ভাবুন তো, আজ থেকে ৫ হাজার বছর আগে কী ধরনের কাপড় পরতেন মানুষ? ঐসময় তো আজকের মতো আধুনিক সেলাই মেশিনও ছিল না, এমনকি রকমারি কাপড়ের বিপুল সম্ভার ছিল না– তখন কি মানুষ শুধু গাছের ছাল বা পশুর চামড়াই গায়ে জড়াতো?
কিন্তু আপনারা জানলে অবাক হবেন, সেই সুদূর অতীতেও তৈরি হয়েছিল এমন এক পোশাক, যা তার সূক্ষ্মতা আর কারিগরি দিয়ে আজও বিস্মিত করে আমাদের!
হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন। সম্প্রতি আবিষ্কৃত হয়েছে বিশ্বের প্রাচীনতম সেলাই করা পোশাক, যার বয়স প্রায় ৫ হাজার বছরেরও বেশি! এটি নিছকই একটি কাপড়ের টুকরো নয়, বরং মানব সভ্যতার পোশাক পরিধানের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছিল এই আবিষ্কার।
কেন এই পোশাকটি এত বিশেষ ছিল?
আমরা যখনই প্রাচীনকালের গুহাবাসী মানুষের কথা ভাবি, তখন আমাদের চোখে ভাসে তাদের এমন আকৃতি যারা হয়তো কোনও রকমে শরীর ঢাকা দিত। কিন্তু উল্লেখ্য এই পোশাক প্রমাণ করে দেয়, খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ অব্দের আশেপাশে মানুষ শুধু শরীর ঢাকার জন্য কাপড় জড়ানো ছেড়ে দিয়ে পরিপাটি করে কেটে, সেলাই করে পরার কৌশল শিখেছিল। এটি সেই সময়ের বয়নশিল্পের চরম উৎকর্ষতা প্রমাণ করে, যা আমাদের সভ্যতার অগ্রগতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
প্রথম কোথায় পাওয়া গিয়েছিল এই ঐতিহাসিক পোশাক? জেনে নিন :

১৯১৩ সালে মিশরের কায়রোর কাছে তারখান সমাধি থেকে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয় এই বিস্ময়কর পোশাকটি। তবে এর আসল গুরুত্ব এবং প্রাচীনত্ব সম্পর্কে বিশদভাবে জানা যায় ১৯৭৭ সালে, যখন বিশেষজ্ঞরা এর কারুকার্য এবং সময়কাল নিয়ে গভীর গবেষণা করেন।
এই পোশাক কার জন্য তৈরি হয়েছিল?
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই পোশাকটি সে সময়কালীন এক পাতলা গড়নের মহিলার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। মিশরের সভ্যতা যে প্রাচীনত্বের দিক থেকে কতটা এগিয়ে ছিল এবং তাদের সংস্কৃতি ও শিল্পকলার মান যে কত উন্নত ছিল, এই পোশাকটি তার নীরব সাক্ষী।
এটি কেবল একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন নয়, বরং মানবজাতির পোশাক পরিধানের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছিল এই ৫ হাজার বছরের পুরনো পোশাক।