মুসলিম বিজ্ঞানীর চোখে ধরা দিল ‘দ্বিতীয় পৃথিবী’, এবার কি এলিয়েনের দেখা মিলবে?

মুসলিম বিজ্ঞানীর চোখে ধরা দিল ‘দ্বিতীয় পৃথিবী’,

বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এক চমকপ্রদ আবিষ্কার! যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র উদ্যোগে সম্প্রতি আবিষ্কৃত হয়েছে এক নতুন গ্রহ টিওআই-১৮৪৬ বি (TOI-1846 b), যা অনেক বিজ্ঞানীর চোখে ‘নতুন পৃথিবী’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই আবিষ্কার এলিয়েন বা ভিনগ্রহী প্রাণের অস্তিত্বের সন্ধানে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।

এই যুগান্তকারী গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন মরক্কোর জ্যোতির্বিদ ড. আব্দুর রহমান সোবকিউ, যিনি আফ্রিকার অন্যতম জ্যোতির্বিদ হিসেবে ইতোমধ্যেই বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত। তাঁর নেতৃত্বে মুসলিম দেশগুলোর একদল তরুণ বিজ্ঞানী নাসার টিইএসএস (TESS) টেলিস্কোপ, স্পেকট্রোস্কোপিক বিশ্লেষণ এবং গ্রাউন্ড-বেইজড পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এই গ্রহটির অস্তিত্ব নিশ্চিত করেছেন।

এক সম্ভাবনাময় পৃথিবী টিওআই-১৮৪৬ বি

নতুন আবিষ্কৃত এই গ্রহটি পাথরবেষ্টিত এবং এতে পানির অস্তিত্ব রয়েছে। জীবনের বিকাশের জন্য পানি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, আর তাই বিজ্ঞানীদের ধারণা, এখানে হয়তো প্রাণের স্পন্দনও থাকতে পারে। আমাদের পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫৪ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান করা এই গ্রহটিও পৃথিবীর মতোই তার নিজ নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে।

গ্রহটি পৃথিবীর চেয়ে প্রায় দেড়গুণ বড় এবং এর ভর পৃথিবীর চেয়ে প্রায় ৪.৪ গুণ বেশি। পৃথিবী যেখানে ৩৬৫ দিনে সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে, সেখানে টিওআই-১৮৪৬ বি মাত্র ৩.৯ দিনে তার নক্ষত্রকে একবার প্রদক্ষিণ শেষ করে। নতুন আবিষ্কৃত এই গ্রহটির গড় তাপমাত্রা প্রায় ২৯৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এলিয়েনের অস্তিত্বের সম্ভাবনা

এলিয়েনের অস্তিত্বের সম্ভাবনা নিয়ে বিজ্ঞানীদের যুক্তি :

গ্রহটির গঠন, পানির উপস্থিতি এবং বাসযোগ্য জোনে (habitable zone) অবস্থানের কারণে বিজ্ঞানীরা এখানে এলিয়েনজাতীয় প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনা দেখছেন। বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই গ্রহটি ভবিষ্যতে এলিয়েনজাতীয় প্রাণীর সন্ধানে এক মাইলফলক হতে পারে। নতুন আবিষ্কৃত গ্রহটিতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারার পিছনে বিজ্ঞানীরা বেশ কিছু যুক্তি তুলে ধরেছেন:

  • প্রথমত, এই গ্রহটি ‘রেডিয়াস ভ্যালি’ নামে পরিচিত একটি বিরল অঞ্চলে অবস্থিত, যেখানে সাধারণত পানিসমৃদ্ধ পাথুরে গ্রহ দেখা যায় না। এই ব্যতিক্রমী অবস্থানই প্রাণের বিকাশের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে থাকতে পারে।
  • দ্বিতীয়ত, এই গ্রহটির বয়স প্রায় ৭.২ বিলিয়ন বছর, যা প্রাণ বিকাশের জন্য আদর্শ সময়। দীর্ঘ সময় ধরে অনুকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তি ও বিকাশের সম্ভাবনা বহু গুণে বেড়ে যায়।

ড. আব্দুর রহমান সোবকিউ এবং তাঁর দলের এই আবিষ্কার নিঃসন্দেহে মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় উন্মোচন করেছে।

RIma Sinha

Rima Sinha is a professional journalist and writer with a strong academic background in media and communication. She holds a Bachelor of Arts from Tripura University and a Master’s degree in Journalism and Mass Communication from Chandigarh University. With experience in reporting, feature writing, and digital content creation, Rima focuses on delivering accurate and engaging news stories to Bengali readers. Her commitment to ethical journalism and storytelling makes her a trusted voice in the field.

Recent Posts