২০১৭ সাল। যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজে রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছিল। হঠাৎ করেই এক অপ্রত্যাশিত আবিষ্কার—একটি মানুষের কঙ্কাল।
প্রথমে ভাবা হয়েছিল, হয়তো কোনো সাধারণ মানুষের প্রাচীন দেহাবশেষ! কিন্তু, কে জানতো—এই কঙ্কাল এক রহস্যের দরজা খুলে দেবে!
ডিএনএ বলল, সে একজন যাযাবর!

লন্ডনের ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউটের গবেষকরা ওই কঙ্কালের একটি কানের হাড় থেকে সংগ্রহ করেন ডিএনএ।
আর সেই ডিএনএ বিশ্লেষণ জানিয়ে দিল—এই মানুষটি ছিলেন সারমাশিয়ান জাতিগোষ্ঠীর একজন সদস্য!
দুই হাজার বছর আগে রাশিয়ার দক্ষিণ থেকে হেঁটে-পার হয়ে পৌঁছেছিলেন ইংল্যান্ডের ক্যামব্রিজে। ২,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ! শুনতেই শিহরণ জাগে!
কারা এই সারমাশিয়ানরা?
- পারস্য ভাষাভাষী
- অশ্বারোহী যোদ্ধা
- যাযাবর জীবনযাপন করতেন
মূলত আজকের রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে বসবাস করতেন।
তবে, সেই সময় রোমান সাম্রাজ্য তাদের পরাজিত করে কিছু সৈন্য ব্রিটেনে মোতায়েন করেছিলো।
আর ধারণা করা হচ্ছে, কঙ্কালটি সেই যোদ্ধাদের কেউ হতে পারেন—অথবা তাদের কোনো উত্তরসূরি।
নাম: অফোর্ড ক্লুনি ২০৩৬৪৫—ডিএনএ আর দাঁতের গল্পে জেগে উঠল জীবন!

ক্যামব্রিজের এক নালার ধারে মাটি চাপা পড়েছিলো যে মানুষটি, তার দাঁতের রাসায়নিক বিশ্লেষণ বলেছে— ছোটবেলায় বাজরা আর জোয়ার খেতেন (যা প্রাচীন সারমাশিয়ায় প্রচলিত)। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য তালিকায় ঢুকে পড়ে গম, যা ছিলো ইউরোপের চিহ্ন! মানে—ছেলেবেলা কাটে নিজের মাতৃভূমিতে, কিন্তু কৈশোর পেরিয়ে পৌঁছে যান ব্রিটেনে। এ এক রীতিমত সিনেমার গল্প!
সে কি সেনা ছিল? নাকি দাস?
- সে হয়তো একজন অশ্বারোহী সেনার ছেলে ছিলো
- কিংবা হয়তো তাকে ধরে আনা হয়েছিলো দাস হিসেবে
তবে নিশ্চিত যেটা, সে ছিল রোমান ব্রিটেনের একজন বাস্তুচ্যুত যাযাবর। এখন, দুই হাজার বছর পরে, আমরা জানছি তার নাম না জানা জীবনের গল্প!
একটি হাড়, একটি দাঁত—আর তাতেই খুলে গেল ইতিহাসের গোপন দরজা!
অতীতে ইতিহাস মানেই ছিলো রাজা-বাদশার কাহিনি। কিন্তু এখন?
ডিএনএ ও বিজ্ঞান মিলিয়ে বেরিয়ে আসছে সাধারণ মানুষের হারিয়ে যাওয়া অধ্যায়!
ক্রিক ইনস্টিটিউটের ড. স্কগল্যান্ডের ভাষায়, “নতুন প্রযুক্তি ইতিহাসকে নতুন করে বলছে। প্রাচীন ডিএনএ এখন এক এক করে তুলে আনছে হারিয়ে যাওয়া জীবনের অজানা গল্প।”