প্লাস্টিকের সমস্যার একটি সম্ভাব্য সমাধান খুঁজে পেয়েছেন, বাংলাদেশে একজন গবেষক। প্লাস্টিক আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, কিন্তু এর পরিবেশগত ক্ষতি অপূরণীয়। এটি মাটিতে, জলে এবং বাতাসে মিশে বিষাক্ত দূষণ ছড়ায়, যা পুরো বাস্তুতন্ত্রকে বিপন্ন করে তোলে। কিন্তু এবার বাংলাদেশের একজন বিজ্ঞানী এই ক্ষতিকর প্লাস্টিকের বিকল্প তৈরি করেছেন।
পরিবেশবান্ধব ব্যাকটেরিয়া সেলুলোজ– প্লাস্টিকের বিকল্প :
ব্যাকটেরিয়া সেলুলোজ নামে একটি নতুন এবং পরিবেশবান্ধব উপকরণ তৈরি করেছেন ইউনিভার্সিটি অফ হিউস্টনের গবেষক ড. মাকসুদ রহমান এবং তার দল । এটি একটি শক্তিশালী এবং বহুমুখী উপাদান, যা প্লাস্টিকের একটি কার্যকর বিকল্প হতে পারে।
বিশ্বজুড়ে যখন বিজ্ঞানীরা পরিবেশ রক্ষায় নতুন উপায় খুঁজছেন, তখন এই আবিষ্কার একটি নতুন আশার আলো দেখিয়েছে। ব্যাকটেরিয়া সেলুলোজ হলো একটি প্রাকৃতিক উপাদান, যা নির্দিষ্ট ধরনের জীবাণু দ্বারা তৈরি হয়। এটি প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে খুবই কার্যকর।
গবেষণায় দেখা গেছে, এই উপাদান ব্যবহার করে প্লাস্টিকের বোতল, প্যাকেজিং সামগ্রী, এমনকি চিকিৎসায় ব্যবহৃত ড্রেসিং সামগ্রীও তৈরি করা সম্ভব। ড. মাকসুদ বিশ্বাস করেন যে এই ব্যাকটেরিয়া সেলুলোজ ভবিষ্যতে বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহার করা হবে এবং এটি প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
কীভাবে ব্যাকটেরিয়া সেলুলোজটি তৈরি করা হয়?

গবেষণায় একটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা রোটেটিং ডিভাইসের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়াকে নির্দিষ্ট পথে চালিত করে সেলুলোজ তৈরি করা হয়। এর সঙ্গে ন্যানোটেকনোলজির সাহায্যে বোরন নাইট্রাইট ন্যানোশিট যুক্ত করা হয়েছে, যা এই উপাদানকে আরও শক্তিশালী করেছে।
এই গবেষণায় ড. মাকসুদকে সহযোগিতা করেছেন রাইস ইউনিভার্সিটির পিএইচডি ছাত্র এমএ এএসআর সাদি এবং পোস্টডক্টরাল ফেলো শ্যাম ভক্ত।
গবেষকদের আশা, এই উদ্ভাবন ভবিষ্যতে টেক্সটাইল, ইলেকট্রনিক্স, শক্তি সঞ্চয় এবং তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার মতো শিল্পে বড় পরিবর্তন আনবে। ড. মাকসুদ রহমান বলেন, “এই উদ্ভাবন শুধু বর্তমানের জন্য নয়, ভবিষ্যতের জন্যও টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব উপকরণ তৈরির পথে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।”
এই প্রযুক্তি বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক দূষণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি যুগান্তকারী সমাধান হতে পারে, যা আমাদের একটি সবুজ ও সুস্থ পৃথিবী গড়ার পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।