পহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক চরম উত্তেজনার পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতিতে দিল্লিতে আমেরিকা, চিন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে কূটনৈতিক তৎপরতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
পহেলগাম হামলা ও ভারতের প্রতিক্রিয়া
২৩ এপ্রিল ২০২৫-এ জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ভারতীয় পর্যটক। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (TRF), যা পাকিস্তান ভিত্তিক লস্কর-ই-তইবা সংগঠনের একটি শাখা। ভারত সরকার এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

ভারতের কূটনৈতিক ও সামরিক পদক্ষেপ
- সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত: ভারত ১৯৬০ সালের সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করেছে, যা পাকিস্তানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জল সরবরাহের উৎস।
- কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস: পাকিস্তানি কূটনীতিকদের বহিষ্কার এবং ইসলামাবাদে ভারতীয় কূটনীতিকদের প্রত্যাহার করা হয়েছে।
- ভিসা ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ: পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল এবং ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
- সামরিক প্রস্তুতি: সীমান্তে সেনা মোতায়েন বৃদ্ধি এবং সামরিক মহড়া শুরু হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া
পাকিস্তান ভারতের পদক্ষেপগুলিকে “একতরফা ও অবিচারপূর্ণ” বলে অভিহিত করেছে এবং সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিতকে যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে বিবেচনা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ ও মধ্যস্থতা

এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে দিল্লিতে আমেরিকা, চিন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ ও মধ্যস্থতার প্রচেষ্টার প্রতিফলন। জাতিসংঘ উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।
অর্থনৈতিক প্রভাব
এই কূটনৈতিক উত্তেজনার ফলে ভারতের শেয়ার বাজারে ব্যাপক পতন হয়েছে। সেনসেক্স সূচক ১০০০ পয়েন্টেরও বেশি হ্রাস পেয়েছে, এবং বিনিয়োগকারীদের প্রায় ১০ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বর্তমান কূটনৈতিক উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আন্তর্জাতিক মহলের মধ্যস্থতা ও সংযম প্রদর্শনের মাধ্যমে এই সংকট সমাধানের পথ খোঁজা জরুরি।