এ বছর শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি হাটে দোল উৎসবের আনন্দে জল ঢেলে দিয়েছে বন দফতর। আগে থেকেই বহু পর্যটক শান্তিনিকেতনে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন, বিশেষত সোনাঝুরির জঙ্গলে দোল খেলার উদ্দেশ্যে। কিন্তু বন দফতরের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে এই উৎসব এবার আর সেখানে হচ্ছে না। সোনাঝুরির খোয়াইয়ের হাটে এখন শুধু প্রবেশাধিকার দেওয়া হলেও, রঙ খেলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বন দফতরের সিদ্ধান্ত এবং তার প্রভাব

২০১৯ সাল থেকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একেবারে ঘরোয়া পরিবেশে বসন্ত উৎসব পালন করছে। সেখানে বহিরাগতদের প্রবেশাধিকার নেই। তবে সোনাঝুরি হাটে স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে এবং বোলপুর বন দফতরের আওতায় বসন্ত উৎসব হয়ে আসছিল। এই বছর বন দফতর সোনাঝুরি জঙ্গলে ব্যাপকভাবে মানুষের উপস্থিতি এবং রঙ খেলার কারণে গাছের ক্ষতির আশঙ্কা করছে, তাই তারা এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বোলপুর বন দফতরের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, “বিপুল সংখ্যক পর্যটক এখানে আসায় গাছগুলোর ক্ষতি হচ্ছে। প্রচুর গাড়ি আসার ফলে পার্কিংও গাছ ও বনভূমির ক্ষতি করছে। তাই এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।”
পর্যটকদের হতাশা
এমন সিদ্ধান্তে অনেক পর্যটকের মন ভেঙে গেছে। অনেকেই তিন দিনের ছুটির সময়কে শান্তিনিকেতনে দোল খেলার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু বন দফতরের নিষেধাজ্ঞা লাগু হওয়ার পর তাদের সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। কিছু পর্যটক ইতিমধ্যে তাদের টিকিট বাতিল করতে শুরু করেছেন এবং অন্য কোথাও ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা করছেন।
ব্যবসায়ীদের দুশ্চিন্তা

বন দফতরের সিদ্ধান্তের ফলে সোনাঝুরির হাটের ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে মনে হচ্ছে। পর্যটকদের আগমন বন্ধ হলে, তাঁদের বিক্রির আয় ব্যাপকভাবে কমে যাবে। তবে কিছু ব্যবসায়ী বন দফতরের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন, কারণ গাছের ক্ষতি ও পরিবেশের সুরক্ষা যে জরুরি, তা তারা বুঝতে পারছেন।
বসন্তের এই সময় শান্তিনিকেতনে আসা পর্যটকদের জন্য এটি একটি বড় ধাক্কা। যদিও পরিবেশ রক্ষা ও গাছের সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবে পর্যটকদের জন্য দোল উৎসবের নিষেধাজ্ঞা তাদের আনন্দে বিঘ্ন ঘটিয়েছে। এখন দেখতে হবে, ভবিষ্যতে শান্তিনিকেতনে কীভাবে বন দফতর এবং পর্যটকদের মধ্যে একটি সমঝোতা প্রতিষ্ঠিত হয়, যাতে পরিবেশের ক্ষতি না হয় এবং পর্যটকরা তাদের আনন্দও উপভোগ করতে পারেন।