ব্যাংক ম্যানেজার সহ ২৬ কোটি টাকার সাইবার প্রতারণা!
সম্প্রতি ভারতে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে যেখানে একটি ব্যাংকের ম্যানেজার এবং তার সহযোগীরা ২৬ কোটি টাকার সাইবার প্রতারণায় জড়িত। এই ঘটনায় পুলিশ ব্যাংক ম্যানেজারকে গ্রেফতার করেছে এবং তার কাছ থেকে ৬০টি পাসবুক, ১১টি মোবাইল ফোন, ৮টি সিম কার্ড, ৭টি জাল রাবার স্ট্যাম্প এবং ব্যাংকের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে।
রাজস্থানে সাইবার অপরাধীদের ধরতে পুলিশের একটি বিশেষ অভিযান চলছে। এই অভিযানের অংশ হিসেবে ওয়েসিস ব্যাংকের একজন ম্যানেজারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ২৬ কোটি টাকার সাইবার জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। এই মামলায় এখন পর্যন্ত মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কিভাবে ধরা পড়লো এই প্রতারকরা?

সাইবার থানার ইনচার্জ হনুমানরাম বিষ্ণোই জানান, হনুমানগড়ের পুলিশ সুপার আরশাদ আলি সাইবার জালিয়াতির মামলার তদন্তের জন্য একটি বিশেষ দল গঠন করেছেন। এই দলটি সাইবার সেল, সাইবার থানা এবং জেলা বিশেষ টিমের সদস্যদের নিয়ে গঠিত। তদন্তের সময়, তারা জানতে পারে যে ভারত সরকারের এনসিআরএপি এবং জেএমআইএস পোর্টালে নথিভুক্ত ৬৬টি সাইবার জালিয়াতির মামলার মধ্যে, হনুমানগড় এলাকার ৬০টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রায় ২৬ কোটি টাকার জালিয়াতি হয়েছে।
এই তথ্যের ভিত্তিতে, দলটি প্রযুক্তিগত প্রমাণ ও ব্যাংক রেকর্ড পরীক্ষা করে এবং গ্যাংয়ের প্রধান সহযোগী বিদেশি ব্যাংকের ম্যানেজার সোনু ভার্মাকে গ্রেফতার করে।
এই ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুতর এবং ব্যাংকিং সেক্টরের নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি করেছে। সাইবার অপরাধীরা এখন ব্যাংক ম্যানেজারদেরও তাদের দলে টেনে নিচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। এই ধরনের অপরাধ ঠেকাতে ব্যাংকগুলোর উচিত তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা এবং গ্রাহকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ব্যাংক ম্যানেজার দীর্ঘদিন ধরে সাইবার অপরাধীদের সাথে যোগসাজশে এই প্রতারণা চালিয়ে আসছিলেন। তারা বিভিন্ন গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরিয়ে নিত এবং সেই টাকা বিভিন্ন অবৈধ কাজে ব্যবহার করত। এই ঘটনায় ব্যাংকের অন্যান্য কর্মীরাও জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। পুলিশ বর্তমানে তাদের তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
এই ঘটনার গুরুত্ব:
এই ঘটনাটি ব্যাংকিং সেক্টরে সাইবার নিরাপত্তার দুর্বলতা এবং ব্যাংক কর্মীদের দুর্নীতি নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছে। এই ধরনের ঘটনা সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাংকিং ব্যবস্থার উপর আস্থা কমাতে পারে।
প্রতিরোধের উপায়:
- ব্যাংকের উচিত তাদের সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা এবং কর্মীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া।
- গ্রাহকদের উচিত তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য গোপন রাখা এবং সন্দেহজনক কার্যকলাপের বিষয়ে ব্যাংককে জানানো।
- এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করা উচিত।
এই ঘটনাটি আমাদের সমাজের আর্থিক নিরাপত্তা এবং সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।