শবে কদরের দোয়া/ লাইলাতুল কদরের দোয়া বাংলা, Shabe Qadr Doa Bengali

শবে কদরের দোয়া বাংলা

বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বরকতময় রাত হলো শবে কদর। মহাগ্রন্থ আল–কোরআন এই রাতেই প্রথম নাজিল হয়েছিল। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি মাহাত্ম্যপূর্ণ রজনীতে।’ মুমিন মুসলমানরা এই রাতটির জন্য দীর্ঘ এক বছর অপেক্ষা করে থাকেন। শবে কদর প্রতি বছর রমজান মাসের শেষ দশ রাতের যে কোনো এক রাতে সংঘটিত হয়। আরবিতে ‘লাইলাতুল কদর’ বা কদর রজনী, এর ফারসি হলো শবে কদর। অর্থ সম্মানিত মর্যাদাপূর্ণ ও মহিমান্বিত, সম্ভাবনাময়, ভাগ্যনির্ধারণী রজনী। 

কদর থাকা অর্থ কি? What is meant by Qadr?

আল-কদর বন্ধ আল-কদর ইসলামী বিশ্বাস যে আল্লাহ ইতিমধ্যেই মহাবিশ্বে যা ঘটবে তা সবই জানেন । পূর্বনির্ধারিত বিশ্বাস। এর অর্থ হল যা ঘটবে তা আল্লাহ আগেই জানেন। যাইহোক, এর অর্থ এই নয় যে লোকেরা যে পছন্দগুলি করে তা বিনামূল্যের পছন্দ নয়।

কদর থাকা অর্থ কি?

লাইলাতুল কদর শব্দের অর্থ কি? Lailatul Qadr meaning

শবে কদর (ফার্সি: شب قدر) বা লাইলাতুল কদর (আরবি: لیلة القدر) এর অর্থ “অতিশয় সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত” বা “পবিত্র রজনী”। ফার্সি ভাষায় “শাব” ও আরবি ভাষায় “লাইলাতুল” অর্থ হলো রাত্রি বা রজনী, অন্যদিকে ‘কদর‘ শব্দের অর্থ সম্মান, মর্যাদা, মহাসম্মান। এ ছাড়া এর অন্য অর্থ হল ভাগ্য, পরিমাণ ও তাকদির নির্ধারণ করা।

লাইলাতুল কদর শব্দের অর্থ কি?

লাইলাতুল কদরে কি দোয়া করবেন? Lailatul Qadr dua

এছাড়াও এই রাতে আরও কিছু দোয়া করা যায়। নিচে সেগুলো উল্লেখ করা হলো। কদরের রাতে যে দোয়ার সর্বোচ্চ গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে, সেটি হলো—ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧَّﻚَ ﻋَﻔُﻮٌّ ﺗُﺤِﺐُّ ﺍﻟْﻌَﻔْﻮَ ﻓَﺎﻋْﻒُ ﻋَﻨِّﻲ উচ্চারণ: ‘আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নী’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল।

লাইলাতুল কদরে কি দোয়া করবেন?

শবে ক্বদর কবে? When is Shabbat Qadr?

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে শবে কদর সন্ধান করো।’ (মুসলিম)। এ রাতগুলো হলো ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯। আরবিতে দিনের আগে রাত গণনা করা হয়। অর্থাৎ ২০, ২২, ২৪, ২৬ ও ২৮ রমজান দিবাগত রাত্রসমূহ।

 পবিত্র রমজান মাসের শেষ দশকের যে কোনো একটি বেজোড় রাত শবে কদর বা লাইলাতুল কদর হতে পারে। তবে রমজানের ২৭তম রজনী অর্থ্যাৎ ২৬ রমজান দিবাগত রাতটি লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী। কদরের রাত হওয়ার বিবেচনায় দ্বিতীয় সম্ভাবনাময় রাত হলো- ২৫ তারিখ। তৃতীয় হলো- ২৯ তারিখে।

শবে ক্বদর কবে?

শবে কদরের রাতে কি কি নামাজ পড়তে হয়? Do you have to pray on the night of Shabbat Qadr?

লাইলাতুল কদরে বিশেষ কোনো নামাজের নিয়ম বা পদ্ধতি নেই। লাইলাতুল কদরের রাতে দুই রাকাত করে নফল নামাজ যত সুন্দর ও মনোযোগসহকারে পড়া যায় ততই ভালো। দুই রাকাত, দুই রাকাত করে আপনি যত খুশি পড়তে পারবেন। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করবেন, দোয়া পড়বেন, ইস্তেগফার পড়বেন ও তওবা করবেন।

শবে কদরের রাতে কি কি নামাজ পড়তে হয়?

কদর রাতের ফজিলত অনেক বেশি হওয়ার কারণ কি? What is the reason for the virtues of Qadr night?

ইসলাম ধর্ম অনুসারে, এ রাতে ইসলাম ধর্মের ধর্মপ্রচারক মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ)-এর অনুসারীদের সম্মান বৃদ্ধি করা হয় এবং মানবজাতির ভাগ্য পুনর্নির্ধারণ করা হয়। তাই মুসলমানদের কাছে এই রাত অত্যন্ত পুণ্যময় ও মহাসম্মানিত হিসেবে পরিগণিত।

কদর রাতের ফজিলত

শবে কদর নামাজ কিভাবে পড়বো? How to recite Shabbat Qadr?

শবে কদরের নফল নামাজ দু’রাকাত করে যত বেশি পড়া যায় তত বেশি ছওয়াব। নামাজের প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর সূরা ইখলাছ, সূরা ক্বদর, আয়াতুল কুরছী বা সূরা তাকাছুর ইত্যাদি মিলিয়ে পড়া অধিক ছওয়াবের কাজ। এই ভাবে কমপক্ষে ১২ রাকাত নামাজ আদায় করা উত্তম।

শবে কদর নামাজ কিভাবে পড়বো?

কদরের রাতে কোন সূরার কত আয়াত নাযিল হয়? How many verses of a surah are revealed in the night of Qadr?

সূরা আল-কদর (বা ক্বদর) (আরবি: سورة القدر) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ৯৭ তম সূরা, এর আয়াত সংখ্যা ৫ টি এবং এর রূকুর সংখ্যা ১। আল ক্বদর সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। কদরের এর অর্থ মাহাত্ম্য ও সম্মান। এর মাহাত্ম্য ও সম্মানের কারণে একে “লায়লাতুল-কদর” তথা মহিম্মান্বিত রাত বলা হয়।

কদরের রাতে কোন সূরার কত আয়াত নাযিল হয়?

মুসলমানরা কদরের রাত কিভাবে পালন করে? How do Muslims observe the night of Qadr?

 বিশ্বাস করা হয় যে, শক্তির রাতে, ফেরেশতারা পৃথিবীতে নেমে আসে। কুরআন বলে যে এই রাতটি হাজার মাসের চেয়েও উত্তম (কোরআন 97:3)। লাইলাতুল কদর বছরের সবচেয়ে পবিত্র রাত। মুসলমানরা সারা রাত জেগে নামাজ পড়ার এবং কোরআন অধ্যয়নের চেষ্টা করে ।

লাইলাতুল কদরের দোয়া কখন পড়তে হয়? When to recite Lailatul Qadr ?

রাসুল (সঃ) আমাদের বলেছেন, তবে লায়লাতুল কদর কোথায় অনুসন্ধান করা উচিত, “এটি শেষ দশ দিনে, বেজোড় রাতে তালাশ কর” (সহীহ বুখারি ও সহীহ মুসলিম)। এটি করার আদর্শ উপায়, অবশ্যই, এই রাতে যতবার সম্ভব লায়লাতুল কদরের জন্য সর্বোত্তম দুআ পাঠ করা।

শবে কদরে কত রাকাত নামাজ পড়তে হয়? Number of Rakats to be read in Lailatul Qadr

শবে কদরে কত রাকাত নামাজ পড়তে হয়?

লাইলাতুল কদরে বিশেষ কোনো নামাজের পদ্ধতি নেই। লাইলাতুল কদরের রাতে নামাজ দুই রাকাত করে যত সুন্দর করে, যত মনোযোগ সহকারে পড়া যায় ততই ভালো। দুই রাকাত, দুই রাকাত করে আপনি যত খুশি পড়তে পারবেন। এই রাতে কোরআন তেলাওয়াত করবেন।

লাইলাতুল কদরের রাতে ঘরে বসে কিভাবে নামাজ পড়তে হয়? How to recite Lailatul Qadr at night?

আমাদের প্রভুর সাথে আমাদের সংযোগকে শক্তিশালী করার জন্য, প্রতিফলন এবং ধ্যানে সময় ব্যয় করা গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার মহিমা ও সৌন্দর্যের সাথে সাথে তাঁর ক্ষমতা, করুণা ও দয়া নিয়ে চিন্তা করার জন্য সময় ব্যয় করুন। আল্লাহর 99টি নাম পড়ুন এবং তাদের অর্থ এবং প্রকাশ সম্পর্কে চিন্তা করার জন্য সময় নিন।

লাইলাতুল কদরের রাতে ঘরে বসে কিভাবে নামাজ পড়তে হয়?

লাইলাতুল কদর কতবার নামাজ পড়তে হয়? How many times Lailatul Qadr Namaz is to be read?

লাইলাতুল কদর, যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের অবহিত করেছেন, রমজানের শেষ বেজোড় রাতগুলির একটি। তাই রমজানের 21, 23, 25, 27 এবং 29 তম রাতে লোকেদের তাদের ধর্মীয় প্রার্থনা (সালাত) এবং অন্যান্য ইবাদতে সর্বাধিক প্রচেষ্টা করা উচিত।

লাইলাতুল কদর কতবার নামাজ পড়তে হয়?

শবে কদরের নামাজের নিয়ত, The intention( Niyat) of the Shabae Qadr prayer

‘নাওয়াইতু আন্ উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’য়ালা রাকআতাই সালাতিল লাইলাতিল কাদ্রি নফ্লে মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি- আল্লাহু আকবর।’

এর বাংলা অর্থ: আমি কাবামুখী হয়ে আল্লাহর (সন্তুষ্টির) জন্য শবে কদরের দুই রাকআত নফল নামাজ পড়ার নিয়ত করলাম- আল্লাহু আকবর।

শবে কদরের নামাজের নিয়ত

শবে কদরের দোয়া, Shabba Kadar prayer

 লাইলাতুল কদর, ক্ষমা ও রহমত পাওয়ার বিশেষ দোয়া আছে। হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, একবার আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম- হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি বলে দিন, আমি যদি লাইলাতুল কদর কোন রাতে হবে তা জানতে পারি, তাতে আমি কী (দোয়া) পড়বো?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি বলবে-

اللَّهُمَّ إِنَّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي

বাংলা উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন; তুহিব্বুল আফওয়া; ফাফু আন্নি।’

এর বাংলা অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন। (মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)

কোরআন নাজিলের মাসে ক্ষমা ও রহমত কামনার কোরআনি দোয়াগুলো বেশি বেশি পড়া যেতে পারে। এই দোয়াগুলো হল-

১. رَبَّنَا اكْشِفْ عَنَّا الْعَذَابَ إِنَّا مُؤْمِنُونَ

বাংলা উচ্চারণ : ‘রাব্বানাকশিফ আন্নাল আজাবা ইন্না মুমিনুন।’

এর বাংলা অর্থ : ‘হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের উপর থেকে আপনার শাস্তি প্রত্যাহার করুন, আমরা বিশ্বাস স্থাপন করছি।’ (সুরা দুখান : আয়াত ১২)

২. رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِيْنَ

বাংলা উচ্চারণ : ‘রাব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।’

এর বাংলা অর্থ : ‘হে আমার প্রভু! (আমাকে) ক্ষমা করুন এবং (আমার উপর) রহম করুন; আপনিই তো সর্বশ্রেষ্ঠ রহমকারী।’ (সুরা মুমিনুন : আয়াত ১১৮)

৩. رَبَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ

শবে কদরের দোয়া

বাংলা উচ্চারণ : ‘রাব্বানা আমান্না ফাগফিরলানা ওয়ারহামনা ওয়া আংতা খাইরুর রাহিমিন।’

এর বাংলা অর্থ : ‘হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অতএব তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর ও আমাদের প্রতি রহম কর। তুমি তো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।’ (সুরা মুমিনুন : আয়াত ১০৯)

৪. رَبِّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ فَاغْفِرْ لِيْ

এর বাংলা উচ্চারণ : ‘রাব্বি ইন্নি জ্বালামতু নাফসি ফাগফিরলি।’

এর বাংলা অর্থ : ‘(হে আমার) প্রভু! নিশ্চয়ই আমি নিজের উপর জুলুম করে ফেলেছি, অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ১৬)

৫. رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

বাংলা উচ্চারণ : ‘রাব্বানা ইন্নানা আমান্না ফাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া ক্বিনা আজাবান নার।’

এর বাংলা অর্থ : হে আমাদের রব! নিশ্চয়ই আমরা ঈমান এনেছি, সুতরাং তুমি আমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দাও এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা কর।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৬)

৬. رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنْفُسَنَا وَإِنْ لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ

এর বাংলা উচ্চারণ : ‘রাব্বানা জ্বালামনা আংফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা লানাকুনান্না মিনাল খাসিরিন।’

এর বাংলা অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু! আমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি দয়া না করেন, তবে আমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবো।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ২৩)

৭. رَبَّنَا اغْفِرْ لِيْ وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِيْنَ يَوْمَ يَقُوْمُ الْحِسَابُ

এর বাংলা উচ্চারণ : ‘রাব্বানাগফিরলি ওয়া লিওয়ালিদাইয়্যা ওয়া লিলমুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’

এর বাংলা অর্থ : হে আমাদের প্রভু! যেদিন হিসাব কায়েম হবে, সেদিন তুমি আমাকে, আমার বাবা-মাকে ও মুমিনদেরকে ক্ষমা কর।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৪১)

৮. سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيْرُ

এর বাংলা উচ্চারণ : ‘সামিনা ওয়া আত্বানা গুফরানাকা রাব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাছির।’

এর বাংলা অর্থ : ‘আমরা (আপনার বিধান) শুনলাম এবং মেনে নিলাম। হে আমাদের রব! আমাদের ক্ষমা করুন। আপনার দিকেই তো (আমাদের) ফিরে যেতে হবে।’ (সুরা আল-বাকারাহ : আয়াত ২৮৫)

৯. رَبَّنَا وَلاَ تُحَمِّلْنَا مَا لاَ طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنتَ مَوْلاَنَا

এর বাংলা উচ্চারণ : ‘ওয়াফু আন্না ওয়াগফিরলানা ওয়ারহামনা আংতা মাওলানা ফাংছুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরিন।’

এর বাংলা অর্থ : ‘হে আমাদের রব! যে বোঝা বহন করার সাধ্য আমাদের নেই, সে বোঝা আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়ো না। আমাদের পাপ মোচন করুন। আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন। তুমিই আমাদের প্রভু।’ (সুরা বাকারাহ : আয়াত ২৮৬)

১০. رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِيْنَ سَبَقُوْنَا بِالْإِيْمَانِ

বাংলা উচ্চারণ : ‘রাব্বানাগফিরলানা ওয়ালি ইখওয়ানিনাল্লাজিনা সাবাকুনা বিল ঈমানি।’

এর বাংলা অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের ক্ষমা করুন এবং যারা আমাদের আগে যারা ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছে, তাদেরকেও ক্ষমা করুন।’ (সুরা হাশর : আয়াত ১০)

১১. رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِيْ أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِيْنَ

এর বাংলা উচ্চারণ : ‘রাব্বানাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া ইসরাফানা ফি আমরিনা ওয়া ছাব্বিত আক্বদামানা ওয়াংছুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরিন।’

এর বাংলা অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের ভুল-ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিন। আমাদের কাজের মধ্যে যেখানে তোমার সীমালঙ্ঘন হয়েছে, তা মাফ করে দিন। আমাদের কদমকে অবিচল রাখুন এবং অবিশ্বাসীদের মোকাবেলায় আমাদের সাহায্য করুন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৪৭)

১২. رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّئَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الْأَبْرَارِ

বাংলা উচ্চারণ : ‘রাব্বানা ফাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া কাফফির আন্না সায়্যিআতিনা ওয়া তাওয়াফফানা মাআল আবরার।’

এর বাংলা অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু! সুতরাং আমাদের গোনাহগুলো ক্ষমা করুন। আমাদের ভুলগুলো দূর করে দিন এবং সৎকর্মশীল লোকদের সাথে আমাদের শেষ পরিণতি দান করুন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৯৩)

উক্ত দোয়াগুলো ছাড়াও আল্লাহর রহমত পেতে হলে নিম্নে উল্লেখিত এ দোয়াগুলো বেশি পড়ার কথা বলা হয়েছে-

১৩. رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

এর বাংলা উচ্চারণ : ‘রাব্বানা আতিনা ফিদদুনইয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়া ক্বিনা আজাবান নার।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২০১‌)

এর বাংলা অর্থ : ‘হে পরওয়ারদেগার! আমাদিগকে দুনয়াতেও কল্যাণ দান কর এবং আখেরাতেও কল্যাণ দান কর এবং আমাদিগকে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা কর।’

১৪. رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِي قُلُوبِنَا غِلًّا لِّلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَؤُوفٌ رَّحِيمٌ

এর বাংলা উচ্চারণ : ‘রাব্বানাগফিরলানা ওয়া লি ইখওয়ানিনাল্লাজিনা সাবাকুনা বিল ঈমানি ওয়া লা তাঝআল ফি কুলুবিনা গিল্লাল লিল্লাজিনা আমানু রাব্বানা ইন্নাকা রাউফুর রাহিম।’ (সুরা হাশর : আয়াত ১০)

বাংলা অর্থ : ‘হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদেরকে এবং ঈমানে আগ্রহী আমাদের ভ্রাতাগণকে ক্ষমা কর এবং ঈমানদারদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে কোন বিদ্বেষ রেখো না। হে আমাদের পালনকর্তা, আপনি দয়ালু, পরম করুণাময়।’

১৫. رَبِّ بِمَا أَنْعَمْتَ عَلَيَّ فَلَنْ أَكُونَ ظَهِيرًا لِّلْمُجْرِمِينَ

এর বাংলা উচ্চারণ : রাব্বি বিমা আনআমতা আলাইয়্যা ফালান আকুনা জ্বাহিরাল লিলমুঝরিমিন।’

এর বাংলা অর্থ : ‘হে আমার পালনকর্তা! আপনি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ করেছেন, এরপর আমি কখনও অপরাধীদের সাহায্যকারী হব না।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ১৭)

১৬. বাবা-মার জন্য দোয়া করা-رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا

এর বাংলা উচ্চারণ : ‘রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানি সাগিরা’

এর বাংলা অর্থ : ‘হে আমার প্রভু! তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমনিভাবে তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।’ (সুরা বনি ইসরাঈল : আয়াত ২৪)

১৭. اَللَّهُمَّ اِنِّى اَسْئَلُكَ الْهُدَى وَ التُّقَى وَ الْعَفَافَ وَالْغِنَى

এর বাংলা উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল হুদা ওয়াত্তুক্বা ওয়াল আফাফা ওয়াল গিনা।’

এর বাংলা অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে হেদায়েত (পরিশুদ্ধ জীবন) কামনা করি এবং আপনার ভয় তথা পরহেজগারি কামনা করি এবং আপনার কাছে সুস্থতা তথা নৈতিক পবিত্রতা কামনা করি এবং সম্পদ-সামর্থ্য (আর্থিক স্বচ্ছলতা) কামনা করি।

লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব ও ফজিলত, Importance and virtues of Lailatul Qadr

লাইলাতুল কদরের অর্থ হয় ভাগ্য রজনী। যে মানুষ, যে সমাজ, যে জাতি, কোরআনকে বাস্তব জীবনের বিধান হিসাবে গ্রহণ করবে তারা পার্থিব জীবনে ও পরকালীন জীবনে সম্মানীত হবে। এ রাতে নাযিলকৃত কোরআনকে যারা অবহেলা করবে তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। এ রাতেই মানব কল্যাণে আল্লাহ মানুষের জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ফেরেস্তাদের জানান। আল্লাহ বলেন- ‘এ রাতে প্রত্যেকটি ব্যাপারে অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মত ও সুদৃঢ় ফায়সালা জারি করা হয়।’ (সূরা দুখান : ৪)

লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব

রমজানের ২৭ তারিখ অর্থাৎ ২৬ রমজান দিবাগত রাত লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা অন্য বেজোড় রাতের চেয়ে বেশি হয়। হাদিসের এ নিয়ে বর্ণনা পাওয়া যায়। হাদিসে বর্ণিত, হজরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কদরের রাত অর্জন করতে ইচ্ছা করো, সে যেন তা ২৬ রমজান দিবাগত রাত তথা ২৭ রমাজনে অনুসন্ধান করে।’ (মুসনাদে আহমাদ)

লাইলাতুল কদরে কোন সূরা পড়তে হয়? Lailatul Qadr sura

কদরের নামাজের সময়, সূরা আল-কদর (কোরআনের অধ্যায় 97) পাশাপাশি কোরআনের অন্যান্য আয়াত বা অধ্যায়গুলি পাঠ করার সুপারিশ করা হয়।

লাইলাতুল কদরে কোন সূরা পড়তে হয়?

শবে কদরের করণীয় আমল, Shab Qadr deeds

  • ১. সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ইবাদতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা।
  • ২. মাগরিবের নামাজের পর নফল নামাজ আদায় করা।
  • ৩. কোরআনুল কারিম তেলাওয়াত করা।
  • ৪. বেশি বেশি জিকির-আজকার করা।
  • ৫. বেশি বেশি দরুদ শরিফ পাঠ করা।
  • ৬. কৃত গুনাহের জন্য কান্নাকাটি করা এবং গুনাহ থেকে মাফ চাওয়া।
  • ৭. কোনো মানুষকে কষ্ট দিয়ে থাকলে তার কাছে ক্ষমা চাওয়া।
  • ৮. বেশি বেশি দান-সদকা করা।
  • ৯. মা-বাবা এবং মুরব্বিদের কবর জেয়ারত করা।
  • ১০. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে বেশি বেশি ভালো কাজ করা।
  • ১১. মানুষের প্রতি সুন্দর ও উত্তম আচরণ করা।
শবে কদরের করণীয় আমল

শবে কদরে বর্জনীয় বিষয়সমূহ, Things to be avoided in Shab Qadr

  • ১. অবহেলায় এ রাত কাটিয়ে না দেওয়া।
  • ২. শুধু ঘুমিয়ে রাত কাটিয়ে না দেওয়া।
  • ৩. আলসেমি করে ইবাদতহীন বসে না থাকা।
  • ৪. মানুষের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ না রাখা।
  • ৫. আতশবাজি ফোটানো থেকে বিরত থাকা।
  • ৬. গোল্লা ফোটানো থেকে বিরত থাকা।
  • ৭. দলবেঁধে আড্ডাবাজি না করা।
  • ৮. সবাই মিলে চিৎকার-চেঁচামেচি এবং হৈ-হুল্লোড় না করা।
  • ৯. যাবতীয় গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকা।

শেষ কথা, To conclude

ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর পালন করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। এই রাতে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুসারীদের সম্মান বৃদ্ধি করা হয় এবং মানবজাতির ভাগ্য পুনর্নির্ধারণ করা হয়। তাই মুসলমানদের কাছে এ রাত অতীব পুণ্যময় ও মহিমান্বিত।

Contents show

Oindrila Banerjee

Oindrila Banerjee, a master's graduate in Modern History from Calcutta University, embodies a diverse range of passions. Her heart resonates with the rhythm of creative expression, finding solace in crafting poetic verses and singing melodies. Beyond her academic pursuits, Oindrila has contributed to the educational realm, serving as a teachers' coordinator in a kindergarten English medium school. Her commitment to nurturing young minds reflects her belief in the transformative power of education. Oindrila's guiding principle in life, encapsulated in the motto, "There are two ways of spreading light: to be the candle or the mirror that reflects it,"

Recent Posts