রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত কিছু প্রেমের কবিতা, Famous love poems of Rabindranath Tagore in Bengali :

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত কিছু প্রেমের কবিতা

প্রেমের কবিতা কে না পড়েন, আর তা যদি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা হয়! তাহলে তো আর ভালো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতাগুলি মধ্যযুগের মতো একইভাবে আবৃত্তি করা হয় এবং প্রাচীনকাল থেকেই আমাদের হৃদয় স্পর্শ করেছে। প্রেম, আকাঙ্ক্ষা, সংযোগ, বিচ্ছেদ এই সমস্ত আবেগকে দক্ষতার সাথে চিত্রিত করে রবীন্দ্রনাথ আমাদের হৃদয়ের গভীরে প্রবেশ করেছেন।

আপনারা অনেকে অনলাইনে সার্চ করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা খোঁজ করে থাকেন,  তাদের জন্য আজকের এই পোস্টে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কিছু কবিতা তুলে ধরবো।

 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত প্রেমের কবিতা, Rabindranath Tagore’s famous love poem :

আমার এ প্রেম নয় তো ভীরুকবিতা সম্পর্কে : ১৩১৬ সালের ৪ আষাঢ় এই কবিতাটি লেখা হয়েছিল।

 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত প্রেমের কবিতা

আমার এ প্রেম নয় তো ভীরু

আমার এ প্রেম নয় তো ভীরু,
নয় তো হীনবল,
শুধু  কি এ ব্যাকুল হয়ে
ফেলবে অশ্রুজল।
মন্দমধুর সুখে শোভায়
প্রেমকে কেন ঘুমে ডোবায়।
তোমার সাথে জাগতে সে চায়
আনন্দে পাগল।
নাচো যখন ভীষণ সাজে
তীব্র তালের আঘাত বাজে,
পালায় ত্রাসে পালায় লাজে
সন্দেহ-বিহ্বল।
সেই প্রচণ্ড মনোহরে
প্রেম যেন মোর বরণ করে,
ক্ষুদ্র আশার স্বর্গ তাহার
ক্ষুদ্র আশার স্বর্গ তাহার
দিক সে রসাতল।

দায়মোচনকবিতা সম্পর্কে : মহুয়া হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা একটি বাংলা কাব্যগ্রন্থ। এটি ১৯২৯ খ্রীস্টাব্দে প্রকাশিত হয়। ‘দায়মোচন’ কবিতাটি এই কাব্যগ্রন্থের একটি অংশ।

দায়মোচন

চিরকাল রবে মোর প্রেমের কাঙাল,
এ কথা বলিতে চাও বোলো।
এই ক্ষণটুকু হোক সেই চিরকাল;
তার পরে যদি তুমি ভোলো
মনে করাব না আমি শপথ তোমার,
আসা যাওয়া দুদিকেই খোলা রবে দ্বার,
যাবার সময় হলে যেয়ো সহজেই,
আবার আসিতে হয় এসো।
সংশয় যদি রয় তাহে ক্ষতি নেই,
তবু ভালোবাসো যদি বেসো।
বন্ধু, তোমার পথ সম্মুখে জানি,
পশ্চাতে আমি আছি বাঁধা।
অশ্রুনয়নে বৃথা শিরে কর হানি
যাত্রায় নাহি দিব বাধা।
আমি তব জীবনের লক্ষ্য তো নহি,
ভুলিতে ভুলিতে যাবে হে চিরবিরহী;
তোমার যা দান তাহা রহিবে নবীন
আমার স্মৃতির আঁখিজলে,
আমার যা দান সেও জেনো চিরদিন
রবে তব বিস্মৃতিতলে।
দূরে চলে যেতে যেতে দ্বিধা করি মনে
যদি কভু চেয়ে দেখ ফিরে
হয়তো দেখিবে আমি শূন্য শয়নে
নয়ন সিক্ত আঁখিনীরে।
মার্জনা করো যদি পাব তবে বল,
করুণা করিলে নাহি ঘোচে আঁখিজল,
সত্য যা দিয়েছিলে থাক্‌ মোর তাই,
দিবে লাজ তার বেশি দিলে।
দুঃখ বাঁচাতে যদি কোনোমতে চাই
দুঃখের মূল্য না মিলে।
দুর্বল ম্লান করে নিজ অধিকার
বরমাল্যের অপমানে।
যে পারে সহজে নিতে যোগ্য সে তার,
চেয়ে নিতে সে কভু না জানে।
প্রেমেরে বাড়াতে গিয়ে মিশাব না ফাঁকি,
সীমারে মানিয়া তার মর্যাদা রাখি,
যা পেয়েছি সেই মোর অক্ষয় ধন,
যা পাই নি বড়ো সেই নয়।
চিত্ত ভরিয়া রবে ক্ষণিক মিলন
চিরবিচ্ছেদ করি জয়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অশেষ প্রেম নিয়ে কবিতা

গীতাঞ্জলিকবিতা সম্পর্কে : কবিগুরু রেলপথে, ১৩১৭ বঙ্গাব্দের ২৫ শ্রাবণ এই কবিতাটি লিখেছিলেন।

গীতাঞ্জলি

প্রেমের দূতকে পাঠাবে নাথ কবে।
সকল দ্বন্দ্ব ঘুচবে আমার তবে।
আর-যাহারা আসে আমার ঘরে
ভয় দেখায়ে তারা শাসন করে,
দুরন্ত মন দুয়ার দিয়ে থাকে,
হার মানে না, ফিরায়ে দেয় সবে।
সে এলে সব আগল যাবে ছুটে,
সে এলে সব বাঁধন যাবে টুটে,
ঘরে তখন রাখবে কে আর ধরে
তার ডাকে যে সাড়া দিতেই হবে।
আসে যখন, একলা আসে চলে,
গলায় তাহার ফুলের মালা দোলে,
সেই মালাতে বাঁধবে যখন টেনে
হৃদয় আমার নেরব হয়ে রবে।

 “গীতাঞ্জলি 2কবিতা সম্পর্কে : কবিতাটি ১৩১৬ বঙ্গাব্দের আষাঢ় মাসে বোলপুরে লেখা হয়েছিল।

 গীতাঞ্জলি 2

মেঘের ‘পরে মেঘ জমেছে,
আঁধার করে আসে,
আমায় কেন বসিয়ে রাখ
একা দ্বারের পাশে।
কাজের দিনে নানা কাজে
থাকি নানা লোকের মাঝে,
আজ আমি যে বসে আছি
তোমারি আশ্বাসে।
আমায় কেন বসিয়ে রাখ
একা দ্বারের পাশে।
তুমি যদি না দেখা দাও,
কর আমায় হেলা,
কেমন করে কাটে আমার
এমন বাদল-বেলা।
দূরের পানে মেলে আঁখি
কেবল আমি চেয়ে থাকি,
পরান আমার কেঁদে বেড়ায়
দুরন্ত বাতাসে।
আমায় কেন বসিয়ে রাখ
একা দ্বারের পাশে।

“কৃষ্ণকলি: কবিতা সম্পর্কে : শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে ১৩১ বছর আগে ১৩০৭ বঙ্গাব্দের ৫ আষাঢ় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘কৃষ্ণকলি’ কবিতাটি রচনা করেন। ‘কৃষ্ণকলি’ কবিতায় বিশ্বকবি অজ পাড়াগাঁয়ের এক সামান্য কালো মেয়েকে অপরিসীম মূল্য দিয়েছেন।

কৃষ্ণকলি

কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি,
কালো তারে বলে গাঁয়ের লোক।
মেঘলাদিনে দেখেছিলেম মাঠে
কালো মেয়ের কালো হরিণ-চোখ।
ঘোমটা মাথায় ছিলনা তার মোটে,
মুক্তবেণী পিঠের ‘পরে লোটে।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।
ঘন মেঘে আঁধার হল দেখে
ডাকতেছিল শ্যামল দুটি গাই,
শ্যামা মেয়ে ব্যস্ত ব্যাকুল পদে
কুটির হতে ত্রস্ত এল তাই।
আকাশ-পানে হানি যুগল ভুরু
শুনলে বারেক মেঘের গুরুগুরু।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।
পূবে বাতাস এল হঠাত্‍‌ ধেয়ে,
ধানের ক্ষেতে খেলিয়ে গেল ঢেউ।
আলের ধারে দাঁড়িয়েছিলেম একা,
মাঠের মাঝে আর ছিল না কেউ।
আমার পানে দেখলে কিনা চেয়ে,
আমি জানি আর জানে সেই মেয়ে।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।
এমনি করে কাজল কালো মেঘ
জ্যৈষ্ঠ মাসে আসে ঈশান কোণে।
এমনি করে কালো কোমল ছায়া
আষাঢ় মাসে নামে তমাল-বনে।
এমনি করে শ্রাবণ-রজনীতে
হঠাত্‍‌ খুশি ঘনিয়ে আসে চিতে।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।
কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি,
আর যা বলে বলুক অন্য লোক।
দেখেছিলেম ময়নাপাড়ার মাঠে
কালো মেয়ের কালো হরিণ-চোখ।
মাথার পরে দেয়নি তুলে বাস,
লজ্জা পাবার পায়নি অবকাশ।
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ।

প্রথম চুম্বনকবিতা সম্পর্কে : প্রথম চুম্বন কবিতাটি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর চৈতালী-কাব্যগ্রন্থের অংশ। এটি আশ্বিন, ১৩০৩ (১৮৯৬ খ্রীস্টাব্দ) বঙ্গাব্দে প্রকাশিত হয়।

প্রথম চুম্বন

স্তব্ধ হল দশ দিক নত করি আঁখি-
বন্ধ করি দিল গান যত ছিল পাখি।
শান্ত হয়ে গেল বায়ু, জলকলস্বর
মুহূর্তে থামিয়া গেল, বনের মর্মর
বনের মর্মের মাঝে মিলাইল ধীরে।
নিস্তরঙ্গ তটিনীর জনশূন্য তীরে
নিঃশব্দে নামিল আসি সায়াহ্নচ্ছায়ায়
নিস্তব্ধ গগনপ্রান্ত নির্বাক্ ধরায়।
সেইক্ষণে বাতায়নে নীরব নির্জন
আমাদের দুজনের প্রথম চুম্বন।
দিক্-দিগন্তরে বাজি উঠিল তখনি
দেবালয়ে আরতির শঙ্খঘণ্টাধ্বনি।
অনন্ত নক্ষত্রলোক উঠিল শিহরি,
আমাদের চক্ষে এল অশ্রুজল ভরি।

হঠাৎ দেখাকবিতা সম্পর্কে : রবীন্দ্রনাথ শ্যামলী কাব্যগ্রন্থে লিখেছিলেন, “রেলগাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা” কবিতাটি। তিনি এই কাব্যগ্রন্থটি শ্রীমতী রানী মহলানবীশকে উৎসর্গ করেছিলেন।

হঠাৎ দেখা

হঠাৎ দেখা

রেলগাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা,
ভাবি নি সম্ভব হবে কোনোদিন।
আগে ওকে বারবার দেখেছি
লালরঙের শাড়িতে
দালিম ফুলের মতো রাঙা;
আজ পরেছে কালো রেশমের কাপড়,
আঁচল তুলেছে মাথায়
দোলনচাঁপার মতো চিকনগৌর মুখখানি ঘিরে।
মনে হল, কালো রঙে একটা গভীর দূরত্ব
ঘনিয়ে নিয়েছে নিজের চার দিকে,
যে দূরত্ব সর্ষেখেতের শেষ সীমানায়
শালবনের নীলাঞ্জনে।
থমকে গেল আমার সমস্ত মনটা;
চেনা লোককে দেখলেম অচেনার গাম্ভীর্যে।
হঠাৎ খবরের কাগজ ফেলে দিয়ে
আমাকে করলে নমস্কার।
সমাজবিধির পথ গেল খুলে,
আলাপ করলেম শুরু –
কেমন আছ, কেমন চলছে সংসার
ইত্যাদি।
সে রইল জানলার বাইরের দিকে চেয়ে
যেন কাছের দিনের ছোঁয়াচ-পার-হওয়া চাহনিতে।
দিলে অত্যন্ত ছোটো দুটো-একটা জবাব,
কোনোটা বা দিলেই না।
বুঝিয়ে দিলে হাতের অস্থিরতায় –
কেন এ-সব কথা,
এর চেয়ে অনেক ভালো চুপ করে থাকা।
আমি ছিলেম অন্য বেঞ্চিতে
ওর সাথিদের সঙ্গে।
এক সময়ে আঙুল নেড়ে জানালে কাছে আসতে।
মনে হল কম সাহস নয়;
বসলুম ওর এক-বেঞ্চিতে।
গাড়ির আওয়াজের আড়ালে
বললে মৃদুস্বরে,
কিছু মনে কোরো না,
সময় কোথা সময় নষ্ট করবার।
আমাকে নামতে হবে পরের স্টেশনেই;
দূরে যাবে তুমি,
দেখা হবে না আর কোনোদিনই।
তাই যে প্রশ্নটার জবাব এতকাল থেমে আছে,
শুনব তোমার মুখে।
সত্য করে বলবে তো?
আমি বললেম, বলব।
বাইরের আকাশের দিকে তাকিয়েই শুধোল,
আমাদের গেছে যে দিন
একেবারেই কি গেছে,
কিছুই কি নেই বাকি।
একটুকু রইলেম চুপ করে;
তারপর বললেম,
রাতের সব তারাই আছে
দিনের আলোর গভীরে।
খটকা লাগল, কী জানি বানিয়ে বললেম না কি।
ও বললে, থাক্‌, এখন যাও ও দিকে।
সবাই নেমে গেল পরের স্টেশনে;
আমি চললেম একা।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অশেষ প্রেম নিয়ে কবিতা, Rabindranath Tagore’s Poem on Endless Love :

আহা আজি এ বসন্তে

আহা, আজি এ বসন্তে এত ফুল ফুটে,
এত বাঁশি বাজে, এত পাখি গায়,
সখীর হৃদয় কুসুম কোমল –কার অনাদরে আজি ঝরে যায়!
কেন কাছে আস, কেন মিছে হাস,
কাছে যে আসিত সে তো আসিতে না চায়।
সুখে আছে যারা, সুখে থাক তারা,
সুখের বসন্ত সুখে হোক সারা –
দুখিনী নারীর নয়নের নীরসুখী
জনে যেন দেখিতে না পায়।
তারা দেখেও দেখে না,
তারা বুঝেও বুঝে না,তারা ফিরেও না চায়।
অনন্ত প্রেম

অনন্ত প্রেম

তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি শত রূপে শতবার
জনমে জনমে যুগে যুগে অনিবার।
চিরকাল ধরে মুগ্ধ হৃদয় গাঁথিয়াছে গীতহার–
কত রূপ ধরে পরেছ গলায়, নিয়েছ সে উপহার
জনমে জনমে যুগে যুগে অনিবার।
যত শুনি সেই অতীত  কাহিনী, প্রাচীন প্রেমের ব্যথা,
অতি পুরাতন বিরহমিলন  কথা,
অসীম অতীতে চাহিতে চাহিতে দেখা দেয় অবশেষে
কালের তিমিররজনী ভেদিয়া তোমারি মুরতি এসে
চিরস্মৃতিময়ী ধ্রুবতারকার বেশে।
আমরা দুজনে ভাসিয়া এসেছি যুগলপ্রেমের স্রোতে
অনাদি কালের হৃদয়-উৎস হতে।
আমরা দুজনে করিয়াছি খেলা কোটি প্রেমিকের মাঝে
বিরহবিধুর নয়নসলিলে, মিলনমধুর লাজে–
পুরাতন প্রেম নিত্যনূতন সাজে।
আজি সেই চির-দিবসের প্রেম অবসান লভিয়াছে,
রাশি রাশি হয়ে তোমার পায়ের কাছে।
নিখিলের সুখ, নিখিলের দুখ, নিখিল প্রাণের প্রীতি,
একটি প্রেমের মাঝারে মিশেছে সকল প্রেমের স্মৃতি–
সকল কালের সকল কবির গীতি।

প্রেম, তুমি আর এসো না !

এই প্রেম,
তুমি সপ্তসিন্ধু পেরিয়ে আর এসো না
তবে তো হাজারও পৃথিবী সবুজ নিঃশ্বাস পেত !
নীরবে নিভৃতে সূক্ষ্ম টানে চলে তোমার অশুদ্ধ ছলাকলা
যেখানে হৃদয় বিঁধে স্বপ্নের কোন বিক্ষিপ্ত ঝুল বারান্দায় ।
সুখ বিহারে শলাকার আলতো ঘর্ষণ-
তারা ভাবে এ তো আসছে প্রেম !
তুমি কী জানো তোমার অপব্যাখ্যা ?
যেখানে তুমি নেই সেখানে তাদের অনুভব-
সমুদ্র করে তিরস্কার, আকাশ ভেঙ্গে পড়ে
জ্যোৎস্না কাঁদে, চাঁদের মলিনে দুঃখী মেঘ আড়ালে ঢাকে ।
এই প্রেম,
তুমি এসো না পাপড়িতে পরাগ-রেণু হয়ে
তারা বলে অজরায় ফুল লাবণ্য হারায়
যেখানে তোমার ঘ্রাণ নেই সেখানে তাদের ঘুম নিঃশ্বাস-
রাত লুকিয়ে যায়, তাই সকাল বিলীন
সন্ধ্যা ফেরে না, কারণ সেখানে নেই কোন সূর্য ।
এই প্রেম,
তুমি অবাক নও তো,
তোমার উল্টো পাতার বিতাড়িত আচরণ !
তুমি আর এসো না অদৃশ্য কোন স্বপ্নতরী মাধুর্যে
এই তল্লাটে তুমি বিভ্রম, ঘোরলাগা নিঃস্ব অমোঘ ।
এই প্রেম,
তুমি আর এসো না রক্ষিত রঙে,
ধূমায়িত কোন রঙিন পৃষ্ঠায়-
কোন কবির ঘুম কেড়ে নিতে,
কিংবা কোন লেখকের গল্প বাড়াতে ।
অথবা এসো না কোন অযাচিত ঢংয়ে-
আঁকুনির রংতুলি অগোছালে ভাসিয়ে দিতে।
নয়তো এসো না কোন ঝংকার হয়ে-
ফেলো না নাচুনির পদাঙ্ক দুঃখ ধ্রুপদী সৃষ্টিতে ।

পরিশেষে, Conclusion :

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবদ্দশায় বহু কবিতা লিখে গেছেন। বাঙালির প্রাণের কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর অসাধারণ সৃজনশীলতায় প্রেমের নানা রূপ ফুটিয়ে তুলেছেন। রবীন্দ্রনাথের কবিতা বৈচিত্র্যময়। তাঁর কবিতা কখনো রক্ষণশীল ধ্রুপদী শৈলীতে, কখনো হাস্যরসাত্মক শৈলীতে, কখনো দার্শনিক গাম্ভীর্যের সাথে আবার কখনো প্রচন্ড আনন্দে প্রকাশ পায়।

তাঁর প্রতিটি লেখা অনবদ্য। আশা করি উপরে উল্লেখিত কবিগুরু রচিত প্রেমের কবিতা আপনাদের মনোগ্রাহী হয়েছে। আমাদের এই পোস্টটি ভালো লাগল অবশ্যই আপনার পরিবার ও বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।

RIma Sinha

Rima Sinha is working as a writer and also as a journalist. she got her bachelor of arts degree from Tripura University. She has also completed Master of Arts in Journalism and mass communication from Chandigarh University.

Recent Posts