতম। সহিহ মুসলিম : ১৭৭০
মৃত্যুর পর জান্নাত
হজরত আবু উমামা আল বাহিলি (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তার জান্নাতে প্রবেশে মৃত্যুর ছাড়া আর কোনো বাধা থাকবে না।’ সুনানে নাসায়ি : ৯৯২৮
কোরআনের সবচেয়ে সম্মানিত আয়াত
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রতিটি জিনিসের একটি চূড়া থাকে। কোরআনের চূড়া সুরা বাকারা। তাতে এমন একটি আয়াত আছে, যা কোরআনের অন্য আয়াতের ‘নেতা’। সেটা হলো আয়াতুল কুরসি।’ সুনানে তিরমিজি : ৩১১৯
আয়াতুল কুরসী যারা নিয়মিত পড়বে তাদের কি লাভ হবে? What is the benefit of reciting Ayatul Kursi daily?
অগণিত ফেরেস্তাগণ তার জান-মাল রক্ষার জন্য নিয়োজিত থাকবে। হাদীসে বর্ণিত আছে- আয়াতুল কুরছি সকাল সন্ধ্যা ১ বার করে পড়লে ফেরেস্তাগণ তার জন্য দোয়া করতে থাকেন।
দুরে ভ্রমনে বের হলে আয়াতুল কুরছি পড়ে বের হবেন। ইনশাআল্লাহ নিরাপত্তার সাথে আবার বাড়িতে ফিরতে পারবেন। কখনো কোন কারনে ভয় পেলে বা বিপদ দেখলে, আয়াতুল কুরসি পড়ে নিন। ইনশাআল্লাহ ভয় বা বিপদ দূর হবে।
আয়াতুল কুরসি মনে রাখার উপায়? How to memorize Ayatul Kursi?
খুব সকালে মুখস্থ করার চেষ্টা করুন বা বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত একটি শান্ত জায়গা খুঁজে বের করুন । – আয়াত মুখস্থ করার আগে ইংরেজিতে অর্থটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। – প্রতিটি আয়াত এক এক করে মুখস্থ করুন। পুনরাবৃত্তি, পুনরাবৃত্তি, পুনরাবৃত্তি!
আয়াতুল কুরসি তেলাওয়াতের ফায়দা, Ayatul Kursi Telawat er fayda
রাতে ঘুমানোর সময় আয়াতুল কুরসি তেলাওয়াত করে ঘুমালে আল্লাহ তাআলা সব ধরনের বালা-মসিবত থেকে হেফাজত করেন। যে ব্যক্তি সকালে আয়াতুল কুরসি পড়বে সে বিকেল হওয়া পর্যন্ত জিন শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে থাকবে। যে ব্যক্তি বিকেলে তা পড়বে; সে সকাল হওয়া পর্যন্ত জিন শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে থাকবে।
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সুরা বাকারায় একটি শ্রেষ্ঠ আয়াত আছে। সেটি হলো আয়াতুল কুরসি। যে ঘরে এটি পাঠ করা হবে, সেখান থেকে শয়তান পালাতে থাকে। কেননা আমরা অন্যমনস্ক হয়ে নামাজ পড়তে থাকি আর সালাম ফিরিয়েই যে আয়াতুল কুরসি পড়তে হবে, তা ভুলে যাই। কিন্তু মানুষের দিল যখন আল্লাহর দিকে মায়েল হয়ে যায়, তখন তারা ভুলতে পারে না।
ঘুমাতে যাওয়ার আগে আয়াতুল কুরসি পড়ার উপকারিতা, Benefits of reciting Ayatul Kursi before going to sleep?
আয়াতুল কুরসি ইসলামে একটি অত্যন্ত সুপারিশকৃত অভ্যাস হিসাবে বিবেচিত হয় এবং এর সাথে জড়িত অনেক সুবিধা রয়েছে। কিছু সুবিধার মধ্যে রয়েছে:
- মন্দ থেকে সুরক্ষা: আয়াতুল কুরসি শয়তান, কালো জাদু এবং দুষ্ট চোখ সহ সমস্ত ধরণের মন্দ থেকে সুরক্ষা দেয় বলে বিশ্বাস করা হয়।
- শান্তির ঘুম: ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসি পড়া মনের শান্তি ও প্রশান্তি আনয়ন করে এবং একজনকে ভালো ঘুমাতে সাহায্য করে।
- আধ্যাত্মিক সংযোগ: আয়াতুল কুরসি পাঠ করা আল্লাহর সাথে একজনের আধ্যাত্মিক সংযোগকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এবং একজনকে তার নিকটবর্তী করে।
- পরকালে পুরস্কার: এটা বিশ্বাস করা হয় যে যারা ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে তারা পরকালে বরকত ও সুরক্ষায় পুরস্কৃত হবে।
ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করতে হবে, Ayatul Kursi should be recited আফটার Farz Namaz
আবু উমামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে, তার জন্য জান্নাতে প্রবেশের পথে মৃত্যু ব্যতীত আর কোনো বাঁধা থাকবে না। (নাসায়ি, হাদিস : ৯৪৪৮; তাবারানি, হাদিস : ৭৮৩২)
শেষ কথা, Conclusion
উপরের আলোচনা থেকে বোঝাই যায় যে আয়াতুল কুরসি কোরআনের কতটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আয়াতুল কুরসি আল্লাহর সর্বশক্তিমানতা এবং আসমান ও পৃথিবীতে তাঁর রাজত্বের কথা বলে ।এই আয়াত সকল মুসলমানরা পাঠ করে থাকেন। যারা এই আয়াত সম্পর্কে অজ্ঞাত ছিল আশা করি তারা এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে যাবতীয় তথ্য জানতে সক্ষম হয়েছেন।