মাতৃস্নেহের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে ৬০ বছর বয়সী এক মা তার সন্তানকে দ্বিতীয়বারের মতো জীবন দান করলেন। দিল্লির লিভার ও বিলিয়ারি সায়েন্সেস ইনস্টিটিউট (আইএলবিএস)-এ ঘটা এই হৃদয়স্পর্শী ঘটনাটি এখন নেটদুনিয়ায় প্রশংসা কুড়োচ্ছে।
এই অসাধারণ গল্পের শুরুটা হয়েছিল আজ থেকে প্রায় এক দশক আগে, ২০১৫ সালে। উল্লেখ্য সালে, ১৯৯৭ সালে জন্ম নেওয়া ছেলেটি লিভারের এক জটিল রোগে আক্রান্ত হয়। নিজের সন্তানের প্রাণ বাঁচাতে সেই সময়েই মা তার লিভারের একাংশ দান করেছিলেন। সেই যাত্রায় ছেলেকে সুস্থ করে তোলার পর এবার আবার জীবন-মরণের খেলায় নিজের জীবন বাজি ধরলেন তিনি।

প্রায় এক দশক পর, ছেলেটির কিডনি বিকল হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে, নিজের পূর্বের লিভার দানের অভিজ্ঞতা ও শারীরিক সুস্থতা সত্ত্বেও, মা নিঃস্বার্থভাবে তার একটি কিডনি দান করার প্রস্তাব দেন। চিকিৎসকরা তার শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষা করে দেখেন যে, আগের বড় অস্ত্রোপচারের পরেও তিনি সুস্থ আছেন এবং একটি কিডনি দান করার জন্য উপযুক্ত।
দিল্লির লিভার ও বিলিয়ারি সায়েন্সেস ইনস্টিটিউটের (আইএলবিএস) ডাঃ অভ্যুত্থান সিং জাদোনের নেতৃত্বে রেনাল ট্রান্সপ্ল্যান্ট টিম এই জটিল কাজটি সম্পন্ন করে। মায়ের পূর্ববর্তী অস্ত্রোপচারের কারণে সৃষ্ট জটিলতা থাকা সত্ত্বেও, তারা অত্যন্ত সফলভাবে একটি ল্যাপারোস্কোপিক ডোনার নেফ্রেকটমি (কিডনি অপসারণ) সম্পন্ন করেন। অন্যদিকে, ডাঃ আর পি মাথুরের নেতৃত্বে নেফ্রোলজিস্টদের একটি দক্ষ দল গ্রহীতার প্রতিস্থাপনটি পরিচালনা করেন, যেখানে তারা গুরুতর ইমিউনোলজিক্যাল বাধা অতিক্রম করেন এবং সফল হন।
এই জটিল প্রতিস্থাপন সফল হয়েছে। মাত্র ১০ দিনে আরোগ্য লাভের পর ছেলেটি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। মায়ের এই অবিচল ভালোবাসা, স্নেহ আর আত্মত্যাগই তাকে নতুন জীবন এনে দিয়েছে। এই ঘটনা আরও একবার প্রমাণ করল যে, মায়ের ভালোবাসার কোনো তুলনা হয় না।