পাকিস্তানে যেন একের পর এক ভূকম্পনের ধাক্কা! মাত্র চার দিনের মধ্যে তিন-তিনটি ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে দেশটি। সোমবার সকালেই ফের রিখটার স্কেলে ৪.৬ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এত ঘনঘন কম্পন স্বাভাবিক নয়, ফলে উঠছে প্রশ্ন—এ কি নিছকই প্রকৃতির খেলা, নাকি ভূগর্ভে চলছে কোনও গোপন সামরিক কার্যকলাপ?
এক নজরে ভূমিকম্পের তথ্য :
- সোমবারের ভূমিকম্প: রিখটার স্কেল ৪.৬ মাত্রা, উৎসস্থল ১০ কিমি গভীরে
- স্থানাঙ্ক: ২৯°১২′ উত্তর অক্ষাংশ ও ৬৭°২৬′ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ
- আগের ভূমিকম্প: ১০ মে রাত ১টা ৪৪ মিনিটে, মাত্রা ৪.০
সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে অতীতেও ভূমিকম্প হয়েছে, তবে এত কম সময়ের ব্যবধানে এই কম্পনগুলি বিশেষজ্ঞদের ভাবাচ্ছে।

কেন এই ঘনঘন কম্পন?
সাধারণত দুটি টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষ বা চ্যুতি রেখার ওপর থাকা অঞ্চলে ভূমিকম্প হয়ে থাকে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই এলাকায় কোনও সক্রিয় চ্যুতি রেখার অস্তিত্ব নিশ্চিতভাবে প্রমাণ হয়নি।
তবে কিছু অসামরিক সূত্র দাবি করছে, এসব ভূমিকম্পের পেছনে থাকতে পারে পাকিস্তানের সামরিক পরীক্ষার ঘটনা।
সামরিক যোগাযোগ? উঠছে প্রশ্ন….
সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক পোস্টে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তানি সেনার নুর খান এয়ারবেস, সারগোদা জেলার কিরানা হিলস– যেখানে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে বলে ধারণা—সে সব এলাকাতেই ভূমিকম্প হচ্ছে। এমনকি দাবি করা হয়েছে, ভারত শুক্রবার ও শনিবারের মাঝরাতে বেশ কয়েকটি সামরিক অভিযান চালিয়েছে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে।
ভারতের অপারেশন ও সংশ্লিষ্ট এলাকা:
- নুর খান এয়ারবেস: ৩৩.৬০৮৮°N, ৭৩.১০৩৮°E
- রফিকি বেস: ৩০.৭৫৫৩°N, ৭২.২০৮০৩°E
- সারগোদা বেস: ৩২.০৪৫৬°N, ৭২.৬৭১১°E
- কিরানা হিলস (পরমাণু কেন্দ্র): ৩১.৯৬৬৭°N, ৭২.৭০২৯°E
পূর্বে উত্তর কোরিয়াও ২০১৬-১৭ সালে ছয়টি পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর সময় এমন ভূকম্পনের মুখে পড়েছিল। মার্কিন ও দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাগুলি জানিয়েছিল, পরীক্ষার সময় ভূকম্পন ছিল ভূগর্ভস্থ বিস্ফোরণের ফল।

কী বলছে সরকার ও সেনা?
এই বিষয়ে এখনও ভারত ও পাকিস্তান– কোনও দেশের সরকারই সরকারিভাবে কিছু বলেনি। ভারতীয় বায়ুসেনার এক মুখপাত্র সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, কিরানা হিলসে কোনও হামলা চালানো হয়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতামত :
ভূমিকম্পের উৎসস্থল যদি মাটি থেকে মাত্র ১০ কিমি নিচে হয়, তাহলে ভূমিভাগে তার প্রভাব বেশ ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, যদি ভূমিকম্পগুলি প্রাকৃতিক না হয়ে কোনও বিস্ফোরণজনিত হয়, তাহলে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।
পাকিস্তানে চার দিনে তিনটি ভূমিকম্প নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। ভূকম্পনের সময়, স্থানাঙ্ক এবং গভীরতা দেখে সন্দেহ দানা বাঁধছে—প্রকৃতি না পারমাণবিক পরীক্ষা? যদিও এখনও কোনও নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি, কিন্তু বারবার একই এলাকায় কম্পনের ফলে আন্তর্জাতিক মহলের নজর এখন পাকিস্তানের দিকে।