চাঁদ পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ। চাঁদের ঔজ্জ্বল্য প্রকৃতির জন্য এক বৈচিত্র্যময় উপহার। পূর্ণিমার আকাশে বৃত্তাকার চাঁদ দেখতে সকলেরই ভালো লাগে। চাঁদের মাধুর্যের কথা আলাদা করে বলার কিছু নেই। সকলের জল্পনা-কল্পনার বিষয়বস্তু চাঁদকে নিয়ে। বলাই বাহুল্য, জ্যোৎস্না ভরা রাতে আকাশে জ্বলতে থাকা চাঁদ, আমাদের মনে এক অন্যরকম অনুভূতি এনে দেয়। চাঁদ নিয়ে কবিগণ বিভিন্ন রকম কবিতা লিখে গেছেন। আজ আমাদের এই প্রতিবেদনে আমরা চাঁদ নিয়ে রচিত কিছু ছন্দ উল্লেখ করবো।
চাঁদ নিয়ে প্রেমের ছন্দ, Short love poems about the moon :
চাঁদের মতো মুখটি তোমার
জোছনা ঝরানো হাসি
হাসি দিয়ে মুছাও জীবন আঁধার
তাইতো তোমায় ভালোবাসি
জ্যোৎস্না ভরা চাঁদনী রাতে
তোমার হাত রেখে হাতে
হারিয়ে যেতে চাই
কোন এক দূর অজানাতে ।
চাঁদের মনে এই আশা, থাকবে তারার পাশে
আমার মনে এই আশা, থাকবো তোমার পাশে ।
চাঁদের মত মুখটি তোমার, থেকো আমার পাশে
আগলে তোমায় রাখবো আমি অনেক ভালোবেসে
তুমি চাঁদ হয়ে এসো আমার জীবনে,
আকাশের মত হৃদয় রেখেছি শুধু তোমার জন্যে,
তারা গুলো আজ কিছু বলে যায় তোমায় দেখে,
চলবো সাথে তোমার আমি, হাতে হাত রেখে,
কোন এক রাতে থাকবে কি আমার পাশে,
চাঁদের আলোতে দেখবো তোমায় দু নয়ন ভরে।
ও চাঁদ সামলে রাখো জোছনাকে
কারো নজর লাগতে পারে
মেঘেদের উড়ো চিঠি
উড়েও তো আসতে পারে
ঘর খুলিয়া বাহির হইয়া জোছনা ধরতে যাই;
হাত ভর্তি চান্দের আলো ধরতে গেলে নাই।
কিছু কথা চাঁদের বুকে আঁচড় কেটে কেটে এঁকে গেছে কলঙ্কের আলপনা,
বাকি কথারা জমেছে পাহাড়ের পাঁজরে আর হৃদপিন্ডের মতো মৌন পাথরে!
প্রতিটি সমুদ্র কানায় কানায় ভরে গেছে আমার বেদনার লোনা জলে,
ঝড়ের মতো দীর্ঘ্যশ্বাস যখন সেই সমুদ্রে মাতালের মতো ঢেউ তোলে
একটি চন্দ্রাহত গাঙচিল আশ্রয় খোঁজে ধ্বংসের স্তূপে, ভেঙ্গে পড়া মাশ্তুলে।
হাসির হিল্লোলে প্রকম্পিত করে সারাকাশ।
তারায় তারায় ছড়িয়ে পরে সমূহ সংঘর্ষের সম্ভাবনা
নগ্ন পায়ে, ভীত চাহনিতে, উৎকণ্ঠায় কাটে মুহুর্ত,
তাল, লয়, ছন্দ ভুলে যায় মোহের স্পন্দনে।
একান্ত অনুভবে, নিজের করে, গায়ে মাখে
অনাবিল জ্যোৎস্নার ফুটন্ত আলো।
চাঁদ নিয়ে লেখা ছন্দ, Rhymes on moon :
ধূসর আকাশ। নিশ্চুপ তারা। হাসি হাসি চাঁদ।
এই শোভায় সুশোভিত আজকের রাত।
জোছনা ঝরে। রূপ ঝরে। রূপের খেলা খেলে।
বক্ষে আমার ধরবো চেপে চন্দ্র তোমায় পেলে।
চাঁদ হাসে। মেঘ ভাসে। পাশাপাশি তারা।
আকাশ পানে এ রূপ দেখে হৃদয় পাগলপারা।
চাঁদ তুমি চির সুন্দর রূপের আলো ঝরাও
তোমার মুখের হাসি দিয়ে আমায় স্বপ্নে ভরাও
পূর্ণিমা রাতে তোমার জোছনা সারা অঙ্গে মেখে
কল্পনা দিয়ে আল্পনা এঁকে কবিরা কবিতা লেখে
প্রতিদিন চাঁদ নেমে আসে
আমার জানালার পাশে
ঘুম ঘুম চোখ দুটি ভাসে
শুন্য গগন রাতের আকাশে
নীরবতা আছে জানি মহাকাশে
তারচেয়ে বেশী তব প্রাণ আভাসে
গভীরতা দিয়ে ভরা সাগর তলদেশে
পৃথিবী আরো সুন্দর চাঁদের আবেশে
জানিনা এ কোন মায়া জোছনা
পূর্ণিমা চাঁদ নাকি রোশনাই
জানিনা এরূপ নাকি ঝর্না
প্রেমেরী কিরণ হয়ে ঝরোনা
চাঁদ তুমি যতোই ছড়াও তোমার জোছনা
আমার প্রিয়ার রূপের কাছে তুমি কিছুনা
এসেছে মিলন তিথী মিলবো দুজন
একাকার হবে আমাদের দুটি মন
আকাশের চাঁদের জোছনায় হারিয়ে যাই
পায়ে পা মিলিয়ে চলো স্বপ্ন সাজাই
চেনা পথ চেনা মন সব ভুলে গিয়ে
গোধূলির আবছা রঙে যাবো হারিয়ে
সে রঙের আভাসে থাকবে অভিমান
ভাসাবো আকাশে সেদিন চাঁদের সোপান
অনন্ত আকাশের কার্নিশের ঝুলন্ত চাঁদ
আমার রাত্রির হিম স্বপ্নকে আলো দেয়
আমি বয়সের উঠানে বসে কবিতা খুঁজি।
এখানে ছোট ছোট তারাগুলো শব্দউৎস
গভীর নিশ্বাসেরা যেন একেকটি উচ্চারণ
আমি বিভোর হয়ে মালা গাঁথি অতীতের।
সন্ধ্যা আকাশে তারার মেলা
চাঁদ মামা দেয় জ্যোৎস্না,
মেঘের ভেলায় পরীরা উড়ে বেড়ায়
গায়ে মেখে চাঁদের জ্যোৎস্না।
চাঁদের আলোয় মুখখানি তোমার
যেদিন দেখেছিলাম প্রথম,
তোমার রূপে মুগ্ধ হয়েছি
আমার দুচোখ হয়েছে অবশ।
রাতের আকাশে চাঁদ হাসে, আনন্দে ভাসে মন
এমন সময় তুমি পাশে, মধুর তাই জীবন ।
স্বপ্নের দিন কাটে বসন্ত উচ্ছ্বাসে
মরা কটাল তটিনী যোয়ারে ভাসে।
আঁধার ঘুচিয়ে দিলে জীবনের আস্বাদ
ভরা নদীর বাঁকে তুমি পূর্ণিমার চাঁদ।
আজ রুপালি চাঁদের চাঁদনি আলো
বলে ওগো জেগে থাকো।
এ মায়াভরা স্নিগ্ধতার মুহূর্ত
কখনো আর ফিরে পাবে নাকো।
আমার নীরবতার সাক্ষী আছে চাঁদ |
সূর্যটা শুধু লড়াই দেখে আর প্রতিবাদ।
সেদিন পূর্নিমার “চাঁদ” দেখে
ভেবেছিলাম একটা কবিতা লিখবো,
কিন্তু বুঝিনি সেই চাঁদ অমাবস্যায় ঢেকে যাবে,
যেখানে ছিল না কোনো মিষ্টি কলঙ্ক,
ছিল না তার আলোর মতো রূপ,
শুধু আকাশ লাগচ্ছিল কোনো অন্ধকার কূপ!!
অপেক্ষিত অন্তর আঁধারিয়ার সুখে,
আঁকবে ভালোবাসা রুপালি চাঁদ
জোছনা পরিস্রুত দুঃখ চাপা বুকে।
নিঃসঙ্গ একাকী রাত,
জানালা ভেজা চাঁদের জোছনা।
অভ্যেসে আজও খোঁজে তোরই হাত!
ভুলে গেছি তোকে! ওসব নিছকই বাহানা।
বৃষ্টির সাথে সখ্যতা হয়েছে জানো,
নীরব চোখ আর এখন একা কাঁদে না।
তবু আমায় বলতো চাঁদ,
সে কী আর একলা রাতে তোমায় কবিতা লেখে না?
হাতে তুলে দাও আকাশের চাঁদ –
এই হল তার বুলি।
দিবস রজনী যেতেছে বহিয়া,
কাঁদে সে দু হাত তুলি।
হাসিছে আকাশ, বহিছে বাতাস,
পাখিরা গাহিছে সুখে।
সকালে রাখাল চলিয়াছে মাঠে,
বিকালে ঘরের মুখে।
রমজানের চাঁদ নিয়ে লেখা ছন্দ, Rhymes written about the moon of Ramadan :
উঠেছে ওই রমজানের চাঁদ
খুশির বার্তা নিয়ে
পাপ মোচনের বড় সুযোগ
রোজার মধ্য দিয়ে।
রমজানের চাঁদ উঠিছে ঐ মুমিনেরে খোঁজ করি,
কইরে মুমিন আসিছে রোজা মুক্তির পথ ধরি ।
‘ওই দেখা যায় রমজানের চাঁদ’
করছে যে হইচই
তাকিয়ে থেকে বলছে কেহ
‘চাঁদ উঠেছে কই’?
দেখছে যারা বড়ই খুশি
লাগছে তাদের ভালো
চেষ্টা করেও দেখতে না পায়
মুখটা তাদের কালো।
চাঁদ নিয়ে লেখা ছোট কবিতা, Short poem written about the moon :
তুমি এখন দূর আকাশের চাঁদ,
হাত বাড়িয়ে যখন ছুঁতে যাই-
রাতের তারা দেয় যে অপবাদ,
জোছনা-জলে সাঁতার কাটি তাই।
নীল আকাশের চাঁদ তুমি তুমি চাঁদের কিরণ,
আমার জীবনের আশা তুমি তুমিই আমার মরণ।
নীল আকাশের চাঁদ তুমি তুমি চাঁদের হাসি,
তোমার জন্য মরব আমি পরবো প্রেমের ফাসি।
আকাশের চাঁদ বলে নেই আমি ভালো,
প্রকৃতির পরিহাস সব কেড়ে নিলো।
একাকি যে দিতে হয় বহুপথ পাড়ি,
বৃদ্ধাঙ্গুল ঊর্ধ্ব করে দেয় সবে আড়ি।
বুকেতে কলঙ্ক আর দুঃখ ব্যথা নিয়ে-
নালিশ জানাবো আমি কার কাছে গিয়ে?
জীবনের পথে তাই একাকিত্ব সাথী,
হৃদয়ে জ্বালিয়ে রাখি জোছনার বাতি।
শেষ কথা, Conclusion :
রাতের অন্ধকারের মাঝে চাঁদই একমাত্র আমাদের আলোর পথ দেখায়। আকাশে শত সহস্র তারার মাঝে উজ্জ্বল চাঁদ দেখা দিলেই আমাদের মনে কত রকম ভাবনা ভেসে ওঠে। অনেকে সেই চাঁদের ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে, সাথে কোনো ছন্দ মিলিয়ে দুই চার লাইন লেখারও চেষ্টা করে। এসময় অনলাইনে অনেকেই চাঁদ নিয়ে লেখা মনোগ্রাহী কিছু ছন্দের খোঁজ করে থাকেন। তাদের উদ্দেশ্যে আমাদের আজকের এই প্রতিবেদন। আশা করি উপরে উল্লেখিত চাঁদ নিয়ে লেখা ছন্দগুলো আপনাদের পছন্দ হয়েছে।